তিন ধর্মের অনুসারীদের কাছে পবিত্র স্থান জেরুজালেমের আল-আকসার প্রাঙ্গণ পরিদর্শন করেছেন ‘ইসরায়েল’-এর উগ্র-ডানপন্থি জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন-গভির।
রোববার (৩ আগস্ট) মসজিদ প্রাঙ্গণে প্রার্থনাও করেছেন বলে জানিয়েছে রয়টার্স। মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে সংবেদনশীল স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম আল-আকসা।
মুসলিম কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দীর্ঘদিনের একটি সূক্ষ্ম ‘স্থিতাবস্থা’ চুক্তির আওতায় আল-আকসা প্রাঙ্গণটি জর্ডানের একটি ধর্মীয় সংস্থা ‘ওয়াকফ’ পরিচালনা করে। নিয়ম অনুযায়ী, ইহুদিরা সেখানে প্রবেশ করতে পারেন, তবে প্রার্থনা করতে পারেন না।
ইহুদি সংগঠন ‘টেম্পল মাউন্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন-গভির একটি দল নিয়ে প্রাঙ্গণে হাঁটছেন। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া আরও কিছু ভিডিওতে তাকে প্রার্থনা করতে দেখা যায়। যদিও রয়টার্স তাৎক্ষণিকভাবে সেসব ভিডিওর সত্যতা যাচাই করতে পারেনি।
আজ রোববার ‘তিশা বাভ’ উপলক্ষে এই প্রাঙ্গণ পরিদর্শন করা হয়, যা ইহুদি ধর্ম অনুযায়ী ঐতিহাসিকভাবে এই স্থানেই গড়ে ওঠা দুটি মন্দির ধ্বংসের স্মরণে পালন করা এক শোকাবহ উপবাস দিবস।
ওয়াকফ কর্তৃপক্ষ জানায়, বেন-গভির প্রায় এক হাজার ২৫০ জন ইহুদি নিয়ে মসজিদ প্রাঙ্গণে প্রবেশ করেন। তাদের অনেকেই সেখানে চিৎকার, প্রার্থনা ও নৃত্যে অংশ নেন। এসব কার্যকলাপ বিদ্যমান ‘স্থিতাবস্থা’ চুক্তির সম্পূর্ণ পরিপন্থী।
বেন-গভির এক বিবৃতিতে বলেন, তিনি গাজা যুদ্ধে হামাসের বিরুদ্ধে ‘ইসরায়েল’-এর বিজয় এবং হামাসের হাতে বন্দি থাকা ‘ইসরায়েলি’ নাগরিকদের মুক্তির জন্য প্রার্থনা করেছেন। একইসঙ্গে তিনি ‘সম্পূর্ণ এলাকা জয় করার’ আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন।
এর আগেও তিনি সেখানে ইহুদিদের প্রার্থনার অধিকার দাবি করেছিলেন। ফলে ‘ইসরায়েল’-এর প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দিতে হয়েছিল যে, ‘ইসরায়েল’-এর নীতিতে কোনো পরিবর্তন হয়নি।
ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের মুখপাত্র নাবিল আবু রুদাইনাহ বেন-গভিরের সফরকে ‘সমস্ত লাল রেখা অতিক্রম’ করেছে বলে উল্লেখ করে তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের উচিত আল-আকসা মসজিদে বসতি স্থাপনকারীদের কার্যকলাপ এবং চরমপন্থি সরকারের উসকানি বন্ধে হস্তক্ষেপ করা।’
‘ইসরায়েলি’ মন্ত্রীর চুক্তি ভঙ্গের এই ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো সহিংসতার খবর পাওয়া যায়নি। তবে অতীতে আল-আকসায় উত্তেজনা বহুবার সহিংস সংঘাতের সূত্রপাত করেছে।