রবিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


কাপাসিয়া (গাজীপুর) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৫, ২০২৫, ০৭:২২ পিএম

চারজন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়ে যতটুকু সম্ভব, লড়াই করে যাচ্ছি: উপদেষ্টা রিজওয়ানা

কাপাসিয়া (গাজীপুর) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৫, ২০২৫, ০৭:২২ পিএম

ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

‘নদী বাঁচাও, জীবন বাঁচাও’—এই স্লোগানকে বুকে ধারণ করে নদী ও পরিবেশকর্মীদের এক ব্যতিক্রমী মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার (২৫ অক্টোবর) দিনব্যাপী এই আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান। এ সময় তিনি জানান, ঢাকার চারপাশের নদীগুলোকে দূষণ ও দখলমুক্ত করে বাঁচাতে বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় একটি সমন্বিত প্রকল্প চূড়ান্ত করা হয়েছে, যা আসছে ডিসেম্বর মাসেই পাস হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

শনিবার ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গেই নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের কাঞ্চন ঘাট থেকে নদীপথে এই যাত্রা শুরু হয়। দিনভর আয়োজনে নদীর গল্প, আড্ডা, মতবিনিময় ও নদীর গানে মুখর ছিলেন অংশগ্রহণকারীরা।

নদী নিয়ে মুক্তচিন্তা, ছবি আঁকা ও পরিবেশ বার্তা বিনিময়ের মধ্য দিয়ে নদীপ্রেমীরা গাজীপুরের কাপাসিয়ার ধাঁধার চরে পৌঁছান। সেখানেই নদীর তীরে মূল আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘ঢাকা শহরের চারটি নদী নিয়ে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে কথা বলে যে প্রকল্পটি আমরা চূড়ান্ত করেছি, আশা করি ইনশা আল্লাহ ডিসেম্বরে তা পাস হয়ে যাবে।’

তিনি প্রকল্পের বিস্তারিত তুলে ধরে বলেন, ‘এই প্রকল্পে পরিবেশের জন্য আলাদা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। জনবান্ধব ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। দূষণ নজরদারি বাড়ানোর জন্য আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবস্থাও করা হয়েছে।’

উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘কেবল শিল্প দূষণ বন্ধ করলে হবে না। আমরা এখনো একটি সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে পারিনি। কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, শিল্প দূষণ নিয়ন্ত্রণ—সবকিছু একসঙ্গে কাজ করলেই আমরা পরিবেশটাকে বাঁচাতে পারব। বিশ্বব্যাংকের এই প্রকল্পটি সেভাবেই একটি পূর্ণাঙ্গ কাঠামো নিয়ে গড়ে তোলা হচ্ছে।’

দূষণ নিয়ন্ত্রণে সরকারের বহুমুখী কৌশলের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আপনি একজন একজন করে নদী দূষণকারীকে ধরে ব্যবস্থা নেবেন, নাকি তাদের কেন্দ্রীয় ইটিপির আওতায় আনবেন, নাকি কয়েকজনকে বন্ধ করে দেবেন—সবগুলো বিকল্প নিয়েই আপনাকে কাজ করতে হবে। আমাদের দায়িত্ব হলো সেই ব্যবস্থাপনার অংশ হওয়া। যেমন—নির্দিষ্ট স্থানে ময়লা ফেলা, বর্জ্য পৃথকীকরণে সহায়তা করা এবং দূষণকারী কর্মকাণ্ড দেখলে সোচ্চার হওয়া।’

পরিশেষে তিনি বলেন, ‘চারজন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়ে যতটুকু সম্ভব, লড়াই করে যাচ্ছি। কিন্তু চারজন ম্যাজিস্ট্রেট বা কয়েকটি প্রকল্প দিয়ে বিশাল এই পরিবেশগত সংকটের সমাধান সম্ভব নয়। সরকারের উদ্যোগের সফলতা তখনই আসবে, যখন দেশের প্রতিটি নাগরিক পরিবেশ সুরক্ষাকে আইনি বাধ্যবাধকতার চেয়েও বড় “নৈতিক দায়িত্ব” হিসেবে গ্রহণ করবে।’

কাপাসিয়ার ধাঁধার চরে সমবেত নদীপ্রেমীদের ‘নদী বাঁচাও, জীবন বাঁচাও’ স্লোগানটি তখনই সার্থক হবে, যখন তা প্রতিটি নাগরিকের দৈনন্দিন জীবনের অংশ হয়ে উঠবে।

দিনব্যাপী এই মিলনমেলায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সুইডেন দূতাবাসের জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ বিভাগের প্রধান, ফার্স্ট সেক্রেটারি নায়োকা মার্টিনেজ বেক্সস্ট্রম; পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক সোলায়মান হায়দার; পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোবাস্সির হোসেন; বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) পরিচালক একেএম আরিফ উদ্দিন; বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির এবং বাংলাদেশ রিভার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মনির হোসেন।

এ ছাড়া কাপাসিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ডা. তামান্না তাসনীমসহ স্থানীয় প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। আয়োজনে গান, কবিতা ও মুক্ত আলোচনার মধ্য দিয়ে নদী রক্ষার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন অংশগ্রহণকারীরা।

Link copied!