বৃষ্টি উপেক্ষা করে বাগেরহাটের সর্বস্তরের মানুষ চারটি সংসদীয় আসনকে তিনটি আসনে রূপান্তরের প্রস্তাবের প্রতিবাদে অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছেন।
বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত কাটাখালি ও নওপাড়া এলাকায় এই কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।
অবরোধ চলাকালে মংলা-খুলনা মহাসড়ক, খুলনা-ঢাকা মহাসড়ক এবং খুলনা-বাগেরহাট মহাসড়কে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে দূরপাল্লার যাত্রীবাহী বাস, ট্রাক ও পণ্যবাহী গাড়ির পাশাপাশি স্থানীয় পরিবহনও স্থবির হয়ে পড়ে। কয়েকশ যানবাহন বিভিন্ন স্থানে আটকে যায়। ফলে যাত্রী ও পথচারীরা চরম ভোগান্তির শিকার হন। বিশেষ করে অফিসগামী মানুষ, শিক্ষার্থী ও রোগী পরিবহনে ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে।
অবরোধ কর্মসূচিতে রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি মুক্তিযোদ্ধা, ব্যবসায়ী, শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ অংশ নেন। কর্মসূচিস্থলে তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক এটিএম আকরাম হোসেন তালিম, জেলা বিএনপির সমন্বয়ক এম এ সালাম, জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা রেজাউল করিম, নায়েবে আমির আব্দুল ওয়াদুদ, জেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক খাদেম নিয়ামুন নাছির আলাপসহ আরও অনেকে।
বক্তারা বলেন, বাগেরহাট একটি জনবহুল ও কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ জেলা। এখানে চারটি সংসদীয় আসন বিদ্যমান থাকলেও নির্বাচন কমিশন তা কমিয়ে তিনটি করার প্রস্তাব দিয়েছে।
তারা অভিযোগ করেন, আসন কমানো হলে জেলার মানুষের সাংবিধানিক অধিকার ক্ষুণ্ণ হবে এবং জাতীয় সংসদে বাগেরহাটবাসীর স্বার্থ যথাযথভাবে প্রতিফলিত হবে না।
তাদের মতে, বাগেরহাট জেলার ভৌগোলিক অবস্থান, জনসংখ্যার ঘনত্ব, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড, সুন্দরবন এবং মংলা বন্দরকেন্দ্রিক জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রমের কারণে আসন কমানোর প্রস্তাব কোনোভাবেই যৌক্তিক নয়। বক্তারা অবিলম্বে নির্বাচন কমিশনের এ প্রস্তাব প্রত্যাহার করে জেলার বিদ্যমান চারটি আসন বহাল রাখার দাবি জানান।
অবরোধ কর্মসূচির কারণে প্রায় চার ঘণ্টা মহাসড়কগুলোতে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে পুরো এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে তীব্র যানজট ও ভোগান্তি। তবে দুপুরের পর অবরোধ প্রত্যাহার করলে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হবে।
স্থানীয়রা জানান, এ ধরনের অবরোধ কর্মসূচি চলতে থাকলে শুধু সাধারণ মানুষই নয়, জেলার অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
অন্যদিকে আন্দোলনকারীরা জানান, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা আরও কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দিতে বাধ্য হবেন।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন