শীতের মৌসুমে রান্নায় সবজিতে কুমড়ো বড়ি যোগ করে আলাদা এক স্বাদ। আমিষ এবং নিরামিষ রান্নায় চলে কুমড়ো বড়ি। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও শীতের শুরুতে বগুড়ার সারিয়াকান্দি পৌর এলাকার সাহাপাড়ায় সুস্বাদু কুমড়ো বড়ি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন নারীরা। ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কুমড়ো বড়ি তৈরির কাজ করে এই এলাকার অর্ধশতাধিক পরিবারের নারীরা। ১ জন নারী প্রতিদিন গড়ে ৪-১০ কেজি কুমড়ো বড়ি তৈরি করতে পারেন। কোনো কোনো পরিবার দিনে ১৫ কেজি করে কুমড়ো বড়ি তৈরি করে। এ উপজেলায় বিভিন্ন গ্রামে বড়ি তৈরি করা হয়। অনেক বছর ধরে এ কুমড়ো বড়ি তৈরির কাজে নিয়োজিত রয়েছে। এর মধ্যে পৌরসভার সাহাপাড়া গ্রামের ২ ও ৭নং ৩০-৪০টি পরিবার। এ গ্রামের নারী কারিগর ডলি সাহা, অর্না সাহা, বনিতা সাহা, সাথী সাহা, শ্যামলি দেবনাথ, সাধনা সূত্রধর, রেবা সাহা, শংকরি রানী, মুনজুরী, নিহার রানী সাহাও গীতা রানী সঙ্গে কথা বলে জানা যায়,
শীতের আগমনের সঙ্গে সঙ্গে কুমড়োর বড়ি তৈরির ব্যস্ততা বেড়ে যায় তাদের মধ্যে। বন্যার সময় ছাড়া বাকি মাসগুলোতে কমবেশি কুমড়ো বড়ি তৈরি করা হয়। আশ্বিন মাস থেকে ফ্লাগুন এই ছয় মাস কুমড়োর বড়ি তৈরির ধুম পড়ে। শীতকাল কুমড়োর বড়ি তৈরির ভরা মৌসুম। এ সময় গ্রামের প্রতিটা বাড়িতে কমবেশি কুমড়োর বড়ি তৈরি করা হয়। পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে বাকিটা বাজারে বিক্রি করেন। কুমড়ো বড়ি তৈরির প্রধান উপকরণ মাষকলাইয়ের ডাল । বাজারে এ বছর প্রতি কেজি মাষকলাইয়ের ডালের দাম ১১৪ টাকা, ছুলার ডাল ১৪০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। কুমড়ো বড়ি বিক্রি হচ্ছে সাধারণ মানের বড়ি ১৮০ টাকা এবং ভালো মানেরটা ৪০০ টাকা। একেকজন কারিগর দিনে ১২শ টাকা থেকে ১৫শ টাকা পর্যন্ত কুমড়ো বড়ি বিক্রি করে থাকেন। এ এলাকায় শীত মৌসুমে প্রায় ১৫-২০ লাখ টাকার কুমড়ো বড়ি বেচাকেনা হয়ে থাকে। এ কুমড়ো বড়ি তৈরি করে পরিবারের নারী সদস্যরা, আর পুরুষরা হাঁট-বাজারে বিক্রি করে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কুমড়ো বড়ি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন পৌর এলাকার সাহাপাড়ার নারীরা। কুমড়ো বড়ি তৈরির একমাত্র প্রধান উপাদান হলো মাষকলাই ডাল। বড়ি বানানোর সহজ কোনো বিষয় নয়। এখানে কয়েকটি ধাপ রয়েছে। প্রথমে মাষকালাই যাতায় পিষে অর্ধেক করতে হয়।
কুমড়ো বড়ির কারিগররা জানান, আমাদের গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রায় অধিকাংশ মানুষেরই তেমন কোনো জমি-জমা নেই। বংশ পরম্পরায় বছরের পর বছর ধরে কুমড়ো বড়ি এ এলাকায় তৈরি হয়ে আসছে। শীতের এ মৌসুমে কুমড়ো বড়ি বিক্রি বেশি হয়। আমি ও আমার পরিবারের লোকজন সংসারের অন্যান্য কাজের পাশাপাশি এ কুমড়ো বড়ি তৈরির করছি। অনেকেই দেশ-বিদেশে স্বজনদের কাছে পাঠিয়ে থাকেন হাতে তৈরি এ বড়ি। আবহাওয়া ভালো না হলে কুমড়ো বড়ি তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। তখন বড়ি প্রস্তুত করতে অনেক সময় লাগে।
সরকারি সহজসর্থে ঋণ পেলে আমরা আরও বেশি কুমড়ো বড়ি তৈরি করতে পারব এবং আরও বেশি উন্নতমানের কুমড়ো বড়ি তৈরি করতে পারব। যদি কেউ আমাদের কাছ থেকে এই কুমড়ো বড়ি ক্রয় করতে চায় ০১৭১০৩৬০৭৪৪ এই নম্বরে যোগাযোগ করে কোরিয়ার মাধ্যমে দেশের সব জায়গায় নিতে পারবেন।

