ঢাকা মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২৫

বাতাসে দুলছে কৃষকের স্বপ্ন

উজ্জ্বল চক্রবর্ত্তী শিশির, দুপচাঁচিয়া
প্রকাশিত: অক্টোবর ১৪, ২০২৫, ০২:৪১ এএম
  • দুপচাঁচিয়ায় ১১ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে আমন চাষ
  • প্রতি বিঘায় ফলনের সম্ভাবনা ১৭-১৮ মণ
  • প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে উৎপাদন হবে ৬২ হাজার ৪০০ মেট্রিক টন

বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলায় এখন মাঠজুড়ে সোনালি আমন ধানের দোলা। হালকা হিমেল বাতাসে দুলছে হাজারো কৃষকের সোনালি স্বপ্ন। অনুকূল আবহাওয়া ও সময়মতো চাষাবাদের কারণে এ বছর আমনের বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে দুপচাঁচিয়া উপজেলায় ১১ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে আমন চাষ হয়েছে। এর মধ্যে উফশী জাতের ধান রোপণ হয়েছে ১১ হাজার ১০০ হেক্টরে এবং হাইব্রিড জাতের ধান রোপণ হয়েছে ৫০০ হেক্টরে। ব্যবহৃত জাতের মধ্যে রয়েছে ব্রি ধান-৪৯, ৮৭, ৯৩, ৯৪, ৯৫, ১০৩, স্বর্ণা ও রঞ্জিত। হাইব্রিড জাতের মধ্যে ধানিগোল্ড, ব্র্যাক-১ ও সিনজেনটা-১২০৩। আগামী নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকেই আগাম জাতের ধান কাটা শুরু হবে।

সরেজমিন দেখা গেছে, কৃষকেরা এখন খেত পরিচর্যা ও ধান কাটার প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। খেতে পোঁতা বাঁশে বসে আছে ফিঙে, দোয়েল, শালিকসহ নানা পাখি; ধানখেতের ক্ষতিকর পোকার শত্রু এসব পাখিই যেন কৃষকের প্রাকৃতিক সহযোদ্ধা হয়ে উঠেছে।

হাটশাজাপুর গ্রামের কৃষক মোফাজ্জল হোসেন (৫৫) বলেন, ‘গতবারের চেয়ে এ বছর ফলন অনেক ভালো হবে। রোগ-বালাই কম, আবহাওয়াও অনুকূলে। আশা করছি প্রতি বিঘায় ১৭-১৮ মণ ধান পাব।’

পূর্ব আলোহালী গ্রামের কৃষক জিল্লুর রহমান (৪৫) বলেন, ‘সেচ খরচ ও শ্রমিক সংকট কিছুটা সমস্যা হলেও পর্যাপ্ত সার, কীটনাশক ও বিদ্যুৎ পেয়েছি সময়মতো। তিন একর জমিতে চাষ করেছি, ফলন খুব ভালো হবে বলে আশা করছি।’

দুপচাঁচিয়া পৌরসভার লালুকা ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সেলিম হোসেন মিয়া জানান, কৃষি বিভাগ থেকে নিয়মিত মাঠপর্যায়ে পরামর্শ দেওয়ায় ফসলের মাঠ সোনালি রঙে ভরে উঠেছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সাইফুল আবেদীন বলেন, ‘নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ধান কাটা শুরু হবে। যেসব মাঠের ধান ৯০ ভাগ পেকেছে, সেসব দ্রুত কেটে ফেলার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এ বছর ৬২ হাজার ৪০০ মেট্রিক টন ধান এবং ৪১ হাজার ১৯০ মেট্রিক টন চাল উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, মাঠপর্যায়ে কৃষকদের সহায়তায় কৃষি কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক কাজ করছেন। ধান ঘরে তোলা পর্যন্ত এ সেবা অব্যাহত থাকবে।