গত ৩০ আগস্ট রাত সোয়া ৯টার দিকে যশোরের মণিরামপুর উপজেলার চালুয়াহাটি ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম (৪২) বসে ছিলেন রাজগঞ্জ বাজারের এক চায়ের দোকানে। এ সময় দুর্বৃত্তরা হামলা চালিয়ে প্রকাশ্যে তাকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাতে খুন করে। এর আগে ২৯ আগস্ট বেনাপোল পোর্ট থানার ছোটআঁচড়া গ্রামে নিজ বাড়ির সামনে গলা কেটে হত্যা করা হয় বিএনপি কর্মী মিজানুর রহমান সর্দারকে (৪৩)।
পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি। গত ৫ মাসে আশরাফুল ও মিজানুর রহমানের মতো যশোর জেলায় অন্তত ৩৫ জন খুন হয়েছে। এ ছাড়া ২২ নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছে।
জানা গেছে, যশোর জেলায় পাঁচ মাসে ৩৫ হত্যা মামলা হয়েছে। এরমধ্যেে আগস্ট মাসে ৭টি, জুলাই মাসে ৬টি, জুন মাসে ৮টি, মে মাসে ৭টি ও এপ্রিল মাসে ৬টি হত্যা মামলা রেকর্ড হয়। এই ৫ মাসে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ২২টি।
১২ আগস্ট মধ্যরাতে যশোর সদরের দৌলতদিহি গ্রামের আওয়ামী লীগের কর্মী সন্ত্রাসী রেজাউল ইসলামকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে রাস্তায় নৃশংস্যভাবে খুন করে দুর্বৃত্তরা। পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। এ ছাড়া আজ অবধি খুনের ক্লু ও খুনিদের শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ।
২৮ আগস্ট মণিরামপুর উপজেলা শহরের পাইলট হাই স্কুলের সামনে দুর্বৃত্তদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত মিন্টু হোসেন (৩৫) মারা যান। নিহতের আরও দুই ভাই সেন্টু হোসেন (৩২) ও পিকুল হোসেন (৩০) গুরুতর আহত হয়ে শয্যাশায়ী রয়েছেন।
এদিকে, চৌগাছা উপজেলার সুখপুকুরিয়া গ্রামের সংখ্যালঘু পরিবারের এক বাকপ্রতিবন্ধী নারীকে ডেকে নিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে ১৩ আগস্ট দুজনের নামে মামলা হয়। ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে ভুক্তভোগীরা। কিন্তু ঘটনার ১২ দিন পর থানায় মামলা করেন ভিকটিম। আসামিদের আটকের চেষ্টা চলছে বলে জানান চৌগাছা থানার ওসি আনোয়ার হোসেন।
সূত্র জানায়, গত ৫ মাস ধরে যশোরে আইনশৃংখলা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। খুন-ধর্ষণের সাথে বেড়েছে চাঁদাবাজি, অপহরণ, ছিনতাইয়ের ঘটনা। আইনশৃংখলা পরিস্থিতি উন্নতির জন্য পুলিশকে কঠোর হতে হবে বলে সাধারণ মানুষের অভিমত।
যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) আবুল বাশার জানান, অধিকাংশ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। ধর্ষণ ও অন্যান্য অপরাধ দমনে পুলিশ কঠোর অবস্থানে রয়েছে। প্রতিটি অপরাধের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন