সিলেটে পুলিশের নিষ্ক্রিয়তায় চুরি হওয়া স্বর্ণ দীর্ঘদিনেও উদ্ধার হচ্ছে না বলে অভিযোগ স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের। নগরীর বিভিন্ন মার্কেটে ঘটে যাওয়া স্বর্ণ চুরির ঘটনায় এখনও উল্লেখযোগ্য পরিমাণ স্বর্ণ উদ্ধার করতে পারেনি সিলেট মহানগর পুলিশ (এসএমপি)। এতে আতঙ্কে আছেন সিলেটের স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা।
বাজুসের স্টেন্ডিং কমিটি অন ডিস্ট্রিক্ট মনিটরিং সদস্য নীহার কুমার রায় বলেন, সিলেটে চুরি হওয়া স্বর্ণ দীর্ঘদিনেও উদ্ধার করা হচ্ছে না। মামলা দায়েরের পর দফায় দফায় আমরা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। পুলিশ থেকে শুধু বলা হচ্ছে- তাদের কাজ অনেক দূর এগিয়ে গেছে। চোরদের তারা শনাক্ত করে ফেলেছেন, শীঘ্রই গ্রেপ্তার করতে পারবেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত দৃশ্যত কোনো অগ্রগতি নেই।
এ বিষয়ে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি)মুখপাত্র অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন- এসব ঘটনায় আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করি স্বর্ণ উদ্ধার করতে। কিন্তু অনেক সময় চোর চক্র ধরতে পারলেও পুরাপুরি স্বর্ণ উদ্ধার করা সম্ভব হয় না।
তিনি আরও বলেন, গত ৯ জানুয়ারি ঘটনায় চোরদের শনাক্ত করা গেছে। কিন্তু তারা বার বার স্থান পরিবর্তন করায় তাদের ধরতে বেগ পেতে হচ্ছে। আশা করি, শীঘ্রই গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে। এবং চুরি হওয়া স্বর্ণ উদ্ধার করতে পারবো।
এদিকে ২০১১ সালের দিকে নগরীর স্বর্ণা জুয়েলার্সের ওয়াল কেটে দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনা ঘটে। এ সময় প্রায় ৪০০ ভরি স্বর্ণ চুরি হয়। এ ঘটনায় নগরীর কোতোয়ালি থানার পুলিশ ১৬০ ভরি স্বর্ণ উদ্ধার করতে পারলেও বাকিটা স্বর্ণ দীর্ঘ ১২ বছরেও উদ্ধার করতে পারেনি।
এদিকে গত ৯ জানুয়ারি (বৃহস্পতিবার) সকালে সিলেট মহানগরীর আল হামরা শপিং সিটির চতুর্থ তলার নুরানি জুয়েলার্স নামক দোকানের (নং-৪৩১, ৪৩৩ ও ৪৩৫) পেছনের দরজার তালা ভেঙে ২৫০ ভরি স্বর্ণ চুরি করে নিয়ে যায় ৭-৮ জনের একটি চোর চক্র। যাওয়ার সময় নতুন তালা লাগিয়ে দিয়ে যায় চোরেরা। এ ঘটানায় এখনও কোনো স্বর্ণ উদ্ধার বা চোর চক্রের কাউকে আটক করতে পারেনি সিলেট মহানগর পুলিশ।
বাজুসের সিলেট জেলা সভাপতি মো. মাহবুবুর রহমান সওদাগর বলেন, সিলেটে অসংখ্য র্স্বণ চুরির ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু কিছু স্বর্ণ উদ্ধার করা হলেও অধিকাংশ ঘটনারই পর্যাপ্ত স্বর্ণ উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। এতে আতঙ্কে আছেন সিলেটের স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের ঘুরে দাড়াতে হলে সরকারের সহযোগীতা দরকার।
এ ঘটনায় নুরানি জুয়েলার্স’র স্বত্বাধিকারী দেওয়ান মো. জাবেদ চৌধুরী মামলা দায়ের করলেও এখন পর্যন্ত কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।
এদিকে বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে স্বর্ণের দোকানে চুরির ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশ প্রশাসনকে ৭২ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স এসোসিয়েশন (বাজুস) সিলেট জেলা শাখা।
সংবাদ সম্মেলনে বাজুস সিলেট জেলা শাখার নেতৃবৃন্দ বলেন- মামলা দায়েরের পর দফায় দফায় আমরা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। যোগাযোগ রাখছি সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও। পুলিশ থেকে শুধু বলা হচ্ছে- তাদের কাজ অনেক দূর এগিয়ে গেছে। চোরদের তারা শনাক্ত করে ফেলেছেন, শীঘ্রই গ্রেপ্তার করতে পারবেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত দৃশ্যত কোনো অগ্রগতি নেই। তাই বাধ্য হয়ে আজ ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিচ্ছি আমরা। এই সময়ের মধ্যে চুরির ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করা না হলে পরবর্তীতে সিলেট চেম্বার ও সিলেটের সকল ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দদের নিয়ে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।