বুধবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বদলগাছী (নওগাঁ) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৫, ০১:৪০ এএম

পাঁচ কেজি আটার জন্য সারা রাত অপেক্ষা

বদলগাছী (নওগাঁ) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৫, ০১:৪০ এএম

পাঁচ কেজি আটার জন্য  সারা রাত অপেক্ষা

ঘড়ির কাঁটায় তখন রাত পেরিয়েছে অনেক আগেই। চারপাশ নিস্তব্ধ। কিন্তু নওগাঁর বদলগাছী উপজেলা সদরের কয়েকটি ডিলার পয়েন্টের সামনে তখনও জেগে আছে কয়েক ডজন মানুষ। কারো হাতে পুরোনো ব্যাগ, কারো কাঁধে মলিন গামছা। কেউ বসে আছেন দোকানের বারান্দায়, কেউবা কয়েল জ্বালিয়ে রাস্তার পাশে শুয়ে। উদ্দেশ্য একটাইÑ ভোর হলে লাইনে দাঁড়িয়ে সরকার নির্ধারিত পাঁচ কেজি আটা ঘরে নেওয়া। গত সোমবার গভীর রাতে উপজেলার সদরে তিনটি ওএমএস ডিলার পয়েন্টে এমন চিত্র দেখা গেছে।

দূর থেকে দেখলে মনে হতে পারে, রাস্তায় শুয়ে আছেন কোনো মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষ। কাছে গেলেই বোঝা যায় ভিন্ন চিত্র। ষাটোর্ধ্ব মানিক মিয়া সারা রাত কাটিয়ে দেন ডিলার পয়েন্টের দরজায়। চোখে ঘুম নেই, মুখে কষ্টের রেখা। তিনি বলেন, ‘গতকাল ফজরের আজানের পর এসেছিলাম, কিন্তু আটা পাইনি। তাই আজ রাত নয়টা থেকেই এখানে পড়ে আছি। এই পাঁচ কেজি আটা নিয়েই বাড়ি ফিরব।’

মানিক মিয়ার মতোই একই কষ্ট নিয়ে রাত কাটাচ্ছেন বৃদ্ধা রুমি বেগম, বিধবা শেফালী এবং দিনমজুর হেলেনা বেগম। তারা বলেন, বাজারে চালের দাম নাগালের বাইরে। তাই রুটি করেই সংসার চালাতে হয়। কিন্তু আটা চাইলে যদি সঙ্গে সঙ্গে না পাওয়া যায়, তবে ভোগান্তি বেড়ে যায়।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের তথ্য বলছে, বদলগাছীতে প্রতিদিন তিনজন (ওএমএস) ডিলারের মাধ্যমে মাত্র এক টন আটা বরাদ্দ থাকে। অথচ উপকারভোগীর সংখ্যা তার চেয়ে অনেক বেশি। ফলে অনেকে লাইনে দাঁড়িয়েও খালি হাতে ফিরতে বাধ্য হচ্ছেন।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমরা জেনেছিÑ আটার জন্য মানুষ সারারাত লাইনে দাঁড়াচ্ছে। কেউ পাচ্ছে, কেউ পাচ্ছে না। এ বিষয়ে সমাধানের জন্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।’

বদলগাছী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসরাত জাহান ছনি বলেন, ‘উপজেলার জনসংখ্যার অনুপাতে প্রতিদিনের বরাদ্দ খুবই সীমিত। তিন ডিলারের মধ্যে এক টন আটা ভাগ করে দেওয়া হয়। এতে গড়ে প্রতিদিন ২০০ জন উপকারভোগী আটা পান। তবে দীর্ঘ লাইনের বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। এ নিয়ে উপজেলা খাদ্য কমিটির সভায় রেজুলেশন তৈরি করে মন্ত্রণালয়কে অবগত করার চিন্তা করছি।’

খাদ্যের নিশ্চয়তা পেতে মানুষকে কি সত্যিই রাত জেগে কাটাতে হবে? ন্যায্যমূল্যে খাদ্য সহজভাবে বিতরণের কোনো কার্যকর উপায় কি নেই? বদলগাছীর রাস্তায় শুয়ে থাকা মানিক মিয়া, উমি বেগম কিংবা শেফালীর কষ্ট সেই প্রশ্নই নতুন করে তুলে ধরে।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!