ঢাকা রবিবার, ১৯ অক্টোবর, ২০২৫

নাতির ইটের আঘাতে প্রাণ গেল নানির

জৈন্তাপুর (সিলেট) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: অক্টোবর ১৯, ২০২৫, ০৫:১০ পিএম
ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

সিলেটের জৈন্তাপুরে নিজ বাড়িতে মানসিক ভারসাম্যহীন নাতির ইটের আঘাতে প্রাণ হারিয়েছেন নানি আজিবা খাতুন (১০০)। এ ঘটনায় নাতি সুমন আহমদকে (২২) আটক করেছে পুলিশ।

শনিবার (১৮ অক্টোবর) রাত ১১টার দিকে উপজেলার চিকনাগুল ইউনিয়নের ঘাটেরচটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত আজিবা খাতুন ওই গ্রামের মৃত বদলা (সজ্জাদ) আলীর স্ত্রী। আর সুমন আহমদ আজিবা খাতুনের নাতি।

পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, সুমন ছোটবেলায় পিতাকে হারিয়ে নানির লালনপালনে বড় হয়। প্রায় ৬ মাস আগে তার মাও মারা যান। এরপর থেকে তার মানসিক সমস্যা দেখা দেয়। স্থানীয়দের সহযোগিতায় আজিবা খাতুন তাকে এম.এ.জি. ওসমানী হাসপাতালে চিকিৎসা করান। চিকিৎসা শেষে মাসখানেক আগে তাকে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়।

এরপর থেকে সুমন নানির সঙ্গেই থাকত। মাঝে মাঝে তার মানসিক সমস্যা বেড়ে গেলে তাকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হতো। ঘটনার দিন শনিবার (১৮ অক্টোবর) রাত আনুমানিক ১১টার দিকে সুমনের চিৎকার শুনে পাশের ঘরের লোকজন এসে দেখেন, বিছানার পাশে আজিবা খাতুনের রক্তাক্ত মরদেহ মাটিতে পড়ে আছে। তার পাশে ভারসাম্যহীন নাতি সুমনও পড়ে ছিল, আর পাশে পড়ে ছিল কয়েকটি ইট।

এ সময় তাদের আত্মচিৎকারে আশপাশের লোকজন জড়ো হয়ে সুমনকে শিকল দিয়ে বেঁধে ফেলেন। পরে তারা জৈন্তাপুর থানা পুলিশকে খবর দেন।

এ বিষয়ে জৈন্তাপুর মডেল থানার ওসি আবুল বাসার মোহাম্মদ বদরুজ্জামান বলেন, ‘খবর পেয়ে ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হই। অভিযুক্ত নাতি সুমনকে নিহত নানির মরদেহের পাশে শুয়ে থাকা অবস্থায় পাই। এ সময়ে সুমনের কোনো অনুশোচনা লক্ষ করা যায়নি। সুমন শুধু তার শিকল খুলে দেওয়ার জন্য চিৎকার করছিল।’

তিনি জানান, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নাতি সুমন আহমেদকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে হত্যা মামলা রুজু করা হয়েছে। রোববার তাকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন তিনি। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সিওমেক হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে বলেও জানান ওসি আবুল বাসার।

অপরদিকে, নিহত আজিবা খাতুনের ছেলে আফতাব মিয়া জানিয়েছেন, হাসপাতাল থেকে ময়নাতদন্ত শেষ তার মায়ের মৃতদেহ বাড়িতে নিয়ে আশা হয়েছে। রোববার বাদ আসর তার দাফন সম্পন্ন হবে বলেও জানান তিনি।