আমাদের সরকারের শাসন আমলেই জুলাই গণহত্যার বিচার সম্পন্ন হবে: ড. আসিফ নজরুল

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, আমাদের লোকদের এমনভাবে হত্যা করা হলো, অঙ্গহানি করা হলো, এর বিচার কোথায়? আমি দৃঢ়ভাবে জানাতে চাই বিচার এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের সরকারের শাসন আমলেই জুলাই গণহত্যার বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সম্পন্ন করা হবে। অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বাইরেও নারায়ণগঞ্জসহ সারা দেশে জুলাই অপরাধের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলাগুলোর চাজশিট ৫ আগস্টের মধ্যে দাখিল এবং দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলাগুলো নিষ্পত্তি করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হলো।
তিনি আরও বলেন, আমরা জুলাইয়ে বিজয়ী হয়েছিলাম কারণ আমরা সবাই একটি পরিবারে পরিণত হয়েছিলাম। আমাদের এ ঐক্য ধরে রাখতে হবে। জুলাই অভ্যুত্থানের মতো চাঁদাবাজ লুটেরাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। প্রশাসন সহায়তা করবে।
গতকাল সোমবার বিকেলে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নারায়ণগঞ্জে শহিদদের স্মরণে জুলাই শহিদ স্মৃতিস্তম্ভ’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে নারায়ণগঞ্জের হাজীগঞ্জে নতুন সড়কের পাশে জুলাই শহিদদের স্মরণে দেশের প্রথম স্মৃতিস্তম্ভ উদ্বোধন করেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ৫ জন উপদেষ্টা। স্মৃতিস্তম্ভ উদ্বোধনের আগে উপদেষ্টারা শহিদ পরিবার ও আহতদের ফুলেল শুভেচছা জানান এবং তাদের সাথে কুশল বিনিময় করেন। 
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের  উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, একটা সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য রেখে নারায়ণগঞ্জে  ৫৬ জন শহিদ হয়েছে। তাদের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে আমরা স্বৈরাচারমুক্ত বৈষম্যহীন বাংলাদেশ পেয়েছি। তাদের পরিবার অনেক ত্যাগ শিকার করেছে। তাদের সম্মানেই প্রথম নারায়ণগঞ্জ থেকে শহিদ স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপন করা শুরু হলো। তারা বন্দুকের মুখে যদি নির্ভীক দাঁড়িয়ে না থাকত তাহলে আজ স্বাধীনতা আসত না। তারা জীবন দিয়েছে প্রকৃত গণতন্ত্রের জন্য।
শিল্প এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা  আদিলুর রহমান খান বলেন, সাড়ে ১৫ বছরে দীর্ঘ সংগ্রামে অনেকে নিপীড়ন, গুম, আয়না ঘরে বন্দি হয়েছি। ২৪ এর জুলাইয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সারা দেশের মানুষকে জাগ্রত করেছিল। আপনারা অগ্নি সময়ের সন্তান। দেশে কোন আধিপত্য শক্তি আসার চেষ্টা করলে দেশের মানুষ তা দমন করবে।
স্মৃতিস্তম্ভ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, নারায়ণগঞ্জে জেলা প্রশাসক মো. জাহিদুল ইসলাম মিঞা, পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার প্রমুখ। 
এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জুলাই শহিদ পরিবার ও আহতরা এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, সুশীল সমাজ ও বিশিষ্টজনরা। সবশেষে উপদেষ্টারা স্মৃতিস্তম্বের পাশে বৃক্ষরোপণ করেন।