২০২৬ ফিফা বিশ্বকাপ ট্রফির জয়ের স্বপ্ন দেখছেন ব্রাজিল কোচ কার্লো আনচেলত্তি। সর্বশেষ ফিফা প্রীতি ম্যাচে জাপানের কাছে প্রথমবারের মতো হারের স্বাদ পায় পাঁচবারের বিশ^ চ্যাম্পিয়নরা। তবে প্রীতি ম্যাচের ফল নিয়ে চিন্তিত নন আনচেলত্তি, বরং বিশ^কাপের মূল পর্ব নিয়েই এখন পরিকল্পনা সাজাচ্ছেন ব্রাজিল কোচ। স্বপ্ন দেখেন, আগামী ১৯ জুলাই মেটলাইফ স্টেডিয়ামে ট্রফিটা উঁচিয়ে ধরবেন সেলেসাওদের পক্ষ থেকে। সিবিএফকে প্রতিদান দেবেন তার ওপর আস্থা রাখার। জাপানের বিপক্ষে ম্যাচ হারের পর রিওতে ফিরে এক সাক্ষাৎকারে এসব মন্তব্য করেছেন আনচেলত্তি। এ সময় ফিফার ৪৮ বিশ্বকাপ ধারণা এবং মেক্সিকো-কানাডার কন্ডিশন নিয়ে নিজের ভাবনাও জানিয়েছেন এই ফুটবল মায়েস্ত্রো। ব্রাজিল ফুটবলÑ নামটা শুনলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে পেলে, রোমারিও, বেবেতো, রোনালদো, রোনালদিনহো, কাকা কিংবা হালের নেইমারের পায়ের ছন্দ। সবুজ মাঠে বল নিয়ে এই কিংবদন্তিদের কারিকুরি মন জুড়ায়নি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া ভার।
কিন্তু সময়ের সঙ্গে ব্রাজিলের সেই সাম্বা কিংবা জোগো বনিতা এখন ধূসর। ২০০২ সালে জাপান-কোরিয়া আসরে শেষবার বিশ্বকাপ ট্রফিটা উঁচিয়ে ধরেছিলেন কাফু। এরপর কেটে গেছে ২৩ বছর। বিশ্বকাপের ট্রফি দূরে থাক, এই সময়ে ফাইনালটাও খেলতে পারেনি সেলেসাওরা। অবশেষে ব্রাজিল ফুটবলের ইতিহাস ভেঙে প্রথমবারের মতো বিদেশি কোচের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে ভিনি-রদ্রিগোদের দায়িত্ব। কিন্তু কার্লো এসেও যে ভাগ্যের খুব পরিবর্তন করে ফেলেছেন, তা কিন্তু নয়। এখন পর্যন্ত তার অধীনে তিন জয় এবং এক ড্রয়ের পাশাপাশি দুই ম্যাচে হেরেছে ব্রাজিল। শেষ হারটা তো রীতিমতো বিস্ময় জাগানিয়া। জাপানের বিপক্ষে ৩ গোল হজম করে হারতে হয়েছে সেলেসাওদের। তবে, আপাতত এসব প্রীতি ম্যাচের ফল নিয়ে দুশ্চিন্তা করছেন না আনচেলত্তি। তার ভাবনাটা একেবারে ভিন্ন। তিনি বলেন, ‘আমি জানি ব্রাজিল ফুটবল মানেই কেবল জয়। এখানে হারের কোনো জায়গা নেই। আমি সমর্থকদের কথা দিচ্ছি, আমরা বিশ্বকাপের আগে পুরোপুরি গুছিয়ে নেব। আমরা ট্রফি জেতার জন্যই সেখানে যাব। আর এটাই এখন আমার একমাত্র স্বপ্ন।’ ছিলেন বিশ্বের সেরা ক্লাব কোচদের একজন। কিন্তু রিয়াল মাদ্রিদ ছেড়ে ব্রাজিলে এসেছেন আরও বড় দায়িত্ব নিয়ে। স্বপ্নটাও তাই এখন অনেক বড় কার্লোর।
প্রতিদান দিতে চান অনেকের আস্থার। তিনি বলেন, ‘সিবিএফ আমাকে যে সুযোগ দিয়েছে, সেটা অবিশ্বাস্য। ব্রাজিলের মতো দলকে কোচিং করানো যে কারও জীবনের স্বপ্ন। আমি সেই স্বপ্নকে বাস্তব করেছি। এখন প্রতিদান দেবার পালা। আমি তাদের ট্রফিটা এনে দিতে চাই।’ বিশ^কাপ এতদিন ৩২ দলের হলেও এবার হচ্ছে ৪৮ দলের অংশগ্রহণে। সামনে পরিসর আরও বাড়াতে চায় ফিফা। এবার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কানাডা-মেক্সিকোও আছে হোস্ট হিসেবে। সামনের দিনে এই জায়গায়ও আসছে বড় পরিবর্তন। চারদিক থেকে এসব সিদ্ধান্তের সমালোচনা হলেও কার্লো বরং খুশি ফুটবল ছড়িয়ে যাওয়ায়। তিনি বলেন, ‘বিশ্বকাপ ফুটবলের সবচেয়ে বড় আসর। এখানে যত বেশি দল খেলবে, তত প্রতিযোগিতা বাড়বে। মানুষের আগ্রহ বাড়বে।
আমি ফুটবলকে চারদিকে ছড়িয়ে দেওয়ার বিষয়টাকে ইতিবাচকভাবেই দেখি।’ এশিয়ার পর এবার আফ্রিকার দুই দলের মুখোমুখি হবে ব্রাজিল। নভেম্বরের আন্তর্জাতিক বিরতিতে বিশ্বকাপ প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ইউরোপে তারা খেলবে সেনেগাল ও তিউনিসিয়ার বিপক্ষে। ব্রাজিলিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন (সিবিএফ) বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, আগামী ১৫ নভেম্বর লন্ডনে এমিরেটস স্টেডিয়ামে সেনেগালের বিপক্ষে খেলবে কার্লো আনচেলত্তির দল। এর তিন দিন পর ফ্রান্সের লিলে মুখোমুখি হবে তিউনিসিয়ার।