ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর, ২০২৫

জয়পুরহাটের আক্কেলপুর

রেলগেট এখন দুর্ঘটনার হটস্পট

চৈতন্য চ্যাটার্জী
প্রকাশিত: নভেম্বর ২০, ২০২৫, ০২:৫২ এএম

জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার সদর সড়কের রেলগেটটি মেরামতের অভাবে এখন দুর্ঘটনার হটস্পটে পরিণত হয়েছে। রেললাইন সংস্কারের সময় সড়কের পাকা অংশ তুলে ফেলার পর থেকে রেলগেটের মাঝের উঁচু-নিচু অংশটি আর সমান করা হয়নি। ফলে এই সড়ক দিয়ে যেসব যাত্রী ও যানবাহন চলাচল করে, তারা প্রতিনিয়ত ছোট-বড় দুর্ঘটনার সম্মুখীন হচ্ছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে যানবাহন, ঝুঁকিতে রয়েছেন চালক ও যাত্রীরা। স্থানীয়রা বলছেন, খুব দ্রুত রেললাইনের সড়ক সংস্কার করা না হলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দুই বছর আগে রেললাইন সংস্কারের সময় সড়কের পাকা অংশ তুলে দিয়ে লাইন সংস্কার করা হয়। কিন্তু রেললাইন সংস্কার হলেও পরে লাইনের মাঝের অংশটি আর পিচ করা হয়নি। যানবাহনের চাপে উঁচু-নিচু অংশটি বেড়ে লাইনের দুপাশে বর্তমানে ছোট-বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। ফলে এই সড়ক দিয়ে যাতায়াতে রেললাইন পার হওয়ার সময় যানবাহনের চাকা গর্তে আটকে যায়। অনেক সময় গর্তে পড়ে ছোট যানবাহন উল্টে যাওয়ার ঘটনাও ঘটছে। এসব কারণে যানবাহন চলাচলের সময় প্রতিনিয়ত ছোট-বড় দুর্ঘটনার সম্মুখীন হচ্ছে। এতে যাত্রীরাও আঘাত পাচ্ছে।

স্থানীয় ভ্যানচালক মুমিনুল হক জানান, রেললাইন সংস্কারের সময় সড়কের পাকা অংশ তুলে ফেলার পর থেকে ওই স্থানে ছোট যানবাহন উল্টে যাওয়া, যাত্রী আঘাত পাওয়া নিয়মিত ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেকে অসুস্থ রোগী নিয়ে যাওয়ার সময় এই ঝাঁকুনিতে আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।

আরেক অটোভ্যানচালক সাদ্দাম হোসেন বলেন, রেলগেটের দুপাশের রাস্তা ভালো, কিন্তু রেলের অংশটি উঁচু-নিচু গর্ত থাকায় চাকা আটকে গিয়ে গাড়ির যন্ত্রাংশ নষ্ট হচ্ছে। আবার প্রতিদিন ২০টির বেশি ট্রেন চলাচলের সময় দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়। তখন যানবাহনের ধাক্কাধাক্কি, পথচারীর আহত হওয়া, বাস-ট্রাক আটকে যাওয়ার ঘটনা নিয়মিত দৃশ্য।

পুরোনো বাজার এলাকার বাসিন্দা ওমপ্রকাশ আগরওয়ালা বলেন, আক্কেলপুর রেলগেট একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান। প্রতিদিন এখান দিয়ে পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় অর্ধলক্ষ মানুষ চলাচল করে। রেলগেটের উঁচু-নিচু অংশ দুর্বল যাত্রীদের জন্য আরও দুর্ভোগ বাড়িয়েছে। দ্রুত রাস্তা সমান করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।

আক্কেলপুর রেল স্টেশন মাস্টার খাতিজা খাতুন বলেন, উঁচু-নিচু অংশে প্রতিদিনই দুর্ঘটনা ঘটছে। বিশেষ করে মাছবাহী গাড়ির পানি পড়ে রাস্তাটি আরও নষ্ট হচ্ছে। বিষয়টি আমরা কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। কয়েকবার ইটের খোয়া দিলেও স্থায়ী সমাধান হয়নি। এক স্থানে রেললাইন উঁচু করা যায় না। ডবল রেললাইন নির্মাণের সময় সমাধান হওয়ার কথা রয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আবিদা খনম বৈশাখী জানান, সড়ক সংস্কারের সময় ওই স্থান উঁচু করা হয়েছিল। রেলের অংশে পিচ-পাথর উঠিয়ে ফেলায় যে উঁচু-নিচু সৃষ্টি হয়েছে, তাতে পথচারীদের ভোগান্তি বাড়ছে। জনগণের ভোগান্তি লাঘবে রেল কর্তৃপক্ষকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জানানো হবে।