ঢাকা বুধবার, ২২ অক্টোবর, ২০২৫

রংপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১৬ নেতার পদত্যাগ

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: মে ১৯, ২০২৫, ০২:৪৯ এএম
রংপুর মহানগর ও জেলা কমিটির ১৬ নেতা পদত্যাগ করেছেন । ছবি- সংগৃহীত

রংপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, জমি দখল, নিয়োগবাণিজ্যসহ বিভিন্ন অভিযোগ এনে জেলা ও মহানগর কমিটির ১৬ নেতাকর্মী পদত্যাগ করেছেন।

রোববার (১৮ মে) রাতে রংপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমি চত্বরে সংবাদ সম্মেলন ডেকে এ ঘোষণা দেন তারা। একই সঙ্গে তাদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে আরও প্রায় অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী পদত্যাগ করবেন বলে জানিয়েছেন। তবে অভিযুক্তরা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, সোমবার (১৯ মে) তারা বিস্তারিত জানাবেন। 

পদত্যাগকারীরা হলেন- মহানগর কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব সিয়াম আহসান আয়ান, সংগঠক আদনান সামির, মাহদী হাসান অনিক, রাতুল, এনায়েত রাব্বি, সদস্য আরাফাত সানি আপন, আল শামস সিয়াম, আল আমিন, সীমান্ত হোসেন, মোজাহিদ, আল তানজীল আহসান, জেলা কমিটির সদস্য মুবতাসিম ফুয়াদ সাদিদ, জুনাইদ ইসলাম সাদিদ, সৃজন সাহ, মাহতাব হোসেন আবির ও সাওম মাহমুদ সিরাজ।

পদত্যাগপত্রে তারা লিখেন, রংপুর জেলা কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবসহ কিছু নেতার বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ। এসবের সাক্ষ্যপ্রমাণ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মূল চেতনা ও আদর্শের সম্পূর্ণ পরিপন্থি।

এই গুটিকয়েক নেতার অপকর্মের দায় তারা নিতে পারবেন না। যারা নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে গেছেন তাদের ওপরও এই অপকর্মেও দায় বর্তায় যা অত্যন্ত লজ্জাজনক ও অপমানজনক। তাই এসবের প্রতিবাদে তারা পদত্যাগ করলেন। 

এ সময় মহানগর কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব সিয়াম আয়ান হাসান অভিযোগ করেন, ‘পুরো বাংলাদেশের মানুষ আমাদের ওপর আস্থা রেখেছিল কিন্তু আমরা সেই বিশ্বাস রাখতে পারিনি। মহানগর ও জেলা কমিটির নেতারা টেন্ডার বাণিজ্য, জমির দালালি, মামলা বাণিজ্য ও মেলায় জুয়ার আসর থেকে চাঁদা আদায়, রংপুর সিটি করপোরেশনে ৩০ জনের নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানা অপকর্ম করছে।’

তিনি বলেন, ‘জেলা মহানগর কমিটির শীর্ষ কয়েকজন নেতা আন্দোলনের শেষপর্যায়ে এসে আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন। পদত্যাগকারী জেলা কমিটির সদস্য মাহতাব হোসেন আবির বলেন, দুই মাস আগে নগরীর ঘাঘট এলাকায় অনুষ্ঠিত বাণিজ্য মেলায় জুয়ার আসর বসানো হয়। সেখান থেকে জেলা ও মহানগর কমিটি নেতারা ১৪ লাখ টাকা চাঁদা নেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘রংপুর সিটি করপোরেশনে ৩০ জনকে নিয়োগ দিয়ে লাখ লাখ টাকার নিয়োগ বাণিজ্য করেছেন। এর আগে গত বছর বন্যার সময় বন্যার্তদের জন্য তোলা ত্রাণের ৮৭ হাজার টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ তোলেন তিনি।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা কমিটির আহ্বায়ক ইমরান আহমেদ বলেন, ‘আমরা ষড়যন্ত্রের শিকার। সোমবার সংবাদ সম্মেলন করে পুরো বিষয়টি স্পষ্ট করা হবে।’

মহানগর কমিটির আহ্বায়ক ইমতিয়াজ আহমেদ ইমতি বলেন, ‘কোনো ধরনের অপকর্মের সঙ্গে আমি জড়িত নই। তারা যদি এ ধরনের কোনো অভিযোগ করে তাহলে প্রমাণ হাজির করুক। অবশ্যই কারো না কারো স্বার্থে আঘাত লেগেছে এজন্য এমনটা হতে পারে। এটা নিয়ে সবার সঙ্গে বসে আলোচনা করে লিখিত বক্তব্য জানানো হবে।’

এর আগে গত ১৫ মে নেতাদের দুর্নীতির অভিযোগে পদত্যাগ করেন জেলা কমিটির আরেক সদস্য মাহমুদুর রহমান লিওন।