ভারতের পেট্রাপোল বন্দর হয়ে ৪৩ দিনে এসেছে ১৩ হাজার ৫২৮ মেট্রিক টন চাল। ২১ আগস্ট থেকে ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত ৮৮ দিনের মধ্যে ৪৩ কার্যদিবসে প্রায় ১৪৫টি চালানের বিপরীতে ৩৯৫টি ট্রাকে করে ১৩ হাজার ৫২৮ মেট্রিক টন মোটা চাল বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করে। চলতি বছরের ২১ আগস্ট ৯টি ট্রাকে ৩১৫ মেট্রিক টন চাল আমদানির মধ্য দিয়ে শুরু হয় এ পথে আমদানি।
দেশে চালের অস্থিতিশীল বাজার নিয়ন্ত্রণে আনতে বাংলাদেশ সরকার দেশের সব বন্দর দিয়ে চাল আমদানির অনুমতি দেয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২১ আগস্ট বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে চাল আমদানি শুরু হয়। অর্থাৎ আগস্ট মাসে ১২৬০ মেট্রিক টন, সেপ্টেম্বর মাসে ৫ হাজার ৪৩৫ মেট্রিক টন, অক্টোবর মাসে ৫ হাজার ১৮৮ মেট্রিক টন এবং নভেম্বরে ১ হাজার ৬৪৫ মেট্রিক টন চাল ভারত থেকে আমদানি হয়েছে।
আমদানি করা চাল ছাড়করণের জন্য বেনাপোল কাস্টমস হাউজে চার থেকে পাঁচটি সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট কাজ করছে। বন্দরের ৩১ নম্বর শেডে আমদানি করা চালের খালাসপ্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে থাকে।
সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের প্রতিনিধি জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘চাল আমদানির শুরু থেকে আমরা কাস্টমস হাউজে চাল ছাড়করণের জন্য কাজ করছি। চার মাস পর গত ২১ আগস্ট থেকে পুনরায় ভারত থেকে বেনাপোল বন্দর দিয়ে চাল আমদানি শুরু হয়। যে পরিমাণ চাল আমদানি হয়েছে তার অধিকাংশই ভূঁইয়া এন্টারপ্রাইজের মাধ্যমে আমরা ছাড় করছি।’
বেনাপোলে বন্দর ইমপোর্ট-এক্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান বলেন, গত ২১ আগস্ট থেকে বেনাপোল বন্দর দিয়ে চাল আমদানি শুরু হয়েছে। কিছুদিন পর পর এ সমস্ত চালের চালান বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করে। প্রতিদিন চালের চালান আসে না। গত আগস্ট মাসে চাল আমদানি শুরুর দিকে আমদানির পরিমাণ বেশি থাকলেও বর্তমানে কমে গেছে। তবে দেশের বিভিন্ন বন্দর দিয়ে চাল আমদানি হওয়ায় চালের বাজার কিছুটা স্থিতিশীল। আমদানি অব্যাহত থাকলে চালের দামে তেমন একটা প্রভাব পড়বে না।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের কাস্টমস বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল লতিফ বলেন, ‘চলতি বছরের ১৫ এপ্রিল সর্বশেষ চাল আমদানি হয়েছিল। খাদ্য মন্ত্রণালয় চাল আমদানির জন্য বরাদ্দপত্র ইস্যু করে এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের জন্য চিঠি পাঠায়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের ভিত্তিতে আমদানিকারকদের ‘ইমপোর্ট-পারমিট’ বা আমদানি অনুমতিপত্র জারি করে। মন্ত্রণালয়ের অনুমতি পাওয়ার পর অনেক প্রতিষ্ঠান এলসি খুলে গত ২১ আগস্ট থেকে আবার চাল আমদানি শুরু করে। অর্থ্যাৎ ২১ আগস্ট থেকে ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত ৮৮ দিনের মধ্যে ৪৩ কার্যদিবসে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ১৩ হাজার ৫২৮ মেট্রিক টন চাল আমদানি হয়েছে। বর্তমানে চাল আমদানি কমে গেলে ও তেমন সমস্যা হবে না। ইতোমধ্যে কৃষকরা আমন ধান কাটতে শুরু করেছে। এ ধান বাজারে আসলে চালের দাম কমে আসবে এবং দেশে চালের ঘাটতি পূরণ হবে।
বেনাপোল উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের উপসহকারী কর্মকর্তা শ্যামল কুমার নাথ জানান, ৩ মাসে ভারত থেকে ১৪৫টি চালানে ৩৯৫টি ট্রাকে করে ১৩ হাজার ৫২৮ মেট্রিক টন চাল বেনাপোল বন্দরে আমদানি হয়েছে। আমদানি করা চাল পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দ্রুত খালাসের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।



