প্রায় এক দশক লেবাননের কারাগারে বন্দি থাকার পর, শর্তসাপেক্ষে জামিন পেয়েছেন লিবিয়ার সাবেক শাসক মুয়াম্মার গাদ্দাফির ছোট ছেলে হান্নিবাল গাদ্দাফি। শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) ১১ মিলিয়ন ডলার জরিমানা প্রধান সাপেক্ষে তাকে মুক্তির আদেশ দেন দেশটির আদালত। মুক্তির পর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার শর্ত দেওয়া হয়েছে তাকে। ১৯৭৮ সালে নিখোঁজ হওয়া লেবাননের শিয়া নেতা মুসা আল-সদর সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গোপন করার অভিযোগে ২০১৫ সালে লেবাননি কর্তৃপক্ষ হান্নিবাল গাদ্দাফিকে গ্রেপ্তার করে। প্রসঙ্গত লিবিয়ায় আল-সদর নিখোঁজ হওয়ার সময় হান্নিবালের বয়স ছিল মাত্র দুই বছর।
এদিকে হান্নিবালের আইনজীবী লরেন্ট বেয়ন জামিনের আদেশের কড়া সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘এটি ইচ্ছাকৃত ও বেআইনি আটক। আমরা এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করব।’ তিনি আরও জানান, তার মক্কেল আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার আওতায় আছেন, তাই এত বড় অঙ্কের জামিনের অর্থ জোগাড় করা সম্ভব নয়। ১১ মিলিয়ন ডলার সে কোথায় পাবে, প্রশ্ন তোলেন বেয়ন।
মুসা আল-সদর ছিলেন লেবাননের প্রভাবশালী আমাল আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা, যা বর্তমানে হিজবুল্লাহর রাজনৈতিক সহযোগী। তার নিখোঁজ হওয়া নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই লেবানন সরকার লিবিয়ার তৎকালীন শাসক মুয়াম্মার গাদ্দাফিকে দায়ী করে আসছে। এর ফলে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক দীর্ঘদিন ধরেই উত্তেজনায় রয়েছে।
গাদ্দাফি পরিবারের পতনের পর হান্নিবাল সিরিয়ায় পালিয়ে আশ্রয় নেন। সেখান থেকেই ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে সশস্ত্র ব্যক্তিরা তাকে অপহরণ করে লেবাননে নিয়ে আসে, পরে লেবানন নিরাপত্তা বাহিনী তাকে গ্রেপ্তার করে।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ চলতি বছরের আগস্টে হান্নিবালের তাৎক্ষণিক মুক্তি দাবি করে। সংস্থাটি বলেছিল, তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো ‘অবিশ্বস্ত ও অপর্যাপ্ত প্রমাণ’ নির্ভর।
সম্প্রতি হান্নিবালের স্বাস্থ্যের অবনতি হয়েছে। আইনজীবী বেয়ন জানান, তিনি তীব্র মানসিক অবসাদে ভুগছেন এবং পেটের ব্যথার কারণে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। তার আইনজীবী দ্রুত চিকিৎসা নিশ্চিতের দাবি জানিয়ে তার মুক্তির দাবি পুনর্ব্যক্ত করেন।