ময়মনসিংহের নান্দাইলে ফুলে ফুলে ছেয়ে গেছে প্রতিটি বরই গাছ। বসতবাড়ির আঙিনা থেকে বাণিজ্যিকভাবে গড়ে উঠা বাগানের গাছগুলোও ফুলে ফুলে ছেয়ে গেছে। ফুলের দরুন বহুগুণ বেড়ে গেছে বরই গাছের সৌন্দর্য। এরইমধ্যে ফুল থেকে গুটি আসতে শুরু করেছে।
এদিকে বরই ফুলের মিষ্টি ঘ্রাণে মৌমাছির ছোটাছুটি বাড়ছে। তাদের গুনগুন শব্দে মুখরিত চারপাশ। মধু সংগ্রহের জন্য মৌমাছির ঝাঁক ব্যস্ত সময় থাকায় গাছে গাছে ঘটছে পরাগায়ণ। বরই ফুলের মিষ্টি ঘ্রাণে যেন হারিয়ে যায় মন।
জানা যায়, বছরের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে বরই গাছে ফুল আসতে থাকে। ফল ধরতে ধরতে নভেম্বর-ডিসেম্বর। এ সময় কাঁচা-পাকা বরইয়ে ভরে থাকবে প্রতিটি গাছ। ছোট-বড় সবাই বরই খেতে ছুটে আসবে বরই গাছতলায়। টক-মিষ্টি স্বাদের বরই নারী-পুরুষ সবারই পছন্দ। এটি ‘কুল’ নামেও পরিচিত। যে যে নামে সম্বোধন করুক সবার পছন্দের ফল এটি।
সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলাজুড়ে বাড়ির আঙিনা থেকে শুরু করে বাণিজ্যিক বাগানের বরই গাছগুলো ফুলে ফুলে ছেয়ে গেছে। নাক ফুলের মতো দেখতে বরই ফুলের রাজ্যে পিঁপড়াদের দৌড়াদৌড়ি আর মৌমাছিদের আনাগোনা বেড়েছে। যেখানে দেশি বরই থেকে শুরু করে কাশমেরী ও আপেল, বলসুন্দরসহ বিভিন্ন জাতের কুলের বাগান শোভা পাচ্ছে। প্রতিটি বরই গাছে যেন ফুলের সমারোহ। এমন সৌন্দর্য মুগ্ধ করছে প্রকৃতিপ্রেমী সবাইকে।
উপজেলার রাজাপুর ফাজিল মাদ্রাসার সহকারী অধ্যাপক মো. হাদিউর রহমান বলেন, বরই ফুলের সৌন্দর্য আমাদের বিমোহিত করে। ফুলের মিষ্টি ঘ্রাণে যেন হারিয়ে যায় মন।
বীরবেতাগৈর ইউনিয়নের বীরকামট খালী গ্রামের তোফাজ্জল হোসেন, দুলাল মিয়া, নুরুল ইসলাম জানান, তাদের বাড়ির আঙিনায় লাগানো প্রতিটি বরই গাছে প্রচুর ফুল এসেছে।
খারুয়া ইউনিয়নের কয়ারপুর গ্রামের বাসিন্দা সাবেক ইউপি সদস্য মো. ওয়ালিউল্লাহর বাড়ির আঙিনায় রয়েছে ৩টি দেশি বরই গাছ। প্রতিটি গাছেই শোভা পাচ্ছে ফুল। তিনি বলেন, প্রতি বছর আমার পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে প্রায় ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকার বরই বিক্রি করতে পারি। এবারও যে ফুল এসেছে তাতে আবহাওয়া ভালো থাকলে পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে বিক্রিও করতে পারব।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাঈমা সুলতানা বলেন, নান্দাইলে ২ হেক্টর পরিমাণ জমিতে বরই চাষ হয়ে থাকে। এরমধ্যে ১ হেক্টর জমিতে কাশ্মীরি কুল বাগান রয়েছে। বরই চাষে তুলনামূলক কম খরচে অধিক লাভবান হওয়া যায়। পতিত জমি ফেলে না রেখে এমন জমিতে বরই গাছ রোপণ করলে বাড়তি আয় করা সম্ভব।

