যশোরের ঝিকরগাছা থানার দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ লাইনে ক্লোজড করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) দিবাগত রাতে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
অভিযুক্তরা হলেন থানার এসআই রাজু ও এএসআই ওয়ালিদ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঝিকরগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর মোহাম্মদ গাজী।
ওসি নূর মোহাম্মদ গাজী জানান, যশোর বেনাপোল সড়কের নাভারণ পুরাতন বাজারে ইলেকট্রনিক্স ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলামের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে ৫৩টি ভারতীয় চোরাই মোবাইল ফোন ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। ১৫ আগস্ট শার্শা ও ঝিকরগাছা থানার পুলিশ সাইফুলের দোকানে অভিযান চালিয়ে মোবাইল ফোনগুলো উদ্ধার করে।
স্থানীয় নেতা লেন্টু হাজীর মধ্যস্থতায় অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তারা মোটা অঙ্কের টাকা এবং দুইটি মোবাইল ফোন নিয়ে সাইফুলকে ছেড়ে দেয় এবং উদ্ধারকৃত মোবাইল ফোনও ফেরত দেয়। এই ঘটনায় স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মধ্যে যথেষ্ট আশঙ্কা ও ক্ষোভ দেখা দেয়।
ঘটনার পর যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ‘ক’ সার্কেলের নেতৃত্বে ডিবি পুলিশ পুনরায় নাভারণের সাইফুল ইসলামের দোকানে অভিযান চালায়। এ সময় সাইফুলকে আটক করা হয় এবং বাড়ি থেকে ৪৪টি ভারতীয় চোরাই মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। আদালতে জবানবন্দি দিয়ে সাইফুল চোরাই ফোন বিক্রির কথা স্বীকার করে।
ডিবি পুলিশের এই অভিযান স্থানীয়দের মধ্যে স্বস্তি সৃষ্টি করে এবং পুলিশের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা দেখায়। তবে অভিযুক্ত দুই পুলিশ কর্মকর্তার অনৈতিক কার্যক্রমে জনমতের ক্ষতি হয়েছে।
এসআই রাজু মুঠোফোনে বলেন, ‘আমি ঢাকায় অফিসিয়াল কাজে আছি। তবে শুনেছি আমাদের দুজনকে পুলিশ লাইনে ক্লোজড করা হয়েছে।’
যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) আবুল বাসার জানান, তাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ ইতিমধ্যেই দেওয়া হয়েছে।
ওসি নূর মোহাম্মদ গাজী বলেন, ‘বিট কর্মকর্তা হিসেবে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ ও স্থানীয়দের বক্তব্যে ঘটনার সত্যতা পেয়ে ওই দুই কর্মকর্তাকে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। এ পদক্ষেপের মাধ্যমে পুলিশ প্রশাসন স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে চায়।’
যশোরের এই ঘটনার মাধ্যমে পুলিশ প্রশাসনের প্রতি জনমত এবং স্থানীয় ব্যবসায়ীদের আস্থা নতুনভাবে প্রভাবিত হয়েছে। অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগে শীর্ষ পর্যায়ের ব্যবস্থা নেওয়া হলে ভবিষ্যতে এমন অনৈতিক কর্মকাণ্ড কমানো সম্ভব হবে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
স্থানীয়রা বলছেন, “জনশ্রুতি অনুযায়ী, অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় অনৈতিক সুবিধা নিচ্ছিলেন। এই ঘটনায় সরকার ও পুলিশ প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ নিলে জনগণের মধ্যে স্বস্তি তৈরি হবে।”
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন