মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


মুজিবুর রহমান রঞ্জুর, কমলগঞ্জ

প্রকাশিত: নভেম্বর ৪, ২০২৫, ০৩:৪০ এএম

অস্তিত্বহীন তিন হাওড়ের ২০০ বিল

মুজিবুর রহমান রঞ্জুর, কমলগঞ্জ

প্রকাশিত: নভেম্বর ৪, ২০২৫, ০৩:৪০ এএম

অস্তিত্বহীন তিন হাওড়ের ২০০ বিল

*** কাগজে-কলমে তিন হাওড়ে ৪৩৭ বিলের থাকলেও ইজারা দেওয়া হয়েছে ২৪৫
*** খননের অভাবে পলি জমে ভরাট হয়ে গেছে এসব জলাশয়
*** বিপন্ন হয়ে পড়েছে হাওরপারের মানুষের জীবিকা
*** খনন করে বিল উদ্ধারের দাবি স্থানীয়দের।

মৌলভীবাজারের সবচেয়ে হাকালুকি, হাইল ও কাউয়াদীঘি হাওড়ে কাগজে-কলমে ৪৩৭টি বিল থাকার কথা তবে বাস্তবে প্রায় ২০০টির অস্তিত্ব এখন খুঁজে পাওয়া যায় না। খননের অভাবে আর বর্ষায় বিভিন্ন ছড়ার মাধ্যমে আসা পলি জমে ভরাট হয়ে গেছে এসব জলাশয়। এর প্রভাবে কমে গেছে দেশি মাছ, বিভিন্ন প্রজাতির পাখি ও জলজ উদ্ভিদ। এতে করে হাওড়পাড়ের বহু মানুষের জীবন-জীবিকা এখন বিপন্ন হয়ে পড়েছে।

হাকালুকি হাওড় এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ মিঠাপানির জলাভূমি। মৌলভীবাজারের বড়লেখা, কুলাউড়া, জুড়ী উপজেলা ছাড়াও সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ, গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজারে বিস্তৃত এ হাওড়। একসময় এই হাওড়ের সব বিল মিলে আয়তন ছিল ৪ হাজার ৪০০ হেক্টর। কাগজে-কলমে এখানে ২৩৮টি বিল; কিন্তু খনন না হওয়ায় প্রায় ১০০টি ভরাট হয়ে গেছে। এ ছাড়া হাইল হাওড়ে ১৩১টি ও কাউয়াদীঘি হাওরে ৬৮টি বিল থাকার কথা। কিন্তু এই দুই হাওড়েও প্রায় ১০০ বিলের কোনো হদিস নেই। কাগজে-কলমে উল্লেখিত তিন হাওড়ে ৪৩৭টি বিলের কথা বলা হলেও বাস্তবে ২৪৫টি ইজারা দেওয়া হয়েছে। বাকিগুলো পলি ও বালুতে ঢাকা পড়েছে।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আরিফ হোসেন জানান, হাকালুকি, হাইল ও কাউয়াদীঘি হাওরে চার শতাধিক বিলের কথা বলা হলেও বাস্তবে এই সংখ্যা এখন অনেক কম। প্রায় ৪০ শতাংশ বিল ভরাট হয়ে গেছে। হাওড় রক্ষায় গুলো খনন করা প্রয়োজন। একসময় হাওড়ে দেশীয় ২৬০ প্রজাতির মাছ ছিল, এখন তা কমে অর্ধেকে নেমে এসেছে।

হাওড়ের সঙ্গে যুক্ত ছড়া ও নদী থেকে প্রতি বর্ষায় পলি আসে। এই পলি জমে বিলগুলোর গভীরতা কমতে কমতে একসময় ভরাট হয়ে যায়। ২০ একরের বেশি আয়তনের বিল তিন বছরের জন্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে ইজারা দেওয়া হয়। ২০ একরের কম বিল উপজেলা ভূমি অফিস থেকে এক বছরের জন্য ইজারা দেওয়া হয়। কিন্তু ইজারাদারেরা ঠিকমতো খনন না করায় পলি জমে বিলগুলো অস্তিত্বহীন হয়ে পড়ে।

জুড়ী উপজেলার হাকালুকি হাওড়পাড়ের বাসিন্দা ইউসুফ মিয়া বলেন, যেভাবে হাওড়ের বিল ভরাট হচ্ছে, তাতে করে একসময় আর এগুলো খুঁজে পাওয়া যাবে না। এভাবে বিল ভরাট হতে থাকলে এগুলো থেকে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করা মানুষের কী হবে?

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, এক দশক আগেও হাওড়ের এসব বিলগুলোর অস্তিত্ব ছিল। অথচ এখন এগুলোর একটি বড় অংশই ভরাট হয়ে গেছে। যেগুলো এখনো টিকে আছে, খনন না করা হলে সেগুলোও ভরাট হয়ে যাবে।

সরেজমিন জানা যায়, বছরের এই সময়ে হাওড় পানিতে টইটম্বুর থাকার কথা। তবে বাস্তবে কুলাউড়া, জুড়ী, রাজনগর ও শ্রীমঙ্গল অংশে পানি একেবারেই কম। মাছের পরিমাণও উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমে গেছে। আগের মতো মাছ না পাওয়ায় পেশা পরিবর্তনে বাধ্য হয়েছেন অনেক মৎস্যজীবী।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন মৌলভীবাজার জেলা শাখার সভাপতি সালেহ সোহেল বলেন, দেশের বৃহৎ হাওরগুলোর মধ্যে তিনটি মৌলভীবাজারে। অথচ এগুলো এখন সংকটাপন্ন অবস্থায় রয়েছে। হাওড়ের বিলগুলো জরুরিভাবে খনন করা প্রয়োজন। এখানকার জলজ উদ্ভিদ রক্ষা করতে হবে।

মৌলভীবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোসা. শাহীনা আক্তার বলেন, হাওড়ের বিলগুলো খননের জন্য জেলা প্রশাসক সংশ্লিষ্ট বিভাগের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন। অনুমোদন হলে খননকাজ শুরু হবে। ভরাট হওয়া বিলগুলো খনন করা খুবই প্রয়োজন বলেও তিনি মনে করেন।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!