ঢাকা শনিবার, ১২ জুলাই, ২০২৫

ভালো নেই আগৈলঝাড়ার ঐতিহ্যবাহী ছাতার কারিগররা

আহাদ তালুকদার, আগৈলঝাড়া
প্রকাশিত: অক্টোবর ২৮, ২০২৪, ১১:২৯ পিএম
ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

ঋতু বৈচিত্র ও ষড়ঋতুর দেশ আমাদের এই বাংলাদেশ। এই ছয়টি ঋতুর প্রত্যেকটি ঋতুর আছে একেকটি আলাদা রূপ। আষাঢ় শ্রাবণ এ দুমাস বর্ষাকাল। প্রকৃতিতে এখন বর্ষা মৌসুম। আর বর্ষাকাল হওয়ায় প্রায় প্রতিদিনই নামছে থেমে থেমে বৃষ্টি। সেই সঙ্গে থাকছে রোদ ও। তবে এই রোদ-বৃষ্টির অন্যতম অনুষঙ্গ হলো ছাতা। যাদের ছাতা নষ্ট হয়ে গেছে তারা ছুটছেন ছাতার কারিগরের কাছে। যাদের ছাতা নেই তারা নতুন ছাতা কিনছেন। ফলে এ ঋতুতে দেখা গিয়েছে বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার ঐতিহ্যবাহী চেংগুটিয়া গ্রামে  ছাতা তৈরি-মেরামত কারিগর জলিল মুন্সি। 

এরইমধ্যে ছাতার বাজার সরগরম হয়ে উঠেছে। ঘরে সংরক্ষণ করে রাখা পুরাতন ছাতা ব্যবহারযোগ্য করে তোলার জন্য যেন প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। সেই সঙ্গে দোকানগুলোতেও ছাতা বিক্রি বেড়েছে। ফলে সকাল থেকে বিকেল অবধি কারিগর জলিল মুন্সি করছেন ছাতা মেরামতের কাজ।

সরেজমিনে দেখা গেছে, চেংগুটিয়া বাজারে রাস্তার পাশে বসে ছাতা মেরামতের কাজ করছেন। এছাড়াও তিনি গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ঘুরে ঘুরে ছাতা মেরামত করছেন। 

জলিল মুন্সি নিম্ন আয়ের মানুষ হওয়ায় এ কাজ করে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করেন। এছাড়াও গৌরনদী আগৈলঝাড়ায় গ্রাম অঞ্চল থেকে শুরু করে পাড়া মহল্লায় বিক্রি হচ্ছে দেশি-বিদেশি ছাতা। শিশুদের জন্য আছে বাহারি নকশার ছাতাও। সেই সঙ্গে কারিগররা ছাতা মেরামতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। 

ছাতা কারিগর মো. জলিল মুন্সি জানান, ৩০ বছর ধরে তিনি বাজারে ছাতা মেরামত ও তালা চাবি ঠিক করার কাজ করছেন। দৈনিক এ কাজ করে ৪শ থেকে ৫শ টাকা আয় করা যায়। 

তিনি বলেন, এখন বর্ষা মৌসুম থাকায় ছাতা মেরামত করার কাজের চাপ অনেকটা বৃদ্ধি পেয়েছে। ওইসব কাজ করেই চলছে তার সংসার। 

এছাড়াও উপজেলার দেখা গিয়েছে কারিগর আবুল মান্নান জানান আসলে সব সময় খুব একটা কাজ থাকে না। ছাতা মেরামতের পাশাপাশি তালা চাবি ও লাইট মেরামতের কাজ করছেন। বর্ষা মৌসুম আসায় ফলে  বৃষ্টিপাত হওয়ায় কাজের চাপ বেড়ে যায়। তিটি জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। ফলে ছাতার কাপড়, হাতল, স্প্রিং, কামান প্রভৃতি জিনিসপত্র কিনতে হচ্ছে চড়া দামে। কিন্তু সেই অনুযায়ী তাদের মজুরি তেমন বাড়েনি। 

উপজেলার মো. সৈয়দ তালুকদার বলেন, গত কিছু দিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছে। তাছাড়া রোদ ও থাকছে ভালো। এই রোদে হাটা চলা করা খুবই কষ্টকর হয়ে উঠছে। ঘরে ২ ছাতা বেশ কিছুদিন ধরে নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। রোদ ও বৃষ্টির সময় ছাতার দরকার হয়ে পড়ায় মেরামত করতে আনা হয়েছে। এই দুইটি ছাতা সারাতে কারিগরকে ৮০ টাকা দিতে হয়েছে । নতুন একটি ছাতা কিনতে গেলে কম করে হলেও ৫০০-৬০০ টাকা  লেগে যেতো। 

ছাতা কিনতে আসা মো. আরমান হোসেন বলেন, আমি চাকরি করি। ১ মেয়ে কলেজ ও ছেলে স্কুলে পড়ছেন। এখন বৃষ্টির সময়, তাছাড়া প্রচণ্ড রোদও আছে। তাই ছাতা কিনতে আসা হয়েছে। দুটি ছাতা ১১শ টাকায় কেনা হয়। 

চেংগুটিয়া বাজার এলাকার ব্যবসায়ী মো. মাছুম মিয়া বলেন, তার দোকানে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ছাতা বিক্রি করা হচ্ছে। তবে ভাঁজহীন দেশি ছাতা ৫০০-৬০০ টাকা, দেশি-বিদেশি দুই ভাঁজের ছাতা আড়াইশ সাড়ে ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।