২০২৫ সালের এপ্রিল মাসে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ঘিরেই সবচেয়ে বেশি ভুল তথ্য প্রচারিত হয়েছে।
এমনটাই জানিয়েছে দেশের শীর্ষস্থানীয় ফ্যাক্টচেকিং সংস্থা রিউমর স্ক্যানার।
প্রতিষ্ঠানটির মাসিক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, গত মাসে শুধু ড. ইউনূসকে কেন্দ্র করেই অন্তত ২৯টি ভুল তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও অনলাইন প্ল্যাটফর্মে ছড়িয়েছে, যার ৮৩ শতাংশই ছিল নেতিবাচক।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, এপ্রিলজুড়ে সরকারকে কেন্দ্র করে মোট ১২টি ভুল তথ্য চিহ্নিত করেছে রিউমর স্ক্যানার। এসব তথ্য বিশ্লেষণ করে প্রতিষ্ঠানটি দুটি শ্রেণিতে ভাগ করেছে।
সরকারের পক্ষে গেলে তা ‘ইতিবাচক’ এবং বিপক্ষে গেলে ‘নেতিবাচক’। এর মধ্যে সরকারবিরোধী ভুল তথ্যই সংখ্যাগরিষ্ঠ, যা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহারের শঙ্কা উসকে দিয়েছে।
সরকারি উপদেষ্টাদের ঘিরেও একাধিক গুজব শনাক্ত হয়েছে। ড. আসিফ নজরুলকে নিয়ে ৩টি ভুল তথ্য, আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ২টি, সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানকে নিয়ে ২টি গুজব শনাক্ত হয়।
আ ফ ম খালিদ হোসেন, শেখ বশিরউদ্দীন ও শফিকুল আলমসহ প্রতিজনের বিরুদ্ধে একটি করে ভুয়া তথ্য রয়েছে।
এ ছাড়া এপ্রিলে রিউমর স্ক্যানার মোট ২৯৬টি ভুল তথ্য শনাক্ত করেছে, যা মার্চ মাসের ২৯৮টির তুলনায় সামান্য কম।
বিশ্লেষণে দেখা যায়, জাতীয় বিষয় ১০১টি (৩৪%), রাজনৈতিক ৯৫টি, আন্তর্জাতিক ৩৮টি, ধর্মীয় ২৭টি, বিনোদন ও সাহিত্য ৮টি, শিক্ষা ৭টি, প্রতারণা ১০টি ও খেলাধুলা নিয়ে ৯টি ভুয়া তথ্য প্রচার করা হয়।
ভুল তথ্যের মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি তথ্যকেন্দ্রিক বিভ্রান্তি ছড়ানোর সংখ্যা ১৩৮টি। এ ছাড়া ভিডিওভিত্তিক ১০৫টি ও ছবিভিত্তিক ৫৩টি গুজব শনাক্ত হয়েছে।
ফ্যাক্টচেক অনুযায়ী, মিথ্যা তথ্য ১৮০টি, বিভ্রান্তিকর ৬৬টি, বিকৃত তথ্য ৪৮টি ও হাস্যরসাত্মক দাবি (কিন্তু বাস্তব বলে প্রচার) ২টি।
প্রকাশ মাধ্যমের দিক থেকে দেখা গেছে, এপ্রিলে সবচেয়ে বেশি ভুল তথ্য ছড়িয়েছে ফেসবুক পেজ (২৭৬টি)।
অন্যান্য প্ল্যাটফর্মে ছড়ানো তথ্যের পরিমাণ: ইউটিউব ৫৪টি, ইনস্টাগ্রাম ৪৮টি, এক্স (টুইটার) ৪৪টি, টিকটক ২৪টি, থ্রেডস ১৩টি।
এমনকি কিছু প্রচলিত গণমাধ্যমও ভুল তথ্য ছড়ানোর তালিকা থেকে বাদ যায়নি। প্রতিবেদনে ১৪টি ঘটনায় মূলধারার সংবাদমাধ্যমের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে।
রিউমর স্ক্যানারের মতে, ভারতীয় গণমাধ্যম ও সেখান থেকে পরিচালিত সোশ্যাল অ্যাকাউন্টগুলোর মাধ্যমেও বাংলাদেশকে কেন্দ্র করে ভুয়া তথ্য ছড়ানোর প্রবণতা বাড়ছে।
এ প্রবণতা ভবিষ্যতের রাজনৈতিক, সামাজিক এবং কূটনৈতিক পরিবেশে প্রভাব ফেলতে পারে বলেও সতর্ক করেছে প্রতিষ্ঠানটি।