সোমবার, ১৬ জুন, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


সালমান ফরিদ, সিলেট

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৯, ২০২৪, ১০:১১ পিএম

সিলেটে প্রতিদিন ধরা পড়ছে চোরাই পণ্য

চিনি চোরাচালানে তিন সিন্ডিকেট

সালমান ফরিদ, সিলেট

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৯, ২০২৪, ১০:১১ পিএম

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

চিনিকাণ্ডে জড়িত রাঘববোয়ালরা রাজনীতিতে। আছে শীর্ষ ব্যবসায়ীদের মাঝে এবং প্রশাসনেও। তবে দৃশ্যপটে দেখা মিলছে শুধু চোরাকারবারিদের। তা-ও চুনোপুঁটি। রাঘববোয়ালরা বরাবরের মতো থেকে যাচ্ছে আড়ালে, শতভাগ নিরাপদে। দৃশ্যমান চোরাচালানে এসব চুনোপুঁটির দেখা মিললেও প্রকৃতপক্ষে চিনি চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ করছে রাজনীতিক, ব্যবসায়ী ও প্রশাসন এই তিন সিন্ডিকেট।

চিনিকাণ্ডে সবচেয়ে বেশি আলোচিত অঞ্চল সিলেট। বৃহত্তর সিলেটে প্রায় প্রতিদিন ধরা পড়ে চিনিসহ চোরাই পণ্যের চালান। প্রায়ই আটক হচ্ছে চোরকারবারি। তবে রাঘববোয়ালরা আছে লোকচক্ষুর অন্তরালে। যেমনটি ছিল গত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে। আছে ঠিক এখনো। তারা আড়ালে থেকে নিয়ন্ত্রণ করছে চিনির চোরাচালান ও বাজার।

দৈনিক রূপালী বাংলাদেশের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে এসব তথ্য।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, স্থানীয় রাজনীতিক ও প্রশাসনের লোকজন ছাড়াও দেশের কয়েকটি শীর্ষ চিনি বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানও এসব চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত। প্রতিটি অভিযানের পর ছোটোখাটো চোরাকারবারির কথা জানলেও বা আলোচনায় এলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে বড় চক্রটি।

রাজনৈতিক, ব্যবসায়ী এবং প্রশাসন এই তিন সিন্ডিকেটের কোমর ভেঙে দিতে পারলে চিনির চোরাচালান অনেকটা বন্ধ হয়ে যাবে বলে মনে করে সচেতন মহল। তারা জানায়, একেবারে বন্ধ করতে এই সিন্ডিকেট ভাঙার পাশাপাশি বৈধ পথে চিনি আমদানির সিদ্ধান্তেরও বিকল্প নেই। যখন চিনি চোরাচালান মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠছিল, তখন সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ চিনি চোরাচালান রোধে সরকারকে আমদানির প্রস্তাব দিয়ে একাধিকবার চিঠি চালাচালি করেছিল। এনবিআর ও সিলেটের বিভাগীয় কমিশনারকে গেল এক বছরে এ নিয়ে কয়েকটি চিঠি দেয় তারা, কিন্তু কোনো সাড়া মেলেনি।

অভিযোগ আছে, চিনি চোরাচালান টিকিয়ে রাখতে এই তিন সিন্ডিকেট সব সময়ই এককাট্টা। তাদের কারণেই সিলেট চেম্বারের চিনি আমদানির প্রস্তাবে সায় মেলেনি।

চেম্বারের শীর্ষ এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই প্রতিবেদককে বলেন, দেশে চিনি উৎপাদন চাহিদার চেয়ে অপ্রতুল এবং প্রতিবেশী দেশে এর দাম এখানকার বাজারের চেয়ে এক দ্বিতীয়াংশ কম। তাই আমদানির সুযোগ না থাকলে চোরাকারবারিরা অবৈধ পথের দিকে ঝুঁকবেই। এ জন্য উৎপাদন বাড়িয়ে দেশের ভেতরে চিনির দাম কমাতে হবে, যাতে প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সামঞ্জস্য থাকে। যে রকম জ্বালানি তেলের বেলায় করা হয়েছে। নতুবা আমদানির সুযোগ দিতে হবে। আর তাই চেম্বার থেকে আমদানির সুযোগ দিতে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল।

