উত্তরের আট জেলা রংপুর, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, গাইবান্ধা, পঞ্চগড়, নীলফামারী, দিনাজপুর ও ঠাকুরগাঁও এ আবহাওয়ার ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। ধীরে ধীরে রুক্ষ হয়ে উঠছে এই অঞ্চলের আবহাওয়া। বৃষ্টিপাত কমে যাওয়ায় প্রকৃতির সঙ্গে যুদ্ধ করতে হচ্ছে এই অঞ্চলের মানুষকে। আর এর প্রভাব পড়ছে কৃষিসহ সব জায়গাতেই। তীব্র গরমে মানুষ হাঁসফাঁস করছে।
উত্তরের জেলাগুলোতে এ বছর আগস্ট মাসে স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা কম বৃষ্টিপাত হয়েছে। পুরো মাসে ২৫ দিন বৃষ্টি হলেও প্রকৃতিতে ছিল খরতাপ ও রুক্ষভাব। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৮ থেকে ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
রংপুর আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, আগস্ট মাসে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হওয়ার কথা প্রায় সাড়ে ১৩০০ মিলিমিটার। সেখানে আগস্টে বৃষ্টিপাত হয়েছে মোট ৭১৭ মিলিমিটার। মাসের প্রথম দিনে ১১ দশমিক ৮ মিলিমিটার বৃষ্টির মাধ্যমে শুরু হয় বর্ষণ। সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে ৮ আগস্টে ৭৮ দশমিক ৪ মিলিমিটার। এরপর ১৪ আগস্টে ৫৬ মিলিমিটার, ৯ আগস্টে ২৭ দশমিক ২ মিলিমিটার এবং ১৯ আগস্টে ২১ দশমিক ৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। এপ্রিল ও মে মাসেও স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কম বৃষ্টি হয়েছিল, যদিও জুন মাসে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছিল। আগস্টে কাক্সিক্ষত বৃষ্টি না হওয়ায় কৃষি সেক্টরে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। ফসলি জমি শুকিয়ে যাওয়া ও গরম-ঠান্ডার মিশ্র আবহাওয়ার কারণে রোগবালাইও বেড়েছে।
এ সময় ঘরে ঘরে জ্বর, সর্দি-কাশি, হিটস্ট্রোক, চর্মরোগ, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আশিকুর রহমান বলেন, আগস্ট মাসে এই হাসপাতালে তীব্র গরমে অসুস্থ হয়ে চিকিৎসা নিয়েছে ৪০০০ রোগী। এ সময় গরম জড়িত রোগে মৃত্যুবরণ করেছে আটজন।
গত বছরের আগস্টে রংপুরে তাপমাত্রা ছিল ৩৩-৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ বছর তা বেড়ে দাঁড়ায় ৩৪-৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। রংপুর আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজার রহমান বলেন, ‘এবার আগস্ট মাসে রংপুরের ৮ জেলায় স্বাভাবিকের তুলনায় কিছুটা কম বৃষ্টি হয়েছে। এর প্রভাব কৃষি ও জনজীবনে পড়েছে। রংপুর অঞ্চলের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ শফিকুল ইসলাম বলেন, বৃষ্টি কম হওয়ার প্রভাব পড়েছে কৃষিতে। পানি না থাকায় শাক-সবজিসহ অন্যান্য ফসল ফলাতে পারছেন না কৃষক। যার ফলে সবজির দামও বেড়েছে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন