বুধবার, ২২ অক্টোবর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রাজবাড়ী প্রতিনিধি

প্রকাশিত: অক্টোবর ২২, ২০২৫, ০২:০২ এএম

রাজবাড়ী বিআরটিএ

দালাল ধরলেই কাজ হয় হালাল!

রাজবাড়ী প্রতিনিধি

প্রকাশিত: অক্টোবর ২২, ২০২৫, ০২:০২ এএম

দালাল ধরলেই কাজ হয় হালাল!

রাজবাড়ী শহরের বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) কার্যালয় এখন যেন সরকারি অফিস নয়, বরং দালাল ও ঘুষখোরদের রাজত্ব। দালাল ছাড়া কোনো কাজ হয় না, এমন অভিযোগ এখন রাজবাড়ীর মানুষের মুখে মুখে। অর্থ না দিলে ফাইল নড়ে না, আর টাকা দিলেও কাজ হবে কি না, তা ভাগ্যের ওপর নির্ভর। সেই অনিয়মের জাল এবার সহিংসতার পর্যায়ে গড়িয়েছে। কাজ না হওয়ায় টাকা ফেরত চাইতেই অফিসের প্রভাবশালী সিল কন্ট্রাক্টর ও তার সহযোগীরা এক সেবাগ্রহীতাকে মারধর করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

গোয়ালন্দ মোড় এলাকার বাসিন্দা মো. সুমন শেখ জানান, প্রায় এক বছর আগে তিনি গাড়ির কাগজের জন্য বিআরটিএ অফিসের সিল কন্ট্রাক্টর আক্রামুজ্জামানকে ৮ হাজার ৫০০ টাকা দেন। কাজ না হওয়ায় তিনি গতকাল অফিসে গিয়ে টাকা ফেরত চান। ‘সে আমার গালে থাপ্পর মারে। পরে তার সঙ্গে থাকা আরও কয়েকজন আমাকে এলোপাতাড়ি পেটায়,’ বলেন সুমন। তিনি আরও বলেন, ‘টাকা দিয়েও কাজ না হওয়ায় ফেরত চাওয়া অপরাধ হলো বুঝি! আমি এর ন্যায়বিচার চাই।’

রাজবাড়ী বিআরটিএ অফিসে এখন টাকার টিকিট ছাড়া সেবা পাওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা বিল্লাল হোসেন জানান, ‘আমার ভারী লাইসেন্স হালকা করতে আক্রামুজ্জামান ৮ হাজার টাকা চায়। আমি ৬ হাজার দেই, কিন্তু দুই বছরেও কাজ হয়নি। এখন ফোন ধরেও না।’ আরও অভিযোগ, দালালের মাধ্যমে না গেলে ইচ্ছাকৃতভাবে পরীক্ষায় ফেল করানো হয়। একজন আবেদনকারী জানান, ‘তিনবার ফেল করানোর পর এক দালালকে ১৯ হাজার টাকা দিয়েছি। এখন দেড় বছর ঘুরছি, না কাজ হয়, না টাকা ফেরত দেয়।’

এই চক্রের বিরুদ্ধে গত ৭ মে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) অভিযান চালায়। ফরিদপুর আঞ্চলিক কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. মোস্তাফিজ নেতৃত্বে অভিযানে সিল কন্ট্রাক্টর আক্রামুজ্জামানসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে ৭২ হাজার ৪২০ টাকা উদ্ধার করা হয়। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, জামিনে মুক্তি পেয়ে তারা আবারও আগের মতো সক্রিয় হয়ে উঠেছে।

সরকারি চাকরি না করেও আক্রামুজ্জামান এখন কোটি টাকার মালিক বলে অভিযোগ রয়েছে। রাজবাড়ী শহরের ২ নম্বর বেড়াডাঙ্গায় দুইতলা বাড়ি, জাপানি প্রাইভেট কার এবং সজ্জনকান্দায় ১ কোটি ২৬ লাখ টাকায় কেনা ভবন, সবই নাকি এই সিল কন্ট্রাক্টরের নামে।

রাজবাড়ী বিআরটিএ সহকারী পরিচালক (ইঞ্জিন) মো. নাসির উদ্দিন বলেন, ‘আক্রামুজ্জামান বিআরটিএর কেউ নন। তিনি একজন বহিরাগত। সেবাগ্রহিতাকে মারধরের বিষয়ে এডিএম স্যার আমাকে জানিয়েছেন। আমি বর্তমানে বাইরে আছি, পরে বিস্তারিত জানাব।’

প্রতিদিন শত শত মানুষ রাজবাড়ী বিআরটিএ অফিসে সেবা নিতে যান, কিন্তু ফিরে আসেন ক্ষোভ আর নিরাশা নিয়ে। অফিসের ভেতরে দালালদের দৌরাত্ম্য, বাইরে তাদের আধিপত্য, সবই প্রকাশ্য। সেবাগ্রহীতাদের দাবি, যত দিন না এই দালাল সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে, রাজবাড়ী বিআরটিএ অফিস থেকে সেবা নয়, কেবল হয়রানিই পাবেন সাধারণ মানুষ।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!