সূত্র জানায়, সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট, জৈন্তাপুর সীমান্ত রুট চিনি চোরাচালানের জন্য বিখ্যাত। কোম্পানীগঞ্জের দয়ারা বাজার, মাঝের গাঁও হয়ে সবচেয়ে বেশি চিনি ঢোকে বাংলাদেশে। ওই এলাকার চিনি চোরাকারবারিরা ৫ আগস্টের পর খানিকটা বিরতি দিলেও পরে আবার সক্রিয় হয়ে উঠেছে। গোয়াইনঘাটের বিছনাকান্দি, মাতুরতল, হাজীপুর, খাসিয়া বস্তি, সোনাটিলা এলাকা চিনি চোরাচালানের অন্যতম নিরাপদ রুট। এসব রুটে সীমান্ত থেকে আসা চিনির চালান নামছে নিয়মিত। জৈন্তাপুরের আলুবাগান, ডিবির হাওর, মোকামপুঞ্জি, লালাখাল সীমান্ত চিনির নিরাপদ রুট। 

এ ছাড়া কানাইঘাটের দোনা সীমান্ত এলাকা দিয়ে বিপুল পরিমাণ চিনি নামছে। এসব চিনি সীমান্ত দিয়ে নিয়ে এসে সীমান্তবর্তী ‘গোডাউনে’ রাখা হচ্ছে। চিনি বাণিজ্যের হেডকোয়ার্টার হচ্ছে জৈন্তাপুরের হরিপুর। ওখান থেকে মূলত চিনি পাচার হয় নির্দিষ্ট ক্রেতাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। প্রতিদিন জাফলং, জৈন্তাপুর, ভোলাগঞ্জ থেকে পাথর ও বালুবাহী শত শত ট্রাক চলাচল করে। এসব ট্রাকের ওপরে বালু ও পাথর দিয়ে চিনি পাচার করা হচ্ছে।

সূত্র জানায়, বাংলাদেশে বেসরকারিভাবে চিনি পরিশোধন ও বাজারজাত করে পাঁচটি প্রতিষ্ঠান। এগুলো হচ্ছে আবদুল মোনেম সুগার রিফাইনারি লিমিটেড (ঈগলু সুগার), ইউনাইটেড সুগার মিলস লিমিটেড (ফ্রেশ সুগার), এস আলম রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড (তুর্কি সুগার), সিটি সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড (তীর সুগার) এবং পারটেক্স সুগার মিলস লিমিটেড (পারটেক্স সুগার)। তারা সরকারি ও বেসরকারি চিনিকল থেকে কিনে পরিশোধন ও বাজারজাত করে। একাধিক সূত্রের দাবি, ঈগলু, তুর্কি ও তীর সুগারসহ বাকিদের কেউ কেউ চিনি চোরাচালানে জড়িত। তারা দেশের বাইরে থেকে চোরচালানের মাধ্যমে আসা চিনি নিজেদের লেভেলে প্যাকেটজাত করে বাজারে সরবরাহ করে। কয়েকটি কোম্পানি সিলেটে থাকা তাদের বিপণন অফিসের মাধ্যমে মোড়কবন্দি করে থাকে। তারাই চোরাই চিনির অন্যতম ক্রেতা।

এ ছাড়া সিলেটের মিষ্টান্ন ও বিস্কুট উৎপন্নকারী প্রতিষ্ঠান রিফাত অ্যান্ড কোম্পানি, ফুলকলি, মধুবন, পিউরিয়া, বনফুল, মুসলিম সুইটমিটসহ বড় বড় প্রতিষ্ঠান চোরাই চিনির শীর্ষ ক্রেতা। চোরাকারবারিরা ট্রাকভর্তি চালান এনে সরাসারি তাদের কারখানায় সরবরাহ করে। ট্রাক থেকে চিনি খালাস হয় কারখানাতেই। এ ছাড়া নগরীর খাদিম বিসিকে দুটি গোডাউন রয়েছে, যেখানে চোরাই চিনি এনে রাখা হয়। এই গোডাউন করাই হয়েছে শুধু চোরাই চিনি রাখার জন্য। আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা ও সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর ক্ষমতায় থাকাকালে সরাসরি এই ব্যবসা পরিচালনা করতেন। তারাই এসব বড় প্রতিষ্ঠানে চিনি সরবরাহ করতেন। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা ছাড়ার পর এই ব্যবসা হাতবদল হয়ে চলে যায় বিএনপি ও জামায়াত নেতাদের হাতে।

অভিযোগ আছে, সিলেটের প্রভাবশালী এক নেতা, যিনি বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, বর্তমানে তিনি চিনির চোরাকারবারিদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছেন। তার নামে চলছে সিলেটে চোরাই চিনির গুরুত্বপূর্ণ রুট।

সূত্রমতে, ৫ আগস্টের পর রাতারাতি হাতবদল হয়ে যায় চিনি চোরাচালান। দখল নিতে তখন মরিয়া হয়ে ওঠেন বিএনপির একাধিক গ্রুপের নেতাদের অনুসারীরা। ভাগবাঁটোয়ারা হয় পুরো রুট। একটি কমিশন দেওয়া হয় জামায়াত-শিবিরের নেতাদেরও। ৬ আগস্ট গোয়াইনঘাট সীমান্ত দিয়ে এক জামায়াত নেতা ৬ কোটি টাকার চোরাই পণ্য বাংলাদেশে অবৈধ পথে নিয়ে আসেন। খবর জানাজানি হলে বিষয়টি ভেতরে ভেতরে বেশ আলোচিত হয়। অবশ্য এর সঙ্গে সিলেটে তাদের শীর্ষ কোনো নেতার নাম পাওয়া যায়নি। স্থানীয় পর্যায়ের নেতারাই মূলত চিনির লাইন ভাগ করে নিয়েছেন। 

তবে চিনিকাণ্ডে বিএনপির নেতাকর্মীদের নাম আলোচনায় আসে সবচেয়ে বেশি। এতে বিব্রত হন দলের নেতারা। বিএনপির ভেতরে বিবদমান গ্রুপের নিয়ন্ত্রণ নিতে বিতর্ক বা গ্রেপ্তারের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়। বিশেষ করে জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট, দক্ষিণ সুরমা ও ওসমানীনগরের মাঠ পর্যায়ের নেতারা চোরাচালান ও সড়কের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে একে অপরের মুখোমুখি অবস্থানে চলে যান। সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী চিনিকাণ্ডে দলের নেতাকর্মীদের না জড়াতে নিদের্শ দেন। যখন চারদিক থেকে চোরাচালানে বিএনপির নাম জড়াতে শুরু করে, তখন তিনি এ নিয়ে কঠোর অবস্থানে যান।

আরিফুল হক চৌধুরী এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘চিনিসহ যেকোনো চোরাচালানে কারও জড়িত হওয়ার প্রমাণ এলে তাকে ছাড় দেওয়া হয় না, হবেও না। আমরা এ নিয়ে জিরো টলারেন্সে আছি।

’সিলেট মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমদাদ হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘বিএনপির নাম ভাঙিয়ে অবৈধ কর্মকাণ্ডে যারা জড়িত, আমরা তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিয়েছি। ভবিষ্যতেও নাম এলে তাদের সঙ্গে কোনো রকম আপস হবে না।

সূত্র জানিয়েছে, সিলেটে চোরাচালান রোধে বিজিবি সক্রিয়। তারাই মূলত এখন চোরাচালান রোধে বড় ভূমিকা রাখছে। তবে ৫ আগস্টের পর চিনি সিন্ডিকেটের সঙ্গে আগের মতো পুলিশের সখ্য দ্রুত গড়ে ওঠে। ওই সময় তাদের ব্যবসা নির্বিঘ্ন করতে অতীতের মতো প্রশাসন ও পুলিশও সহায়তা করে। আওয়ামী লীগের শেষ সময়ে এবং রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর চোরাচালানের প্রধান রুট সিলেট-তামাবিলে সবচেয়ে বেশি সহায়তার অভিযোগ ওঠে জৈন্তাপুর থানার সদ্য সাবেক ওসি তাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে। চোরাচালানে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ডিআইজি অফিস থেকে তাকে একাধিকবার বদলির আদেশ দেওয়া হয়। কিন্তু অদৃশ্য শক্তিতে তিনি বারবার সেই থানায় থেকে যান। এমনকি ৫ আগস্টের পরে আসা বদলিও রাজনৈতিক ছায়ায় ঠেকিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। এই থানায় পোস্টিং নিয়ে আসা এবং থাকার জন্য তাকে কোটি টাকার ওপরে ঢালতে হয়েছে! চলতি বছরের মার্চ মাসে তাকে সিলেট ডিআইজি অফিসের ফরমানে বদলি করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি ৫০ লাখের বিনিময়ে আবার স্বপদে আসীন হতে পেরেছিলেন।

সূত্র জানায়, তাকে পোষতেন সিলেটের সাবেক পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন। তার আমলেই সিলেটে চিনি চোরাচালান স্বর্ণযুগে পৌঁছায়। তার সিন্ডিকেটের কারণে সিলেটে চিনির চোরাচালান ফুলেফেঁপে মহিরুহ হয়ে ওঠে। এসপি মামুন জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে রীতিমতো আন-অফিশিয়ালি একটি ‘সেল’ও গঠন করেছিলেন, যেখান থেকে চিনি চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ করা হতো এবং প্রশাসন, পুলিশ ও রাজনৈতিক নেতাদের পাওনা টাকা ভাগবাঁটোয়ারা করা হতো। পুলিশ সুপার কার্যালয়ে তখন এটি ছিল ওপেন সিক্রেট। ‘মুখ বন্ধের’ শর্তে এসপির পক্ষ থেকে সিলেটের শীর্ষ আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও যুবলীগের নেতাদের চিনির চালানপ্রতি ১ হাজার ৫০০ টাকা করে মাসোহারে পৌঁছে দেয়া হতো। বড় দাগে চিনি চোরাচালানের আগে সিলেট নগরীর দরগা গেটের একটি নামিদামি হোটেলে বসে পুলিশ ও সিন্ডিকেটের মধ্যে সমঝোতা হতো। সেখানে এসপি মামুন নিজে না থাকলেও থাকতেন তার প্রতিনিধি। সে সময় সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ এলাকা দেখাশোনা করতেন এডিসি সোহেল রানা। ৫ আগস্টের পরও তিনি চোরাচালান নিয়ন্ত্রণে ছিলেন।

এ নিয়ে তার একটি অডিও রেকর্ড ফাঁস হয়, যেখানে চিনি চোরাচালানের পাওনার জন্য তার অধিনস্ত এক সাব-ইন্সপেক্টরকে শাসাতে শোনা যায়। সেখানেই তিনি জানান ওপরমহল থেকে নিচের মহল আর রাজনৈতিক নেতাদের টাকার ভাগ দেওয়ার কথা। সে সময় ভাগবাঁটোয়ারায় এদিক-সেদিক হলে মামুন-রানা সিন্ডিকেট ভারতীয় চিনির চালান আটক করে সহকর্মীদের ওপর মধুর প্রতিশোধও নিতেন। বর্তমানেও কোম্পানীগঞ্জ, জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট থানা লাইন নিয়ন্ত্রণ করছে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, সিলেটে চিনি চোরাচালানে যে কয়টি নাম সবচেয়ে আলোচিত হয়, তাদের মধ্যে একজন হলেন মাসুম আহমদ, অপরজন আবুল হোসেন। আবুলকে সবাই ‘বুঙারি আবুল’ নামে চেনেন।আওয়ামী লীগের শাসনামলের শেষ দুই বছরে ‘বুঙারি’ লাইনের মালিক হয়ে দুই হাতে টাকা কামিয়েছেন। আর এই টাকা দিয়ে নামেবেনামে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন তিনি। সিলেটের চিনি চোরাকারবারের নিরাপদ জোন হরিপুরের উতলারপাড়ে গড়ে তুলেছেন অট্টালিকা। তিনিই সিলেট জেলা পুলিশের ডিবির সোর্স হয়ে সীমান্ত দিয়ে চোরাই পথে নিয়ে আসা পণ্যের লাইনের টাকা তুলতেন। তাকে নিয়ন্ত্রণ করতেন সিলেট জেলা পুলিশের ডিবি উত্তরের তৎকালীন ওসি রেফায়েত চৌধুরী। আবুল এখনো বহাল আছেন একই কাজে।

সিলেটের সীমান্তবর্তী জকিগঞ্জ উপজেলার সোনাসার দেবপুর গ্রামের মাসুম আহমদ চিনি চোরাচালান কারবার করে এরই মধ্যে হয়ে গেছেন ৫০০ কোটি টাকার মালিক।

অভিযোগ আছে, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় একজন অতিরিক্ত আইজিপি, আইন মন্ত্রণালয়ের এক সচিব, পুলিশের ডিআইজিসহ কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা তাকে শেল্টার দিতেন। তিনিই মূলত চিনি চোরাচালানের প্রধান কারবারি। তার মাধ্যমে চোরাচালান ব্যবসা করতেন আওয়ামী লীগের নেতারা। পুলিশকে বুঝিয়ে দিতেন তাদের পাওনা।

প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের পর তিনি সখ্য গড়ে তুলেছেন বিএনপি ও অন্যদের সঙ্গে।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!