কিডনি রোগের সঙ্গে দীর্ঘ লড়াই করার পর মারা গেছে হুমায়রা আক্তার মৌমিতা। রোববার সকাল ৮টা ১০ মিনিটে রাজধানীর কিউর স্পেশালাইজ হাসপাতালে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাসের মাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন মৌমিতার বাবা আফজাল হোসেন হিমেল।
মৌমিতার বাড়ি ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার মাইজবাগ ইউনিয়নের হারুয়া গ্রামে। জানা গেছে, রোববার বাদ মাগরিব হারুয়া হারুন-নগরী জামে মসজিদে মৌমিতার জানাযা অনুষ্ঠিত হবে এবং পরে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।
মৌমিতার পরিবার জানায়, প্রথমে তার শরীরে পানি জমতে শুরু করে। ডাক্তারি চিকিৎসার মাধ্যমে তা কিছুটা কমলেও পরবর্তীতে শরীরে আবার পানি বেড়ে যায়। তখন চিকিৎসকরা জানান, শিশুটির কিডনিতে সমস্যা রয়েছে। মেয়ের চিকিৎসার জন্য বাবা নিজের সর্বস্ব শেষ করেছেন এবং মানুষের কাছ থেকে সহযোগিতা নিয়েও তাকে চিকিৎসা করিয়েছেন। দীর্ঘদিন বিভিন্ন হাসপাতাল ও চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা করলেও মেয়েকে বাঁচাতে পারেননি তিনি।
বাবার দুঃখ আরও গভীর হয়েছে, কারণ শেষ বিদায়ে জানাজা ও দাফনে অংশ নিতে পারছেন না।
রোববার দুপুরে ফেসবুকে আরও এক স্ট্যাটাসে আফজাল হোসেন হিমেল জানান, “বাদ মাগরিব হারুয়া হারুন-নগরী জামে মসজিদে মৌমিতার জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। আমি জানাজায় অংশগ্রহণ করতে পারব না। আমি আপনাদের (এলাকাবাসীর) হাতে এবং মহান আল্লাহর হাতে আমার মেয়েকে তুলে দিলাম।”
জানাজার সময়ে অংশ নিতে না পারার কারণ সম্পর্কে জানা গেছে, রাষ্ট্রদোহিতা ও সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার অভিযোগে ঢাকার রমনা থানায় মৌমিতার বাবার নামে মামলা হয়েছে। তিনি সেই মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত আসামি।
নিহত ফুটফুটে শিশু মৌমিতা স্থানীয় একটি মাদরাসার নূরানি বিভাগের ছাত্রী ছিল। যে বয়সে আধো-আধোকণ্ঠে বাবার কাছে আবদার করার কথা, যে বয়সে বই-খাতা নিয়ে সহপাঠীদের সঙ্গে স্কুলে যাওয়ার কথা, সেই বয়সে কিডনি রোগে তার জীবন নিভে গেছে।