রবিবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


নিজস্ব প্রতিবেদক, গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৬, ২০২৫, ০১:১১ এএম

স্রোত হারানো নদীর মতোই থমকে গেছে সুরেশের দিন

নিজস্ব প্রতিবেদক, গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৬, ২০২৫, ০১:১১ এএম

স্রোত হারানো নদীর মতোই  থমকে গেছে সুরেশের দিন

গোপালগঞ্জ শহরের কোল ঘেঁষে বয়ে চলা মরা মধুমতি নদী। নদীর জল আজ অনেকটাই স্থির, কমে গেছে স্রোত, কমে গেছে মাছ। সময়ের সাথে নদী যেমন শুকিয়ে এসেছে, তেমনি শুকিয়ে গেছে নদীর মাঝেই জীবনের শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকা এক মানুষের স্বপ্ন, আশা আর কোলাহল।

তিনি সুরেশ হাজরা। বয়স এখন শতাধিক। তবে কেবল সংখ্যা নয়, তার প্রতিটি বছর যেন সাক্ষী হয়ে আছে কঠোর বাস্তবতা আর অদম্য বেঁচে থাকার সংগ্রামের।

ভাঙা ডিঙ্গি নৌকাটাই তার ঘর। ছেঁড়া একটি লুঙ্গি ছাড়া নেই আর কোনো পোশাক। হাতে মাছ ধরার জাল। আর নদীই তার সংসার। এখনো প্রতিদিন ভোরে তিনি নৌকা বেয়ে নামেন নদীতে। তীব্র রোদ, বৃষ্টি কিংবা শীত কোনো বাধাই তাকে থামাতে পারে না।

‘এনআইডিতে আমার বয়স ৯৮ লেখা। আসলে আমার বয়স ১১০,’ বলছিলেন সুরেশ হাজরা। কথা বলতে বলতে যেন ক্লান্ত হয়ে যাওয়া চোখ দুটি থমকে গেল নদীর পানিতে। তারপর আবার বললেন, ‘এখন আর শরীর সায় দেয় না, তবুও মাছ ধরতেই হয়, না হলে খাব কি?’

দিনভর নদীতে জাল ফেলেন তিনি। ভাগ্য ভালো থাকলে ৫০ থেকে দেড়শ টাকার মাছ পান। সেই টাকায় কেনেন সামান্য খাদ্যসামগ্রী। বাকিটুকু রাখেন নিজের জন্য। সরকারি সহায়তা বলতে মাসে মাত্র ৬শ টাকার বৃদ্ধ ভাতা। যা দিয়ে তিন দিনের খাবারও হয় না।

একসময় পরিবার ছিল তারও। স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে গেছেন বহু বছর আগে। এক ছেলে থাকলেও নেই কোনো যোগাযোগ। এখন তার জীবনে একমাত্র সঙ্গী নদী আর স্মৃতি।

স্থানীয় বাসিন্দা সজিব বিশ্বাস বলেন, ‘শৈশব থেকেই দেখে আসছি তাকে। খুব কষ্টে দিন কাটান। এই বয়সেও বেঁচে থাকার জন্য তাকে নদীতে মাছ ধরতে হয়। সরকারের পক্ষ থেকে যদি একটা থাকার জায়গা হলেও করে দেওয়া যায়, সেটাই অনেক বড় সাহায্য।’

শহরের মডেল স্কুল রোডের বাসিন্দা তুষার বিশ্বাস বলেন, ‘এমন মানুষদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের দায়িত্ব। বয়স আর দারিদ্র্য তাকে অসহায় করে তুলেছে। কিন্তু তার আত্মসম্মান এখনো অটুট। কারো কাছে হাত পাতেন না। নিজের পরিশ্রমে যা পান, সেটাই খান।’

জীবনের এই শেষ অধ্যায়ে তার চাওয়া খুব ছোট। ‘শুধু একটু শান্তিতে থাকতে চাই,’ নিঃশব্দে বললেন শতবর্ষী এই মানুষটি।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!