রবিবার, ০৪ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


শাহজাহান চৌধুরী শাহীন,  কক্সবাজার

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৬, ২০২৪, ০৪:০০ পিএম

ওসি প্রত্যাহার

গায়েবি মামলার নথি গায়েব, সাংবাদিক ও ব্যবসায়ীরা আসামি

শাহজাহান চৌধুরী শাহীন,  কক্সবাজার

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৬, ২০২৪, ০৪:০০ পিএম

গায়েবি মামলার নথি গায়েব, সাংবাদিক ও ব্যবসায়ীরা আসামি

ওসি ফয়েজুল আজিম নোমান। ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

কক্সবাজার সদর মডেল থানা থেকে সদ্য প্রত্যাহার হওয়া ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফয়েজুল আজিম নোমানের বিরুদ্ধে গায়েবি মামলা রেকর্ড করে এজাহারে বাদীকে স্বাক্ষর করানো এবং গায়েবি মামলার নথি দীর্ঘদিন গায়েব করার অভিযোগ উঠেছে।

মামলা নিয়ে বাণিজ্য, গ্রেপ্তার বাণিজ্যসহ বিভিন্ন অভিযোগে একমাস ২৮ দিনের মাথায় কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি ফয়জুল আজিম নোমানকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। গত ১৭ নভেম্বর তাকে প্রত্যাহারের আদেশ দিয়ে এক প্রজ্ঞাপন জারি করেছেন চট্টগ্রাম বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মো. আহসান হাবিব পলাশ।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, কক্সবাজার সদর মডেল থানা ওসি ফয়জুল আজিমকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত চট্টগ্রাম ডিআইজি কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হলো। বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রহমত উল্লাহ।

গায়েবী মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ৩১ অক্টোবর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার সময় শৈবাল হোটেলের সামনে অর্ন্তঘাতমুলক কর্মকান্ড সৃষ্টি করে যান চলাচলে ব্যাঘাত ঘটিয়ে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটাইয়া ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা জ্বালিয়ে দিয়ে জনমনে ভীতি সঞ্চার সৃষ্টি করে সরকারি সম্পদ নষ্ট করার অপরাধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে গত ৫ নভেম্বর কক্সবাজার সদর মডেল থানার মামলা নং ১৩, জিআর-৭১২ মামলাটি রেকর্ড করা হয়।

এই মামলায় প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী সালাহ উদ্দিন আহমেদ সিআইপি, রাজনৈতিক নেতা, পিপি, সাংবাদিক,  ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষকে আসামী করা হয়।এজাহারে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ৫০-৬০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি হিসেবে দেখানো হয়েছে।

সদর মডেল থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি ফয়জুল আজম নোমান দায়িত্বে থাকাকালিন এই মামলার নথি কিছুদিন গোপন করে রেখেছিলেন ওসি। পরে তাকে সদর মডেল থানা থেকে প্রত্যাহার করার পর নথিটি প্রকাশ্যে আসে।

মামলার নথি অনুসারে ওই ৫ নভেম্বর রাত ১২টা ৫ মিনিটে মামলাটি সদর থানায় রেকর্ড করা হয়। তবে এজাহার জমা দেওয়া হয়েছিল দিনের বেলায়। দ্রুত এজাহার প্রস্তুত করে থানার মামলা নং-১০, জিআর-৭১২ নম্বর মামলা হিসেবে রেকর্ড করেন ওসি নোমান। 

বাদী হিসেবে দেখানো হয়েছে কক্সবাজার পৌরসভার ১১ নং ওয়ার্ড বাহারছড়ার বাসিন্দা মো. নুরুল আমিনের ছেলে ওমর ফারুক নামের একজনকে। যিনি ২৪ আগষ্ট থানায় রেকর্ড হওয়া (কক্সবাজার থানার মামলা নং- ৩২, জিআর- ৫০০/২৪) নিয়মিত মামলার পলাতক ২নং আসামি। 

