সর্বশেষ গত জুনে শ্রীলঙ্কার মাটিতে টেস্ট ক্রিকেট খেলেছিল বাংলাদেশ। দুই ম্যাচের সিরিজে শ্রীলঙ্কার কাছে ১-০ ব্যবধানে হেরেছিল টাইগাররা। সিরিজের প্রথম টেস্টটি ড্র হওয়ার পর দ্বিতীয় ম্যাচে ইনিংস ব্যবধানে জিতে নেয় লঙ্কানরা। ওই সিরিজের প্রথম ম্যাচে নাজমুল হোসেন শান্ত দুই ইনিংসেই (১৪৮ ও ১২৫) সেঞ্চুরি হাঁকানোর কীর্তি গড়েন। আর মুশফিকুর রহিম ১৬৩ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেন। নাজমুল ও মুশফিক দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরির জুটি গড়েন। তাদের ব্যাটিং নৈপুণ্যে গলে বাংলাদেশ দুর্দান্ত এক ড্র উপহার দিলেও পরের ম্যাচে খেই হারিয়ে ফেলে। ব্যাটিং ব্যর্থতায় ইনিংস হারের স্বাদ পায় তারা। এই সিরিজ হারের পরই নেতৃত্ব থেকে পূর্বঘোষণা অনুযায়ী সরে দাঁড়ান শান্ত। তবে অধিনায়কের দায়িত্ব আবার নিলেন এই ক্রিকেটার। সামনে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশ দলের নেতৃত্বে থাকছেন শান্তই।
শান্তর নেতৃত্বে প্রায় পাঁচ মাসের ব্যবধানে আবার সাদা পোশাকের ক্রিকেট খেলতে নামছে বাংলাদেশ। এবার তাদের প্রতিপক্ষ টেস্ট ক্রিকেটের নবীন সদস্য আয়ারল্যান্ড। আগামী ১১ নভেম্বর ঘরের মাঠে শুরু হবে দুই দলের দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের লড়াই। এ পর্যন্ত মাত্র ১০টি টেস্ট ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা হয়েছে আইরিশদের। ঘরের মাঠে খেলা আর টেস্টে অপরিপক্ব প্রতিপক্ষ আয়ারল্যান্ড হলেও নানা কারণে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে বাংলাদেশ। বর্তমানে বাংলাদেশের ক্রিকেটের সময়টা ভালো যাচ্ছে না। টানা সিরিজ হারের পর ওয়ানডে ক্রিকেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়ালেও টি-টোয়েন্টিতে আবার পথ হারিয়েছে।
কুড়ি ওভারের ক্রিকেটে ক্যারিবীয়দের কাছে তিন ম্যাচের সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে হেরেছে লাল-সবুজের জার্সিধারীরা। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিÑ দুই ফরম্যাটের ক্রিকেটেই বাংলাদেশের ব্যাটিং হতাশ করছে। আর টেস্ট ক্রিকেটে তো বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের প্রতি আস্থা রাখতে পারছেন না নির্বোধ সমর্থকেরাও। আড়াই দশক ধরে টেস্ট ক্রিকেট খেললেও এখনো টেস্ট ক্রিকেটের চ্যালেঞ্জটা নিতে জানে না বাংলাদেশ! তাদের পারফরম্যান্সেও সেটির প্রতিফলন ঘটেছে। সর্বশেষ ১০ টেস্ট ম্যাচে বাংলাদেশের জয় মাত্র দুটি। একটি ম্যাচে ড্রয়ের রেকর্ড। আর বাকি সাত ম্যাচেই হেরেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে দুবার ইনিংস হারের রেকর্ডও রয়েছে।
এবার ঘরের মাঠে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের জয়ের রেকর্ড সমৃদ্ধ করার সুযোগ রয়েছে। তবে আয়ারল্যান্ড ম্যাচ অতটা সহজ হবে না। সর্বশেষ তিন ম্যাচেই জিতেছে দলটি।
আফগানিস্তান ও জিম্বাবুয়েকে টেস্ট ম্যাচে হারানোর গৌরব অর্জন করেছে আইরিশরা। সর্বশেষ গত ফেব্রুয়ারিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৬৩ রানের টেস্ট ম্যাচ জিতেছে তারা। এসব জয় বাংলাদেশ সফরে আয়ারল্যান্ড দলকে বাড়তি আত্মবিশ^াস জোগাবে। এ ছাড়া ২০২৩ সালের এপ্রিলে ঢাকায় এসে বাংলাদেশের বিপক্ষে একটি টেস্ট ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতাও আছে আয়ারল্যান্ডের। মিরপুরে অনুষ্ঠিত ম্যাচে বাংলাদেশ ৭ উইকেটে জিতলেও টেস্ট ক্রিকেটের নতুন দল হিসেবে ভালো লড়াই করেছে আইরিশরা। এই অভিজ্ঞতা এবার কাজে দেবে তাদের।
টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচটি হবে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। সিলেটের উইকেটে বিদেশিরা ভালো ক্রিকেটে খেলে। তাই কন্ডিশন আর উইকেট বিবেচনায় আইরিশরাও রূপকথা জন্ম দেওয়ার চেষ্টা করবে। এরপর ২৯ নভেম্বর মিরপুরে হবে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট ম্যাচ। মিরপুরে সফরকারী দল বিপাকে পড়ে। সুবিধা আদায় করে নেয় বাংলাদেশ। তার পরও টেস্ট ক্রিকেট বলে বাড়তি চ্যালেঞ্জ থাকবে বাংলাদেশের সামনে। ঘরের মাঠে আইরিশ চ্যালেঞ্জ জয় করে টেস্টে জয়ে ফিরতে পারে কি না বাংলাদেশ, সেটিই দেখার বিষয়।

