*** যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতাল
*** উন্নত খাবার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা
যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ১৫ বছর ধরে খাবারের টেন্ডার হয় না। ঠিকাদারের মামলার কারণেই টেন্ডার না হওয়ার কারণ। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক বলেছেন, টেন্ডার না হওয়ায় নতুন রেটের (১৭৫ টাকা) উন্নত খাবার পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা।
হাসপাতালের প্রশাসনিক সূত্র জানিয়েছে, ‘গত ২০১০-১১ অর্থবছরের পর থেকে খাদ্য সরবরাহের টেন্ডার হয়নি। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে আহ্বান করা টেন্ডারে অনিয়মের অভিযোগে উচ্চ আদালতে মামলা করেছিলেন ঠিকাদার হাফিজুর রহমান শিলু। এর পর থেকে খাবারের টেন্ডার হয়নি। আদালতের নির্দেশে টেন্ডার বন্ধ রয়েছে। সেই থেকে একজন ঠিকাদার রোগীদের জন্য খাবার সরবরাহ করে আসছেন। আগের ১২৫ টাকা রেটে খাবার সরবরাহ করায় উন্নত খাবার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা।’
হাসপাতালের ঠিকাদার হাফিজুর রহমান শিলু জানিয়েছেন, ‘খাবারের টেন্ডারে অনিয়মের অভিযোগে তিনি ২০১৪ সালের ১৬ জুন উচ্চ আদালতে মামলা করেছিলেন। বর্তমানে মামলাটি চলমান রয়েছে।’
তিনি আরও জানান, ‘২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে মামলার বিষয়ে জেলা প্রশাসকের কক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনায় বসা হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজহারুল ইসলাম, হাসপাতালের সাবেক তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুন অর রশিদ, সাবেক সিভিল সার্জন ডা. মাহমুদুল হাসান, প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ইসহাক ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক রাশেদ খান। তারা মানবিক কারণে মামলাটি তুলে নেওয়ার প্রস্তাব দিলে তিনিও সম্মতি দেন। পরবর্তী সময়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ লিখিতভাবে মামলাটি তুলে নেওয়ার ব্যাপারে চিঠি না দেওয়ায় মামলাটি তুলে নেওয়া হয়নি। ১২৫ টাকা রেটে রোগীদের যথেষ্ট পরিমাণ ভালো মানের খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে বলে তিনি দাবি করেন।’
হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক ডা. হুসাইন শাফায়াত জানান, ‘মামলায় টেন্ডার কার্যক্রম বন্ধ থাকায় রোগীরা উন্নত খাবার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। আগের রেটে এখন রোগীদের উন্নত খাবার সরবরাহ করা কঠিন। ফলে রোগীদের খাবারের মান বাড়াতে হলে নতুন টেন্ডার প্রয়োজন।’
তিনি আরও জানান, ‘ঠিকাদার মামলা করার সময় প্রতি রোগীর বরাদ্দ ছিলো ১২৫ টাকা। কিন্ত সরকারের নতুন হলো ১৭৫ টাকা। নতুন টেন্ডার না হওয়ার কারণে ১২৫ টাকার খাবার পাচ্ছেন রোগীরা।
উল্লেখ্য, ‘গত ১৪ সেপ্টেম্বর যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে অভিযান চালায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। যশোরের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আল আমিনের নেতৃত্ব এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় টিমের সদস্যরা হাসপাতালের রান্নাঘরে গিয়ে রোগীদের খাবারের মান পরীক্ষা করেন। রোগীকে ২০০ গ্রামের অনেক কম ভাত দেওয়া, সকালে নাশতায় পাউরুটি অনেক ছোট। ডিমের আকারও ছোট। খাবারের লবণ, পেঁয়াজ ও রসুনের মান নি¤œ। সয়াবিনের বদলে পামওয়েল ও পচা পেঁয়াজ-রসুন দিয়ে খাবার রান্না করার প্রমাণ মেলে। এ ছাড়া চিকন চালের বদলে দেওয়া হচ্ছে মোটা চালের ভাত। আবার ডালও নি¤œমানের ছিল।