*** শার্শার ঠেঙামারী বিল
*** বোরো ধান রোপণ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষক
*** বিলে এখনো পানির গভীরতায় ৫-৭ ফুট
*** প্রবেশ করছে ভারতের ইছামতি নদীর পানি
*** জলাবদ্ধতা নিরসনে স্থায়ী সমাধান চায় স্থানীয় কৃষক
যশোরের শার্শা উপজেলার ঠেঙামারী বিলে কচুরিপানা ও জলাবদ্ধতার কারণে এবারও হাজার হাজার বিঘা চাষের জমি পতিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বোরো ধান রোপণ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষক। স্থানীয়রা জানান, ঠেঙামারী বিলে এখন মাঠ ভর্তি কচুরিপানা। জমিতে পা ফেলানোর জায়গা নেই। যা পরিষ্কার করা কঠিন ব্যাপার। বীজতলা তৈরির সময় নভেম্বরের শেষের দিকে। কিন্তু এখনো বিলে পানি জমে আছে এবং ভারতের ইছামতি নদীর পানি প্রবেশ করছে। ফলে ধান চাষের সম্ভাবনা কমে গেছে। মাঠে কীভাবে ধান চাষ করবে এই চিন্তা কুরেকুরে খাচ্ছে চাষিদের। বিলে এখনো পানির গভীরতায় ৫ থেকে ৭ ফুট।
জানা যায়, স্থানীয়রা কচুরিপানা পরিষ্কার করার উদ্যোগ নিয়েছেন। গত শনিবার বিকেল থেকে তারা বিল পরিষ্কার করার জন্য ভাড়ায় অন্য উপজেলার থেকে কচুরিপানা কাটার মেশিন এনেছেন। মেশিনের সাহায্যে কচুরিপানা কেটে জমি পরিষ্কার করার চেষ্টা করছেন।
স্থানীয় কৃষকরা জানিয়েছেন, এ বছর বিলে এবং খালে যে পরিমাণ কচুরিপানা জমে রয়েছে তাতে বোরো ধান লাগানোর কোনো সম্ভাবনাই তারা দেখছেন না। কচুরিপানা পরিষ্কার করতে অনেক টাকা ব্যয় হবে। কিন্তু এতো টাকা ব্যয় করে যদি সময়মতো বিলের পানি না নামে। তা হলে সমস্ত টাকাটাই বিফলে যাবে।
স্থানীয় কৃষক নায়েব আলী বলেন, মেশিনে এক বিঘা জমির কচুরিপানা পরিস্কার করতে সর্বনিম্ন ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা খরচ পড়বে। আর এই কচুরিপানা রাখতে দুই কাঠা জমি ফেলে রাখতে হবে। কৃষক আব্দুস সাত্তার জানিয়েছেন, মাঠে কচুরিপানা পরিস্কার করা মেশিন আনা হয়েছে। যদি এতে খরচ কম হয় ও সহজে পচে নষ্ট হয় তা হলে তারা কচুরিপানা কাটা মেশিন দিয়ে জমি পরিষ্কার করবেন। তিনি আরও বলেন, এত কিছুর পরেও ধান না হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
কায়বা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল হোসেন বলেন, আমরা দীর্ঘদিন যাবত এ সমস্যায় জর্জরিত। সমাধানে কেউ এগিয়ে আসেনি। ভারতীয় ইছামতি নদীর পানি এসে মাঠের পাশাপাশি বাড়িঘর প্লাবিত হয়ে যায়। খালের পানি বের করার কোনো ব্যবস্থা নেই। শুনেছি সরকারিভাবে খাল সংস্কার ও দাউদখালী খালমুখে বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে এলাকার সমস্যার সমাধান হবে কি না বলা যাচ্ছে না।
শার্শা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দীপক কুমার সাহা বলেন, দীর্ঘদিনের সমস্যা এটা। বছরের বেশির ভাগ সময় ভারতীয় পানিতে খালে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। কয়েকবার পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। খাল সংস্কার ও দাউদখালী খালমুখে বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে এলাকার সমস্যা কিছুটা লাঘব হবে বলে তিনি জানান।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন