ঢাকা সোমবার, ০৭ জুলাই, ২০২৫

বীজ আলুর পরিবর্তে নিম্মমাণের খাবার আলু বিতরণ

আগৈলঝাড়া (বরিশাল) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২, ২০২৪, ০৩:৩৯ পিএম
ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

বরিশালে আগৈলঝাড়া উপজেলার চলতি বছর আলুচাষের জন্য কৃষি অধিদপ্ত পাঁচটি প্রর্দশনী দিয়েছে। আলু প্রর্দশনীর সরকারের দেওয়া আলুর বীজ কৃষকদের গলার কাঁটা হয়ে দাড়িয়েছে। উপজেলায় ওই প্রর্দশনীর জন্য একহাজার কেজি বীজ আলু পাঁচজন কৃষকের মধ্যে বিতরণ করার হয়।

কৃষকদের অভিযোগ প্রর্দশনী জন্য যে আলু দেয়া হয়েছে ওই আলু বীজ আলু নয়। আগৈলঝাড়া কৃষি অফিসার পিযূষ রায় বীজ আলুর পরিবর্তে বাজার থেকে খাবারে আলু ক্রয় করে চাষিদের দিয়েছ। বাজারে আলু চাষ করলে কৃষকেরা ক্ষতিগ্রস্থ হবে বলে তাদের ধারনা। কৃষকেরা লোন করে জমি প্রস্তুত করলে এখন আলু চাষ করতে না পারলে তাদের লোনের টাকা পরিশোধ নিয়ে হিমশিদ খাচ্ছে।

কৃষক ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার কৃষকদের মাঝে আলু প্রর্দশনী জন্য রত্নপুর ইউনিয়নের মোল্লাপাড়া গ্রামের চাষি আমল হালদার, পশ্চিম মোল্লাপাড়া গ্রামের চাষি দশরৎ হালদার, মোল্লাপাড়া গ্রামের মকবুল হোসেন জমাদ্দার, বাকাল ইউনিয়নের বড়মগরা গ্রামের চাষী তরনী শিকারী ও বাকাল গ্রামের যতীন্দ্রনাথ মিস্ত্রীসহ ৫ জন আলু চাষিকে নির্ধারন করেছেন উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর। আলু চাষের জন্য প্রত্যেক চাষীকে ইউরিয়া ২৫ কেজি, পটাশ ৩০ কেজি, জীবসার ১৪ কেজি, ডিএফপি ২০ কেজি, দস্তা ১ কেজি, জিং ১ কেজি ও আলুর বীজ ২শত কেজি দেওয়া হয়।

চলতি মৌসুমে চাষিরা আলু রোপনের জন্য জমি চাষ ও সার দিয়ে প্রস্তুত করেন। চাষিরা আলুর বীজের বস্তা খুলে কাটা, পচা ও নিম্মমানের খাবার আলু দেখতে পায়। বীজ আলুর পবিবর্তে নিম্মমানের খাবার আলু বিতরণ করায় চাষিরা আলু প্রর্দশনীর জমিতে আলু রোপন করতে পারছে না। চাষিরা টাকা খরচ করে জমি প্রস্তুত করলেও কৃষি অফিসের দেওয়া নিম্মমাণের আলুর বীজ রোপন করতে না পেরে আলু চাষ এখন তাদের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এ ঘটনায় আলু প্রর্দশনীর চাষি তরনী শিকারী বলেন, আমি প্রায় ২৫ বছর ধরে আলু চাষ করে আসছি। পূর্বে বাজার থেকে ক্রয় করা ও সরকারী ভাবে পাওয়া আলুর বীজের বস্তায় কোম্পানীর নাম, আলুর জাত, মেয়াদ ও বস্তার মুখে মেশিনের সেলাইসহ টোকেন লাগানো থাকতো। এবারের আলুর বস্তায় এসব কিছুই নেই। যে আলু দিয়েছে তার বীজ আলু না। বাজার থেকে খাবার আলু ক্রয় করে ছিয়েছে কৃষি অফিস।

আলু চাষি মকবুল হোসেন জমাদ্দার ও দশরৎ হালদার বলেন, কৃষি অফিস প্রদর্শনীর জন্য দেওয়া আলুতে কোন অংকুর নেই। আমাদের যে আলু দিয়েছে তা বীজ আলু না। বাজার থেকে ক্রয় করে নিম্মমানের খাবার আলু দিয়েছে। এই আলু রোপন করলে আমরা ক্ষতিগ্রস্থ হবো। আমরা লোনকরে আলু চাষের জন্য জমি প্রস্তুত করে ফেলেছি। আরো অনেক টাকা খরচ হবে। আলু না হলে আমাদের লোনের টাকা কি ভাবে পরিশোধ করবো তা বুঝতে পারছিনা।

এদিকে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ পিযুষ রায় সাংবাদিকদের বলেন, বিএডিসির ও অন্যকো কোম্পানির আলুর বীজ না পাওয়ায় জয়পুরহাট জেলা থেকে আলুর ক্রয় করে প্রর্দশনীর চাষীদের মাঝে সরবারহ করা হয়েছে। আমি আলু দেখেছি আলুতে কিছু ময়লা আছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারিহা তানজিন বলেন, ঘটনাটি আমি শুনেছি। কৃষি কর্মকর্তার সাথে কথা বলে ওই আলু বীজ দেখে চাষিদের কোন ক্ষতি না হয় সে জন্য ব্যবস্থা গ্রহন করবো।

বরিশাল জেলা কৃষি অধিদপ্ত উপ পরিচালক মো. মুরাদুল হাসান বলেন, সারাদেশে আলু নিয়ে যে অবস্তা হয়েছে। আমি বিষয়টি জেনেছি। বাজার থেকে আলু ক্রয় করেদিলে কৃষি অফিসার এটা ভালো করে নাই। আমি বিষয়টি তদন্ত করে দেখে যথাযথো ব্যবস্থানেওয়া হবে।