ঢাকা রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫

কৃষকের ফসল লুটে নিচ্ছে দস্যু ও লাঠিয়ালবাহিনী

মিজানুর রহমান, রায়পুর (লক্ষ্মীপুর)
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৭, ২০২৫, ০৩:৫২ এএম

লক্ষ্মীপুরের মেঘনার দুর্গম চরাঞ্চলে কৃষকের ফসল লুট করছে বিভিন্ন দস্যু ও লাঠিয়ালবাহিনী। কয়েকদিন ধরে তারা চরে অবস্থান নিয়ে কৃষকদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে ও ফসল দখল করছে। এর আগেও হামলা ও লুটের ঘটনা ঘটেছে; এমনকি দুজনকে হত্যা করা হয়েছে।

বর্তমানে একদিকে চরে চাষ করা ধান নষ্ট হচ্ছে, অন্যদিকে কৃষকের ফসল লুট করে নিয়ে যাচ্ছে দস্যুরা। অভিযোগ রয়েছে, বিভিন্ন অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তারা চরে অবস্থান করছে। সম্প্রতি চরের ধান উদ্ধার ও দস্যুদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ ও আদালতে মামলা করেছে ভুক্তভোগী কৃষক।

জানা যায়, মেঘনা নদীতে জেগে ওঠা টুনুরচর ও চরকানিবগায় দীর্ঘদিন থেকে ফসল চাষ করে আসছে লক্ষ্মীপুরের ৯ শতাধিক কৃষক। এবারও তারা আমন ধান চাষ করেছেন। এখন ফসল তোলার সময়। অনেকে তুলেছেন, বেশির ভাগ কৃষক ফসল তুলতে পারছেন না। কৃষকদের অভিযোগ, ভোলা থেকে আসা শতাধিক দস্যু চরে অবস্থান নিয়ে কৃষকদের ওপর চড়াও হয়ে হামলা ও ভয়ভীতি দেখিয়ে চর থেকে তাদের ভাগিয়ে দিচ্ছে। এতে কৃষকরা তাদের চাষ করা ধান-সয়াবিন ঘরে তুলতে পারছেন না।

রায়পুরের টুনুরচর এলাকায় (বরিশাল অংশ) আমন ধান কাটা বন্ধে এবং চরকাচিয়া গ্রামের ভূমিদস্যু সোহাগ, রিপন ও মিনু আমিন গংয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসকের কাছে ২৫ নভেম্বর লিখিত অভিযোগ করেছেন উপজেলার চরআবাবিল ইউপির ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কৃষক রজ্জব আলী খাঁ।

রায়পুরের সোনাপুর ইউপির রাখালিয়ার কৃষক মহিউদ্দিন বলেন, তাজল গাজি ও নুরুল আমিন গং এক একর জমির আমন কেটে নিয়ে গেছে। আরও নেওয়ার জন্য পাঁয়তারা করছে। থানায় একাধিক অভিযোগসহ আদালতে দুটি মামলা চলমান। চরলক্ষ্মীর জসিম ভূঁইয়া, জাকির হোসেনসহ কয়েকজন দস্যু আট একর জমির ধান কেটে নিয়েছে, আরও নিয়ে যাওয়ার পাঁয়তারা করছে। রায়পুর থানায় অভিযোগ দিয়েও কাজ হচ্ছে না।

দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবু জাফর মিন্টু ফরায়েজি বলেন, প্রতি বছর ধান ও সয়াবিন তোলার সময় এলে একদল দস্যু আক্রমণ করছে। ২০২০ সালেও রায়পুরের সীমান্তবর্তী চরমেঘায় সন্ত্রাসীরা দুই ব্যক্তিকে হত্যা ও অনেককে পঙ্গু করে দিয়েছে। এখন ধান তোলার সময়। মেঘনার চরে চাষিরা ধান তুলতে গেলে দস্যুরা তাদের ফসল লুট করে নিয়ে যাচ্ছে। প্রশাসনের প্রতি দাবি জানাচ্ছি, এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের। কৃষকরা বর্তমানে আতঙ্কে জীবনযাপন করছে।

সহকারী পুলিশ সুপার (রায়পুর-রামগঞ্জ সার্কেল) জামিলুল হক বলেন, এ বিষয়ে কয়েকটি অভিযোগ এসেছে। তদন্ত করে যারা অভিযুক্ত এবং এমন কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।