ময়মনসিংহের নটর ডেম কলেজের বহিষ্কৃত সাত শিক্ষক কাফনের কাপর পরে আমরণ অনশনে বসেছেন। কলেজ প্রশাসনের অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা এবং অবৈধ বহিষ্কারের প্রতিবাদে এই অনশন কর্মসূচি শুরু করেছেন তারা। গতকাল বুধবার দুপুর থেকে কলেজ প্রাঙ্গণে কাফনের কাপড় পরে আমরণ অনশন শুরু করেন।
এর আগে গত মঙ্গলবার ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে আমরণ অনশনের হুঁশিয়ারি দেন ওই সাত শিক্ষক। অনশনে অংশ নেওয়া শিক্ষকেরা কাফনের কাপড় বেঁধে শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন।
অনশনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বহিষ্কৃত রসায়ন বিভাগের প্রভাষক মোস্তাফিজার রহমান রানা। তার সঙ্গে অনশনে বসেছেনÑ ফাইন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের প্রভাষক জহিরুল ইসলাম, ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক মাহামুদুল হাসান মামুন, জীববিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক মাহমুদ হাসান এবং পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক সাইফুল ইসলাম। অনশন চলাকালে কলেজের অন্য শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা সংহতি জানিয়ে অনশনস্থলে উপস্থিত হন।
বহিষ্কৃত শিক্ষকেরা অভিযোগ করে বলেন, কলেজের প্রভিডেন্ট ফান্ড ও গ্র্যাচুইটি ফান্ডে গুরুতর আর্থিক অনিয়ম রয়েছে। দীর্ঘ ১০ বছর ধরে যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও একাধিক শিক্ষককে প্রমোশন দেওয়া হয়নি, যেখানে প্রতি পাঁচ বছর পরপর প্রমোশনের নিয়ম রয়েছে। কলেজের অভ্যন্তরে তথ্য গোপন, জবাবদিহির অভাব, একচেটিয়া প্রশাসনিক কর্তৃত্ব ও পক্ষপাতমূলক সিদ্ধান্ত কলেজ পরিচালনায় চরম সংকট তৈরি করেছে। এ ছাড়া বিভিন্ন আর্থিক লেনদেনে অনিয়ম-অসদাচরণের প্রমাণও রয়েছে বলে অভিযোগ করেন তারা।
শিক্ষকদের দাবি, এর আগে আন্দোলনের মুখে কলেজ শিক্ষক তাদের প্রাপ্য প্রায় ৬০ লাখ টাকা ফেরত দিলেও এরপর থেকে আন্দোলনকারীদের ওপর নানাভাবে চাপ, হয়রানি ও ভয়ভীতি তৈরি করা হয়। পরে ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক সব সমস্যার সমাধান করলেও অধ্যক্ষ ড. ফা. থাদেউস হেম্ব্রম জেলা প্রশাসনের নির্দেশ উপেক্ষা করে ভুক্তভোগী সাত শিক্ষককে বহিষ্কার করেন।
অনশনে বসা শিক্ষকদের দাবি, বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার, মিথ্যা অভিযোগ বাতিল, স্বচ্ছ তদন্ত কমিটি গঠন এবং বকেয়া পাওনা পরিশোধসহ ৬ দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরণ অনশন চলবে। তারা বলেন, এ লড়াই আমাদের অস্তিত্বের লড়াই। দাবি মানা না হলে আন্দোলন আরও কঠোর হবে।