থানায় ৫ই নভেম্বর রেকর্ড হওয়া বিশেষ ক্ষমতা ও বিস্ফোরক আইনে দায়ের করা মামলায় আসামী করা হয় গত ৫ই আগষ্টে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে পলাতক ও আত্মগোপনে থাকা জেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, কৃষক লীগ ও ছাত্রলীগের নেতা, প্রবীণ নেতাদের। এছাড়াও আসামী করা হয় বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের।

এদের মধ্যে উল্লেখ যোগ্য আসামীরা হলেন, প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী ও আওয়ামীলীগের প্রবীন নেতা সালাহ উদ্দিন আহমেদ সিআইপি। এছাড়াও আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্র লীগ,  কৃষক লীগ, ২ জন সাংবাদিক, ২ জন সাবেক পিপি, প্রবীন আওয়ামী লীগ নেতা ও ব্যবসায়ী রয়েছে আসামী। 

স্থানীয় বাসিন্দাদের সুত্রে জানাগেছে, ওই দিন ৩১ অক্টোবর এই ধরনে কোন মিছিল ও ঘটনা ঘটেনি, কোন সংবাদ মাধ্যমে প্রচার হয়নি, কোন গোয়েন্দা সংস্থাও অবগত নয় এবং কোন স্বাক্ষ্য প্রমানও নাই। অথচ ৫ আগস্টের পর থেকে এজাহারের উল্লেখিত আসামীগণ দেশে ও বিদেশে আত্মগোপনে রয়েছে বলে জানা যায়। 

ওসি ফয়জুল আজিম নোমান কক্সবাজার সদর মডেল থানায় যোগদানের পর থেকে মামলা বানিজ্য, গ্রেপ্তার বাণিজ্যসহ  বিভিন্ন অভিযোগ তার বিরুদ্ধে উত্থাপন হয়ে আসছিল। পরবর্তীতে বিভিন্ন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কর্তৃপক্ষ তাকে কক্সবাজার সদর থানা থেকে প্রত্যাহার করে চট্টগ্রাম ডিআইজি কার্যালয়ে সংযুক্ত করেন। 

ভুক্তভোগিরা অভিযোগ করছেন, মামলা বানিজ্য করার জন্য জনৈক ওমর ফারুককে বাদী সাজিয়ে তড়িগড়ি করে এই গায়েবী মামলাটি রেকর্ড করেন। যদি এই মালার বাদী একজন নিয়মিত মামলার পলাতক আসামী।

ভুক্তভোগিরা  জানান, একদিকে স্বরাস্ট্র উপদেষ্টা মিথ্যা ও গায়েবী মামলা করার জন্য অফিসিয়ালি নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন, অন্যদিকে ওসি নোমানের মত পুলিশ কর্মকর্তা মিথ্যা গায়েবি মামলা রুজু করে মামলা বানিজ্য ও নিরীহ মানুষকে হয়রানি করে যাচ্ছেন । তাই তারা এই মামলাটি সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক ওসি নোমানের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবী জানান।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এম জামাল উদদীন চৌধুরী বলেন, মামলা তদন্ত চলমান রয়েছে। তদন্তের পর আসল রহস্য বুঝা যাবে।

এ ব্যাপারে নবাগত কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি ইলিয়াস খান বলেন, মামলা তদন্ত চলছে। কোন নিরীহ মানুষ হয়রানী হবে না। তদন্তে মামলার সুস্পষ্ট তথ্য উপাত্ত না থাকলে এটার ফাইনাল রিপোর্ট যাবে। উর্ববতন কর্তৃপক্ষের ক্লিয়ার নির্দেশনা রয়েছে।

কক্সবাজার পুলিশ সুপার (এসপি) রহমত উল্লাহ জানান, ওসি ফয়জুল আজিম নোমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়ায় তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। মামলার বিষয়টি তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।

আরবি/জেডআর

Link copied!