ঢাকা মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর, ২০২৫

শাহজালালের আগুনে রপ্তানি খাতে বিপর্যয় ও দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতির শঙ্কা বিজিএমইএর

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: অক্টোবর ১৯, ২০২৫, ০৬:৪০ পিএম
সাংবাদিকদের সাথে কথা বলছেন বিজিএমইএর জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ইনামুল হক খান। ছবি- সংগৃহীত

রাজধানীর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে দেশের পোশাকশিল্পের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কাঁচামাল, রপ্তানির জন্য প্রস্তুত পোশাক এবং অসংখ্য মূল্যবান স্যাম্পল পণ্য সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে। এতে করে পোশাক খাতের মারাত্মক ক্ষতি ও ভবিষ্যৎ বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। 

রোববার (১৯ অক্টোবর) ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন শেষে বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ইনামুল হক খান এসব কথা বলেন।

সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘গতকাল শনিবার (১৮ অক্টোবর) বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে আগুন লাগার ঘটনা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। দেশের রপ্তানি বাণিজ্য, বিশেষ করে পোশাক শিল্প মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।’

বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ‘ধ্বংস হওয়া মালামালের মধ্যে রপ্তানির জন্য প্রস্তুত পোশাক, উচ্চমূল্যের কাঁচামাল এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্যাম্পল পণ্য ছিল। তার ভাষায়, ‘এই স্যাম্পলগুলো হারানো মানে ভবিষ্যৎ ব্যবসার সম্ভাবনা কমে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হওয়া। নতুন ক্রেতার সঙ্গে আলোচনা ও ব্যবসায়িক সুযোগও এতে বাধাগ্রস্ত হবে।’

বিজিএমইএ ইতোমধ্যে সদস্য কারখানাগুলোকে ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণের জন্য নির্ধারিত ফরম্যাটে তালিকা পাঠিয়েছে এবং একটি অনলাইন ডেটা কালেকশন পোর্টালও চালু করেছে। 

ইনামুল হক বলেন, ‘আমাদের অধিকাংশ সদস্য বিমানপথে পণ্য রপ্তানি করে। প্রতিদিন প্রায় ২০০–২৫০টি কারখানার পণ্য এখানে দিয়ে যায়। ফলে ক্ষতির পরিমাণ অনেক বড়। আমরা দ্রুত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় সভা করে ক্ষতির সঠিক হিসাব নির্ধারণ করব।’

পরিদর্শনের পর তিনি বলেন, ভেতরে অবস্থা অত্যন্ত ভয়াবহ ছিল। আমদানির সেকশন পুরোপুরি পুড়ে গেছে। পুনরায় সচল করতে কমপক্ষে ১৫ দিন থেকে এক মাস সময় লাগতে পারে।

বিজিএমইএর পরিচালক ফয়সাল সামাদ জানান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করা হয়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা বিকল্প হিসেবে ব্যবহারযোগ্য করার জন্য টার্মিনাল-৩-এর একটি নতুন জায়গা বরাদ্দের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ‘আমদানি করা পণ্য দ্রুত খালাস করার জন্য ক্লিয়ারেন্স সময় ৭২ ঘণ্টা থেকে কমিয়ে ৩৬ ঘণ্টা করার প্রস্তাব এসেছে। কাস্টমসের সঙ্গে যৌথভাবে একটি ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করা হবে, যাতে পণ্য জট না হয়।’

বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অগ্নিকাণ্ডের কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণে তদন্ত কমিটি ইতোমধ্যেই কাজ শুরু করেছে। প্রাথমিক প্রতিবেদনের পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

শাহজালালের কার্গো ভিলেজে আগুনে পোশাকশিল্পের রপ্তানি খাতে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতির আশঙ্কা তীব্রভাবে দেখা দিয়েছে, যা দেশের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের জন্য বড় প্রভাব ফেলতে পারে।