মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


কুমিল্লা উত্তর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: অক্টোবর ২১, ২০২৫, ০১:৩৩ এএম

৬০ শতাংশ কাজ শেষে ভেঙে ফেলা হচ্ছে সেতু

কুমিল্লা উত্তর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: অক্টোবর ২১, ২০২৫, ০১:৩৩ এএম

৬০ শতাংশ কাজ শেষে  ভেঙে ফেলা হচ্ছে সেতু

*** নকশা, বিম ঢালাইয়ে ত্রুটি
*** ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন, দীর্ঘ হচ্ছে স্থানীয়দের ভোগান্তি
*** ১ কোটি ৮০ লাখ টাকার বিল উত্তোলন করেছে ঠিকাদার

কুমিল্লার তিতাস উপজেলার বাতাকান্দি ভায়া মাছিমপুর সড়কের আকালিয়া খালের ওপর নির্মাণাধীন একটি সেতু কাঠামোগত ত্রুটির কারণে ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। অথচ সেতুটির প্রায় ৬০ ভাগ কাজ শেষ হওয়ার পরই এ নির্দেশ দেওয়া হয়। ইতোমধ্যে প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ১ কোটি ৮০ লাখ টাকার বিল উত্তোলন করেছে। এতে সরকারি টাকা অপচয়সহ জনগণের ভোগান্তি দীর্ঘ হচ্ছে।

জানা যায়, ২০২৩ সালের ২৩ মার্চ প্রায় ৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে ২৮ মিটার দৈর্ঘ্যরে সেতুটি নির্মাণের টেন্ডার আহ্বান করে এলজিইডি। কাজটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব পায় মেসার্স আর আর কনস্ট্রাকশন। ২০২৪ সালের ২২ মার্চ কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গড়িমসি ও অনিয়মের কারণে প্রকল্পে ধীরগতি দেখা দেয়। সূত্র জানায়, নির্মাণকাজ নিয়মবহির্ভূতভাবে চলায় এলজিইডি কর্তৃপক্ষ পরবর্তীতে সেতুটি ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেয়। এরই মধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি প্রকৌশলীর অনুমোদনে ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা বিল উত্তোলন করে নেয়।

সরেজমিনে নির্মাণাধীন সেতু এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, কয়েকজন শ্রমিক নির্মাণাধীন সেতুটির গার্ডার ভেঙে ফেলছেন। পাশেই ভাঙা সড়ক দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। নির্মাণকাজ ধীরগতির হওয়ায় সেতুর রড মরিচা পড়ে গেছে। যে ত্রুটিপূর্ণ অংশ ভাঙা হচ্ছে, সেখানে একই সময় সেতুর বিম ও ছাদ ঢালাই করার কথা থাকলেও বিম আগে করা হয়েছে।

এলজিইডির তিতাস উপজেলার উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. শাহনেওয়াজ বলেন, এক বছরের বেশি সময় নির্মাণকাজ বন্ধ থাকায় কাজের চুক্তি বাতিলের জন্য গত জুলাই মাসে ঢাকার প্রধান কার্যালয়ে চিঠি পাঠানো হয়। তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সেতুর নির্মাণকাজের সময় নির্দেশনা অমান্য করে শুধু সেতুর বিম ঢালাই দেয়। নিয়ম হচ্ছে বিম ও ছাদ একসঙ্গে ঢালাই দেওয়া। কিন্তু শুধু বিম ঢালাই দেওয়ায় সেতুর নকশার ত্রুটি ধরা পড়ে এবং ত্রুটিপূর্ণ স্থান পর্যন্ত ভাঙ্গা হচ্ছে। ‘১ কোটি ৮০ লাখ টাকা বিল পরিশোধ করা হয়েছে। এটি সরকারের অর্থের অপচয় নয়। আমরা ঠিকাদারকে নির্দেশ দিয়েছিলাম ডিজাইন ও ড্রইং অনুযায়ী কাজ করতে, কিন্তু তিনি তা না করায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন নিজেই।’

স্থানীয়দের অভিযোগ, সেতুটি নির্মাণের সময় তদারকি দুর্বল থাকায় এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। সেতুটি প্রায় ৬০ ভাগ সম্পূর্ণ হওয়ার পর ভেঙে ফেলা হয়েছে। এখন নতুন করে কাজ শুরু হতে কত সময় লাগবে, কেউ জানে না। যদি ত্রুটি থেকেই থাকে, তবে শুরুতেই তা ধরা পড়ল না কেন? কর্তৃপক্ষ কি নিয়মিত পরিদর্শন করেনি?

উপজেলার দক্ষিণ আকালিয়ার নুরুল হক এবং উলুকান্দির জহিরুল ইসলাম বলেন, সেতু নির্মাণের সময় খাল ভরাট করে রাস্তা বানানোয় খালে পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়। গত তিন বছর ধরে বাতাকান্দি, উলুকান্দি, দক্ষিণ আকালিয়া ও কালাইগোবিন্দপুর এলাকায় পানির অভাবে ফসল উৎপাদন কমে গেছে। বাতাকান্দি গ্রামের স্বপন মিয়া জানান, ‘এ সড়কটি ব্যস্ততম, সেতু ভেঙে ফেলার পর ঝুঁকিপূর্ণভাবে অস্থায়ী রাস্তা দিয়ে যান চলাচল করছে।’

এ ব্যাপারে মেসার্স আর আর কনস্ট্রাকশন স্বত্বাধিকারী মুকুল মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। তবে সহকারী ঠিকাদার জিএম আনিছুর রহমান জুয়েল বলেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সেতুর কাজ শেষ হবে। ত্রুটিপূর্ণ অংশ ভাঙা হলে, একসঙ্গে আমরা বিম ও ছাদ ঢালাই দেব।

এলজিইডির তিতাস উপজেলার প্রকৌশলী মো. খোয়াজুর রহমান বলেন, বেইচ ঢালাইয়ের পর থেকে উপরের অংশ ভেঙে ফেলা হবে এবং আগামী ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে সম্পূর্ণ সেতুর নির্মাণকাজ শেষ করতে হবে।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!