সাধারণত চিড়িয়াখানা বা বনে দেখা যায় হনুমান। কিন্তু হঠাৎ করে বিরল প্রজাতির একটি বন্য হনুমান লোকালয়ে এসে পড়েছে। হনুমানটিকে দেখে অনেকেই কলা-পাউরুটি এগিয়ে দিলে সে নিজে হাতে নিয়ে খাচ্ছে এবং আনন্দ করছে। উৎসুক জনতাও ভিড় জমিয়ে দেখছেন হনুমানের নানা কাণ্ড।
শুক্রবার দুপুর থেকে রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলা সদরে অবস্থিত গ্রামীণ ব্যাংকের প্রাচীরের উপরে ঘুরতে দেখা যায় বিরল প্রজাতির এই হনুমানটিকে। হনুমানটির ছুটাছুটি ও লাফালাফি পথচারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। মুহূর্তের মধ্যেই স্থানীয়রা ভিড় জমান হনুমানটিকে এক নজর দেখতে।

কৌতুহলী কয়েকজন হাতে থাকা স্মার্টফোনে হনুমানটির ছবি ও ভিডিও ধারণ করতে থাকেন। মজা পেয়ে কেউ কেউ হাসি-ঠাট্টায় মেতে ওঠেন। তবে প্রাচীরের উপরে হনুমানটির লাফালাফি দেখে আশপাশের বাসিন্দাদের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্কও দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে শিশুসহ নারী-পুরুষদের মধ্যে ভীতির সঞ্চার হয়। বন্য হনুমানটি আক্রমণাত্মক হয়ে উঠতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেন অনেকে।
বন বিভাগের ভাষ্যমতে, হনুমানটি ল্যাঙ্গুর প্রজাতির। ইংরেজিতে একে বলা হয় গ্রে ল্যাঙ্গুর। এই প্রজাতির হনুমান বাদরজাতীয় প্রাইমেট হলেও সাধারণ বানরের চেয়ে আলাদা। শরীর লম্বাটে, হাত-পা লম্বা এবং মুখ কালো ও ধূসর-সাদা রঙের হয়। বনাঞ্চল বা গ্রামাঞ্চলে প্রায় দেখা যায় এই প্রজাতির হনুমান। দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ করে গ্রামীণ অঞ্চলে এরা খাদ্য বা নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে মানুষের বসতিতে চলে আসে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী আব্দুল হান্নান বলেন, ‘এলাকায় এমন প্রজাতির হনুমান আগে দেখা যায়নি। হঠাৎ প্রাচীরের উপরে তার ছুটাছুটি দেখে পথচারী ও সাধারণ মানুষ ভিড় জমান। তবে বন্য হনুমানটি কামড় বা আঁচড় দিতে পারে, এ নিয়ে শঙ্কা রয়েছে।’
-20250919150004.jpg)
দুর্গাপুর পৌরসভার একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, ‘বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে। প্রয়োজনে প্রাণীসম্পদ বিভাগ বা বন বিভাগকে জানিয়েই হনুমানটিকে উদ্ধার করে নিরাপদ আশ্রয়স্থলে সরিয়ে নেয়ার উদ্যোগ নেওয়া হবে।’
স্থানীয়রা দাবি করেছেন, দ্রুত হনুমানটিকে উদ্ধারের ব্যবস্থা না হলে বানরের কামড় বা আঁচড়ে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটতে পারে।
উপজেলার বন কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্বে) মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘এ ধরনের বিরল ল্যাঙ্গুর হনুমান খাবারের সন্ধানে অনেক সময় লোকালয়ে ঢুকে পড়ে। সাধারণত কলা বা খাদ্যপণ্যবাহী গাড়ির সঙ্গে লোকালয়ে আসে। কেউ বিরক্ত না করলে হনুমানটি আবার তার স্বাভাবিক স্থানে ফিরে যাবে। মানুষজন যদি বিরক্ত না করে, তাহলে কোনো ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা নেই।’
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন