ভোলার চরফ্যাশন পৌর শহরের প্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি বর্তমানে হকারদের দখলে রয়েছে। এ ছাড়া সড়কটির দুপাশে দোকান বসানো, অবৈধ পার্কিং এবং যানবাহনের অনিয়ন্ত্রিত চলাচলের কারণে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র যানজট। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত যানজটে পড়ে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী, রোগী ও সাধারণ মানুষ।
সরজমিনে দেখা যায়, পৌর শহরের জেলা পরিষদ মার্কেট থেকে আধুনিক হাসপাতাল পর্যন্ত অটোরিকশা ও সিএনজির যত্রতত্র পার্কিং রয়েছে। ফুটপাত তো বটেই, সড়কের একটি বড় অংশজুড়ে বসানো হয়েছে অস্থায়ী দোকান। কেউ চায়ের দোকান করছে, কেউ ফল বিক্রি করছে, কেউবা আবার নানা পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছে।
হকাররা বলছেন, তারা নিম্ন আয়ের মানুষ। দিনমজুরির ভিত্তিতে তাদের জীবিকা চলে। নির্দিষ্ট জায়গা না থাকায় তারা বাধ্য হয়ে পৌর শহরের প্রধান সড়কের দুপাশে ব্যবসা করছেন। তারা চান, পৌরসভা তাদের জন্য একটি নির্দিষ্ট হকার জোন তৈরি করুক, যাতে তারা সড়কটি দখল না করে ব্যবসা করতে পারেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, যানজটের কারণে দীর্ঘ সময় রাস্তায় আটকে থেকে কর্মজীবী মানুষরা সময়মতো কর্মস্থলে পৌঁছাতে পারছেন না। শিক্ষার্থীরা স্কুলে পৌঁছাতে দেরি করছে প্রতিদিন। সবচেয়ে বিপদে পড়ছে রোগীরা। অ্যাম্বুলেন্স বা প্রাইভেট গাড়ি নিয়ে হাসপাতালে পৌঁছাতে গিয়ে যানজটে আটকে পড়ে অনেক সময়ই রোগীর অবস্থা গুরুতর হয়ে যায়। গর্ভবতী নারী কিংবা বয়স্ক রোগীদের জন্য তো এ পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ। ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার অভাব ও যথাযথ নিয়ন্ত্রণ না থাকায় পরিস্থিতি দিন দিন আরও খারাপ হচ্ছে।
যদিও পৌর কর্তৃপক্ষ এর আগে যানজট নিরসনের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। তা কিছু দিন বাস্তবায়ন করলেও বর্তমানে থেমে গেছে। এখন আগের মতো যানজট লেগেই থাকে। প্রায় এক বছর আগে উপজেলা প্রশাসন হকারদের উচ্ছেদ ও যানবাহন পার্কিংয়ের বিষয়ে অভিযান পরিচালনা করেছেন। এবং যানবাহন পাকিংয়ের জন্য স্থান নির্ধারণ করে দিয়েছেন। যদিও অজ্ঞাত কারণে নির্ধারিত স্থানে পার্কিং না করে সড়কের দুপাশে পার্কিং করেন যানবাহন চালকরা। তদারক আগের মতো থাকলে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হতো না বলে পৌরবাসীর দাবি।
অটোরিকশাচালক ইব্রাহিম বলেন, ‘পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিভিন্ন যানবাহনের জন্য কয়েকটি নির্ধারিত স্থান ঠিক করে দিয়েছেন। তবে সেখান থেকে যাত্রী পাওয়া যায় না, বিধায় আমরা বাজারের মধ্যে পার্কিং করছি।’
ব্যবসায়ী আবু সিদ্দিক বলেন, হকারদের কারণে বাজারের ব্যবসায়ীরা ও পথচারীরা নানা সমস্যায় পড়ছে। ভ্রাম্যমাণ হকাররা দোকানের সামনের জায়গা দখল করায় ক্রেতারা দোকানে প্রবেশ করতে পারেন না। এতে ব্যবসায় ক্ষতি হচ্ছে এবং বাজারের পরিবেশও নষ্ট হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক রাসনা শারমিন মিথি জানান, পৌর শহরের প্রধান সড়কটির দুই পাশ হকাররা দখল করে রেখেছে। এ ছাড়া প্রতিনিয়ত বিভিন্ন যানবাহন পার্কিং করছে। এর আগে যানজট নিরসনে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল, যাতে যানজট সৃষ্টি না হয়। এ ব্যপারে আবারও গুরুত্ব দেওয়া হবে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন