ঢাকা শুক্রবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৫

টুঙ্গিপাড়া মহিলাবিষয়ক দপ্তর

এক কর্মকর্তাই সামলান পুরো দপ্তর

নিজস্ব প্রতিবেদক,  গোপালগঞ্জ
প্রকাশিত: নভেম্বর ২১, ২০২৫, ০২:১৪ এএম
  • দীর্ঘদিনে দপ্তরে জনবলসংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে
  • একজন কর্মকর্তা অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকায় দপ্তর বন্ধ থাকে ৩ দিন
  • কর্মচারী না থাকায় সেবা, প্রশিক্ষণ, ভাতাসহ সব কাজ কার্যত স্থবির
  • সেবা নিতে এসে প্রতিনিয়ত ভোগান্তিতে পড়ছেন উপকারভোগীরা 

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলা মহিলাবিষয়ক দপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে জনবল সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। বর্তমানে দপ্তরটিতে মাত্র একজন কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করছেন। নিয়মিত কোনো কর্মচারী না থাকায় সেবা, দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ, ভাতা এবং মাঠ পর্যায়ের কাজে কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছে।

এদিকে স্থানীয় উপকারভোগীদের অভিযোগ, অফিসে গেলে প্রায়ই তালা ঝুলতে দেখা যায়। সেবা নিতে এসে বারবার তাদের ফিরে যেতে হচ্ছে।

দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, অফিস সহকারী রশিদ গত ২৮ সেপ্টেম্বর এবং একমাত্র এমএলএসএস আমিনুল ইসলাম গত ৬ ফেব্রুয়ারি বদলি হয়ে গেলে দুটো পদই ফাঁকা হয়ে যায়। এরপর মুকসুদপুর উপজেলা মহিলা বিষয়ক দপ্তরের অফিস সহকারী প্রভাতী রানীকে সপ্তাহে দুই দিন টুঙ্গিপাড়ার অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হলেও কাজের গতি ফেরেনি।

বর্তমানে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা শ্রীময়ী বাগচী একাই পুরো দপ্তর সামলাচ্ছেন। ২০২১ সালের ৪ এপ্রিল যোগদানের পর থেকে তিনি কোটালীপাড়া উপজেলা মহিলাবিষয়ক দপ্তরের অতিরিক্ত দায়িত্বও পালন করছেন। ফলে সপ্তাহের কমপক্ষে তিন দিন তাকে কোটালীপাড়ায় থাকতে হয়। সে সময় টুঙ্গিপাড়ার দপ্তরে কার্যক্রম বন্ধ থাকে।

উপকারভোগী উপজেলার পাটগাতি মধ্যপাড়ার সালমা বেগম বলেন, ‘কোনো সেবা নেওয়ার জন্য অফিসে গেলে বেশির ভাগ সময় দেখি ম্যাডাম নেই। তিনি থাকলে ভালো সহায়তা করেন, তবে সেবা পেতে দেরি হয়।’

আরেক উপকারভোগী রোকেয়া বেগম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘১০ দিন ধরে সরকারি অনুদানের জন্য একটি আবেদন জমা দিতে আসছি, কিন্তু অফিসে তালা থাকে। শুনি ম্যাডাম কোটালীপাড়ায়। নতুন জনবল দিলে আমাদের কষ্ট কমবে।’

নারী উদ্যোক্তা দিলরুবা খানম বলেন, ‘নারী উন্নয়ন প্রশিক্ষণ, ভাতা বিতরণ, উদ্যোক্তা সহায়তাসহ গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রমগুলো জনবল না থাকায় থমকে আছে। এতে নারী উন্নয়নকার্য বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।’

জানতে চাইলে মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা শ্রীময়ী বাগচী বলেন, ‘অফিসের তালা খোলা থেকে মাঠপর্যায়ের কাজ সবই এখন আমাকেই করতে হয়। এমএলএসএস ও অফিস সহকারী না থাকায় কাজের চাপ বেড়েছে। কোটালীপাড়ায় অতিরিক্ত দায়িত্ব থাকায় অনেক সময় সেবা দিতে পারি না। এতে শারীরিক ও মানসিক কষ্ট হচ্ছে।’ তিনি জানান, ‘বিষয়টি জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং জেলা প্রশাসককে জানানো হয়েছে। তারা বিষয়টি সমাধান করবেন।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা আক্তার বলেন, ‘মহিলা বিষয়ক দপ্তরে গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রমগুলো জনবল সংকট থাকায় থমকে আছে। জনবল সংকটের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশা করছি, দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’