কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার ধরনীবাড়ী ইউনিয়নের রুপারখামারে বামনি নদীর ওপর নির্মিত একটি ব্রিজ দেবে গিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ব্রিজের নিচের মাটি ধসে পড়ায় এর স্থিতি নষ্ট হয়ে গেছে, ফলে যেকোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ধরনীবাড়ী ইউনিয়নের রুপারখামার শোলেয়ারজাম এলাকায় মিনাবাজার থেকে মাঝবিলগামী সড়কে মোহাম্মদ আলী মাস্টারের বাড়ির পূর্ব পাশে বামনি নদীর ওপর প্রায় ১৯ লাখ ৯৬ হাজার ৯২০ টাকা ব্যয়ে ৩৪ মিটার দৈর্ঘ্যরে এই ব্রিজটি নির্মিত হয়। সম্প্রতি নদী খননকাজের সময় ব্রিজের সংযোগ সড়কের মাথায় উইংওয়ালের মাটি সরে গিয়ে গভীর গর্ত সৃষ্টি হয়। এর ফলে পানির প্রবাহ ব্রিজের তলদেশ দিয়ে চলতে শুরু করলে সেটি ধসে পড়ে। এতে ধরনীবাড়ী ও দুর্গাপুর ইউনিয়নের সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে শিক্ষার্থীরা, মারাত্মক ভোগান্তিতে পড়েছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, নদী খননের পর সংযোগ সড়কের দুই পাশে মাটি ধসে পড়েছে এবং ব্রিজের নিচ দিয়ে প্রবল গতিতে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে ব্রিজের অংশবিশেষ দেবে গিয়ে এটি সম্পূর্ণ চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা সাহান আলী, আইনুল ইসলাম ও রহিমা বেগম জানান, এই ব্রিজের দুই পাশে রুপারখামার, বাড়াইপাড়া, হাজিপাড়া, জানজায়গীর, মধুপুর দালালিপাড়া, নেললিপাড়া, কামালখামার ও কেকতিরপাড়সহ প্রায় ৩০ গ্রামের অন্তত ৪০ হাজার মানুষ প্রতিদিন এই পথে যাতায়াত করতেন। এখন তাদের চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
তারা আরও জানান, এই ব্রিজটি দিয়ে জানজায়গীর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কেডিএবি বিদ্যালয়, লতিফ রাজিয়া ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসা, পানাউল্লাহ দাখিল মাদ্রাসা ও কামালখামার আলিম মাদ্রাসাসহ চারটি হাফেজি মাদ্রাসার শত শত শিক্ষার্থী প্রতিদিন যাতায়াত করত। রুপারখামার জামে মসজিদের ইমাম আব্দুল দাইয়ান (৩৮) বলেন, ‘প্রতি সপ্তাহে আমি বাইক চালিয়ে এই ব্রিজ দিয়ে মসজিদে নামাজ পড়াতে যাই। গত সপ্তাহেও গিয়েছিলাম, কিন্তু আজ এসে দেখি ব্রিজ দেবে গেছে। এলাকাবাসীর সাহায্য ছাড়া পার হতে পারিনি।’ ধরনীবাড়ী লতিফ রাজিয়া ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসার শিক্ষার্থী আকসানুল ইসলাম, রাকিবুল ইসলাম, রুপারখামার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রহিমা খাতুন ও সামিউল ইসলাম জানান, ‘ব্রিজটি দেবে যাওয়ায় আমরা স্কুলে যেতে পারছি না। আগে অটোরিকশা ও সাইকেলে যেতাম, এখন সব বন্ধ। তারা দ্রুত নতুন ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানান।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) খন্দকার মো. ফিজানুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। পরিদর্শনের পর দ্রুত বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন