রংপুরে অ্যানথ্রাক্স সংক্রমণ প্রতিরোধে ছাড়পত্র ছাড়া গবাদিপশু জবাইয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে গঙ্গাচড়া উপজেলা প্রশাসন।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদ হাসান মৃধা। এর আগে মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) বিকেলে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।
ইউএনও মাহমুদ হাসান মৃধা জানান, সম্প্রতি রংপুর জেলার বিভিন্ন স্থানে গবাদিপশুর মধ্যে অ্যানথ্রাক্সের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এটি পশু থেকে মানুষের শরীরে সংক্রমিত হতে পারে- এমন আশঙ্কায় সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে মাংস ব্যবসায়ীদের জন্য নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর বা ভেটেরিনারি হাসপাতালের ছাড়পত্র ব্যতীত কোনো পশু জবাই করা যাবে না।
তিনি আরও বলেন, যদি কোনো ব্যবসায়ী ছাড়পত্র ছাড়া পশু জবাই করেন, প্রমাণ মিললে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে রংপুর নগরীর মেডিকেল পূর্বগেট, ধাপ, লালকুঠি মোড়, সিটি বাজার ও বাস টার্মিনালসহ বিভিন্ন স্থানের গরুর মাংসের দোকানে এখন টানানো হচ্ছে পরীক্ষার রিপোর্ট। টেস্ট রিপোর্ট না থাকলে অনেক ক্রেতাই মাংস কিনছেন না। প্রাণিসম্পদ দপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, যে গরু জবাই করা হবে সেগুলো আগের রাতেই প্রাথমিকভাবে পরীক্ষা করা হয় এবং পরদিন ছাড়পত্র নিয়ে জবাই করা হয়।
স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে, রংপুর জেলার পীরগাছা, কাউনিয়া ও মিঠাপুকুর উপজেলায় অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ নিয়ে ৫৩ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্তদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, রংপুরে যে অ্যানথ্রাক্স ছড়িয়েছে তা ‘কিউটেনিয়াস অ্যানথ্রাক্স’, যা মূলত ত্বকে সংক্রমণ ঘটায়। এটি মানুষ থেকে মানুষে ছড়ায় না, ফলে অতিমাত্রায় সংক্রামক না হলেও সতর্ক থাকা জরুরি।
রংপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আবু ছাইদ বলেন, অ্যানথ্রাক্স প্রতিরোধে জেলার পীরগাছা, কাউনিয়া, মিঠাপুকুর ও রংপুর সদরে গবাদিপশুকে টিকা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া, অসুস্থ পশু যেন জবাই না হয়, সে লক্ষ্যে প্রতিটি পশু আগে পরীক্ষা করে তবেই ছাড়পত্র দেওয়া হচ্ছে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন