ঢাকা রবিবার, ১৯ অক্টোবর, ২০২৫

৯ বছরের বাকপ্রতিবন্ধী শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে প্রতিবেশী গ্রেপ্তার

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: অক্টোবর ১৯, ২০২৫, ০৩:২০ পিএম
অভিযুক্ত বলরাম দাশ। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

গাজীপুরের শ্রীপুরে ৯ বছর বয়সী এক বাকপ্রতিবন্ধী শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে বলরাম দাশ (৫০) নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ঘটনার পর পুরো এলাকায় নিন্দা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, এমন পাশবিক ঘটনার যেন দৃষ্টান্তমূলক বিচার হয়।

ঘটনাটি ঘটে গত বুধবার (১৫ অক্টোবর) রাত ৮টার দিকে রাজাবাড়ী ইউনিয়নের ধোলজোড় এলাকার সাটিয়াবাড়ি গ্রামে। শিশুটির বাবা স্থানীয় বাজারে সেলুন চালান, আর মা একটি গার্মেন্টে কাজ করেন। তাদের মেয়েটি বাকপ্রতিবন্ধী হওয়ায় সাধারণত বাড়িতে একাই থাকত। সে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়াশোনা করে।

স্থানীয় সূত্র জানা যায়, সেদিন সন্ধ্যায় প্রতিবেশী বলরাম দাশ শিশুটিকে চা–বিস্কুট খাওয়ানোর প্রলোভন দেখিয়ে নিজের ঘরে ডেকে নেয়। পরে সে শিশুটিকে ধর্ষণ করে। বাকপ্রতিবন্ধী হওয়ায় শিশুটি বিষয়টি কাউকে জানাতে পারেনি।

ঘটনার পর শিশুটি অসুস্থ হয়ে পড়ে। ক্রমে তার পেটব্যথা শুরু হয় এবং শারীরিক দুর্বলতা বেড়ে যায়। পরে শিশুটিকে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলে পরীক্ষায় ধর্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত হয়।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ১৮ অক্টোবর সন্ধ্যায় শিশুটির বাবা শ্রীপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগ পাওয়ার পর শনিবার (১৮ অক্টোবর) দিবাগত রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত বলরাম দাশকে তার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে। তিনি পেশায় একজন সেলুন ব্যবসায়ী।

শিশুটির বাবা বলেন, আমাদের মেয়ে কথা বলতে পারে না, কিন্তু যন্ত্রণায় কাঁদছিল। আমরা ভেবেছিলাম অসুস্থ হয়ে পড়েছে। পরে চিকিৎসকের কাছ থেকে জানতে পারি, তার সঙ্গে অমানবিক ঘটনা ঘটেছে। আমরা এর বিচার চাই।

ঘটনার পর এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় একজন সমাজকর্মী বলেন, একজন প্রতিবন্ধী শিশুর সঙ্গে এমন বর্বরতা কোনোভাবে মেনে নেওয়া যায় না। প্রশাসনের উচিত দ্রুত বিচার আইনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা।

শ্রীপুর থানার ওসি মহম্মদ আবদুল বারিক বলেন, অভিযুক্ত বলরাম দাশকে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। ভিকটিমকে চিকিৎসার জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা রয়েছে। তিনি আরও বলেন, শিশুটির পরিবারকে পুলিশ সার্বিক সহায়তা দিচ্ছে। যেন তারা কোনো ভয় বা সামাজিক চাপে না পড়ে, সে বিষয়েও আমরা নজর রাখছি।

এ ঘটনায় এলাকায় শোক ও ক্ষোভের পরিবেশ বিরাজ করছে। স্থানীয়রা বলছেন, এমন ঘৃণ্য অপরাধের শাস্তি দ্রুত না হলে সমাজে নিরাপত্তা বলে কিছুই থাকবে না।