বরিশালের মুলাদীতে বিয়ের স্বীকৃতির দাবিতে কাবিননামা নিয়ে স্বামীর বাড়িতে অবস্থান নিয়েছেন গোপালগঞ্জের তরুণী সাবিনা খানম (২৪)। তিনি রোববার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার সফিপুর ইউনিয়নের বালিয়াতলী গ্রামের জয়নুল আবেদীনের ছেলে নেয়ামতউল্লাহর বাড়িতে অবস্থান নেন।
তরুণীর অবস্থানের সংবাদ পেয়ে নেয়ামতউল্লাহ আত্মগোপনে রয়েছেন বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা।
সাবিনা খানম গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী গ্রামের মো. ফারুক মোল্লার মেয়ে। নেয়ামতউল্লাহর সঙ্গে ২০২২ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর বিয়ে হয়েছে বলে জানান তিনি। ৩ দিন আগে নেয়ামতউল্লাহ বিবাহ বিচ্ছেদের কথা জানিয়ে সাবিনার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দিলে রোববার নেয়ামতের বাড়িতে অবস্থান নেন।
ওই সময় নেয়ামতউল্লাহর মা ও ভাই তরুণীকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। সংবাদ পেয়ে সফিপুর ফাঁড়ি পুলিশের উপপরিদর্শক মো. মামুন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
সাবিনা খানম জানান, তিনি ঢাকার ভাটারা থানা এলাকায় বসবাস করেন এবং একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন। ২০২১ সালে নেয়ামতউল্লাহর সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরে তিনি নেয়ামতউল্লাহকে পড়ালেখার খরচ দেন। ২০২২ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর ভাটারা থানার কাজী অফিসে গিয়ে ১০ লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়ে করেন তারা। কিন্তু নেয়ামতউল্লাহ কৌশলে বিবাহ নিবন্ধনে (কাবিনে) ১০ হাজার টাকা লিপিবদ্ধ করান।
সাবিনা আরও জানান, বিয়ের পর গত ১৫ মে পর্যন্ত একসঙ্গে বসবাস করেন তারা। গত ৩ ফেব্রুয়ারি নেয়ামতউল্লাহর বড়ভাই শরীয়তউল্লাহ ঢাকা গেল তাদের পরিবার বিয়ের বিষয়টি জানতে পারে। ফেব্রুয়ারিতেই শরীয়তউল্লাহ তার ছোটভাই নেয়ামতউল্লাহকে দিয়ে সাবিনাকে তালাক দেওয়ানোর চেষ্টা করেন। ওই সময়ে তালাক দিতে না পেরে গত ১৫ মে বিবাহ বিচ্ছেদের কথা বলে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন নেয়ামত।
নেয়ামতের জাতীয় পরিচয়পত্র এবং কাবিনে থাকা ঠিকানায় খোঁজ করে রোববার তার বাড়িতে বিয়ে স্বীকৃতির দাবিতে অবস্থান নেন। ওই সময়ে নেয়ামতউল্লাহ বাড়ি ছেড়ে আত্মগোপনে চলে যান। পরে নেয়ামতের মা জরিতুন্নেছা ও ছোটভাই রফিকুল ইসলাম তাকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করার চেষ্টা করেন।
এ ব্যাপারে জরিতুন্নেছা বলেন, ‘আমার ছেলে নেয়ামতের সঙ্গে ওই মেয়ের (সাবিনার) বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু নেয়ামত তাকে তালাক দেওয়ায় তাদের মধ্যে কোনো সম্পর্ক নেই। মেয়েটি আমাদের ফাঁসাতে বাড়িতে অবস্থান নিয়েছে।’
পুলিশের এসআই মো. মামুন বলেন, ‘মেয়েটি কাবিননামা নিয়ে নেয়ামতের বাড়িতে অবস্থান নিয়েছেন। তরুণীকে থানায় অভিযোগ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’
মুলাদী থানার ওসি মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘তরুণীর সঙ্গে বিয়ে, কাবিনে প্রতারণা, বিচ্ছেদসহ সব ঘটনা ঢাকার ভাটারা থানা এলাকায় হওয়ায় তাকে ওই থানায় মামলা করতে হবে।’