শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রাজশাহী ব্যুরো

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৪, ২০২৫, ০৭:২৪ পিএম

হত্যার আগে শ্বাসরোধও করা হয়েছিল তাওসিফকে 

রাজশাহী ব্যুরো

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৪, ২০২৫, ০৭:২৪ পিএম

ছবি- সংগৃহীত

ছবি- সংগৃহীত

বাসায় ঢুকে রাজশাহীতে বিচারকের ছেলে তাওসিফ হত্যায় শুধু অস্ত্রই নয়, শ্বাসরোধের পদ্ধতিও ব্যবহার করা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ। কারণ তার গলায় কালো দাগ ছিল।

শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) পুলিশের সুরতহাল প্রতিবেদনে তাওসিফের গলার কালশিরা ছিল বলে উল্লেখ করা হয়। এ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে ডা. কফিল জানান, নরম কাপড় দিয়ে শ্বাসরোধের চেষ্টা করা হয়েছিল বলে দাগটি হতে পারে। অর্থাৎ, তাওসিফকে হত্যা করতে হামলাকারী শুধু ধারালো অস্ত্রই নয়, শ্বাসরোধের পদ্ধতিও ব্যবহার করেছিল। যদিও শ্বাসরোধ মৃত্যুর প্রধান কারণ নয়, তবু দুটো কাজ একই সময়ে হয়েছে বলেই তার ধারণা।

ময়নাতদন্ত শেষে ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক কফিল উদ্দিন আরও জানান, তাওসিফের মৃত্যুর মূল কারণ অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ। তার ডান ঊরু, ডান পা এবং বাঁ বাহুতে ধারালো ও চোখা অস্ত্রের আঘাতে গুরুত্বপূর্ণ রক্তনালি কেটে যায়। শুধু বাহ্যিকই নয়, শরীরের ভেতরেও হয়েছিল রক্তক্ষরণ। এত অল্প সময়েই তার জীবন শেষ হয়ে যায়।

ছেলেকে হারিয়ে পরিবার তছনছ

রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আব্দুর রহমানের ১৬ বছরের ছেলে তাওসিফ রহমান সুমনের স্বাভাবিক এক বিকেল মুহূর্তেই পরিণত হয়েছিল এক নির্মম দুঃস্বপ্নে। মাত্র নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী তাওসিফ-স্বপ্ন, ভবিষ্যৎ আর হাসিখুশি জীবনে ভরা এক কিশোর। কিন্তু বৃহস্পতিবার বিকেলের সেই ভয়াবহ হামলায় সবকিছু তছনছ হয়ে যায়।

শুক্রবার রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের মর্গে শুরু হয় তাওসিফের ময়নাতদন্ত। সকাল পৌনে ১০টার দিকে শুরু হওয়া এই প্রক্রিয়া চলে প্রায় আধঘণ্টা। বাইরে উদ্বেগে অপেক্ষায় ছিলেন বাবা-বিচারক আব্দুর রহমান। সন্তানের মৃত্যুর কারণ কী, কীভাবে ঘটল এই নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ড—সব প্রশ্ন নিয়ে তিনি দাঁড়িয়ে ছিলেন মর্গের দরজার সামনে। এমন মুহূর্তে কোনো বাবার মানসিক অবস্থা ভাষায় বর্ণনা করা কঠিন।

অর্থনৈতিক বিরোধে ছেলেকে হত্যা দাবি পুলিশের

এই হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার রাতে আরএমপি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি বলা হয়, এই হত্যাকাণ্ডে আটক গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি উপজেলার লিমন মিয়া (৩৫)-এর সাথে বিচারকের স্ত্রীর পূর্ব পরিচয় ছিল। এর সূত্র ধরে বিভিন্ন সময় লিমন আর্থিক সহায়তা নিতেন। একপর্যায়ে টাকা দেওয়া বন্ধ করলে বিভিন্নভাবে ব্ল্যাক মেইল করা শুরু করেন। এ ঘটনায় সর্বশেষ বৃহস্পতিবার বেলা আড়াইটার দিকে লিমন ভাড়া বাসায় জজের স্ত্রীর ছোট ভাই পরিচয় দিয়ে বাসায় ঢুকে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে চাকু বের করলে স্ত্রী প্রাণভয়ে দৌড়ে রুমের ভেতর ঢুকে ভেতর থেকে দরজা আটকে দেযন। ঘাতক লিমন দরজায় লাথি দিয়ে ভেঙে ভেতরে ঢুকলে জজের ছেলে তাওসিফ তার মাকে রক্ষা করার জন্য ঘরে ঢোকে। একপর্যায়ে ঘাতক জজের স্ত্রী এবং ছেলেকে ছুরিকাঘাত করে। ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে ঘাতকও আহত হয়। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিক্যালে নিলে ডাক্তার তাওসিফকে মৃত ঘোষণা করেন।

আরএমপি কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, বিচারকের স্ত্রীর সঙ্গে হামলাকারীর অর্থনৈতিক বিরোধের জেরেই এ ঘটনা ঘটেছে। 

থানায় মামলা

বিচারকের ফ্ল্যাটে ঢুকে তার ছেলেকে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। গ্রেপ্তার হওয়া লিমন মিয়াকে একমাত্র আসামি করে শুক্রবার নগরীর রাজপাড়া থানায় মামলাটি করেন নিহত ছাত্রের বাবা ও রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আবদুর রহমান। শুক্রবার বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মহানগর পুলিশের মুখপাত্র গাজীউর রহমান।

এদিকে, নিহত তাওসিফের মরদেহ গ্রামের বাড়ি জামালপুরের সরিষাবাড়ি উপজেলার চকপাড়া গ্রামে নেওয়া হয়৷ শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রামেক হাসপাতাল থেকে মরদেহ নিয়ে রওনা হন স্বজনরা।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!