পেনাল্টি মিস করে জিততে পারল না কোচ কার্লো আনচেলত্তির দল ব্রাজিল। সুন্দর ফুটবল খেলার ধারাবাহিকতায় ছেদ পড়ল তাদের। ম্যাচের শুরুতে বেশ ভুগতে দেখা গেল দলটিকে, গোলও হজম করে বসল তারা। সেই ধাক্কা সামলে ঘুরে দাঁড়ালেও, পেনাল্টি মিস করে জিততে পারল না কার্লো আনচেলত্তির দল। ফ্রান্সের লিলে মঙ্গলবার রাতের প্রীতি ম্যাচে তিউনিসিয়ার বিপক্ষে পিছিয়ে পড়ার পর ১-১ ড্র করেছে ব্রাজিল। সেনেগালের বিপক্ষে গত শনিবার যে দাপুটে ফুটবল উপহার দেয় ব্রাজিল, সেই তুলনায় তাদের এই ম্যাচের পারফরম্যান্স মোটেও ভালো হয়নি। দলটির খেলোয়াড়দের পায়ে যেন ক্লান্তি ভর করেছিল। অগোছালো ফুটবল আর লক্ষ্যহীন শটে বারবার হতাশ করে তারা। তারপরও ব্যবধান গড়ে দেওয়ার সুযোগ পেয়েছিল দলটি; কিন্তু লুকাস পাকেতা স্পট কিকেও বল জালে পাঠাতে পারেননি। ম্যাচের শুরু থেকে এদিনও পজেশন রাখায় আধিপত্য করে ব্রাজিল, কিন্তু আক্রমণগুলো ধারালো হচ্ছিল না। ২৩ মিনিটে গোলও হজম করে তারা। বাঁ দিক সতীর্থের বাড়ানো পাস ডি-বক্সে ফাঁকায় পেয়ে, কোনাকুনি শটে গোলটি করেন হাজেম মাস্তুরি। পিছিয়ে পড়ার পর প্রতিপক্ষের ওপর চাপ বাড়ান ভিনিসিউস-রদ্রিগোরা। ৩৮ মিনিটে রেয়াল মাদ্রিদ তারকা রদ্রিগোর দারুণ একটি ফ্রি কিক অসাধারণ নৈপুণ্যে কর্নারের বিনিময়ে ফেরান গোলরক্ষক। বিরতির আগেই অবশ্য সমতায় ফেরে আনচেলত্তির দল।
তিউনিসিয়ার ডি-বক্সে তাদের ডিফেন্ডার ব্রুনের হাতে বল লাগলে ভিএআরের সাহায্যে পেনাল্টি দেন রেফারি। ৪৪ মিনিটে স্পট কিকে গোলটি করেন দারুণ ছন্দে থাকা এস্তেভোঁ। সেনেগালের বিপক্ষে ২-০ ব্যবধানের জয়ে দলকে এগিয়ে নিয়েছিলেন এই তরুণ ফুটবলার। জাতীয় দলের হয়ে এই নিয়ে সবশেষ ছয় ম্যাচে পাঁচ গোল করলেন ১৮ বছর বয়সী চেলসি ফরোয়ার্ড। দ্বিতীয়ার্ধেও অধিকাংশ সময় তিউনিসিয়ার অর্ধে খেলা হয়। যদিও ব্রাজিলের বেশিরভাগ শট রক্ষণেই আটকে যাচ্ছিল, গোলরক্ষককে সেভাবে পরীক্ষায় ফেলতে পারছিল না। এর মাঝেই চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার এদের মিলিতাও। তার ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদের জন্য যা হতে পারে বড় দুর্ভাবনার। ৭৬ মিনিটে ডি-বক্সে ভিতো হকে ফাউলের শিকার হলে আবার পেনাল্টি পায় ব্রাজিল। কিন্তু উড়িয়ে মেরে হতাশ করেন ওয়েস্ট হ্যামের মিডফিল্ডার লুকাস পাকেতা। ৭০ শতাংশের বেশি সময় বল দখলে রেখে গোলের জন্য ২২টি শট নিয়ে মাত্র তিনটি লক্ষ্যে রাখতে পারে ব্রাজিল। অবশ্য যোগ করা সময়ের শেষ মিনিটে ভাগ্য সহায় হলে হাসিমুখে মাঠ ছাড়তে পারতো তারা; কিন্তু এস্তেভোঁর শট দূরের পোস্টে লেগে বেরিয়ে যায়।
গত মে মাসে আনচেলত্তি দায়িত্ব নেওয়ার পর এই নিয়ে চারটি ফিফা উইন্ডো শেষ হলো, এর কোনোটিতেই শতভাগ সাফল্য পেল না ব্রাজিল। বিশ্বকাপের আর সাত মাসের মতো বাকি। এই সময়ে এভাবে বারবার ছন্দ হারানো ও পারফরম্যান্সে এমন অধারাবাহিকতা পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের জন্য অনেক বড় দুশ্চিন্তার।

