মৃত্যুর তিন বছর পর উচ্চ আদালতের রায়ে দুর্নীতির মামলায় নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছেন বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) সাবেক মেয়র ও বরিশাল জেলা (দক্ষিণ) বিএনপির সাবেক সভাপতি আহসান হাবিব কামাল। এ মামলায় অভিযুক্ত অন্য চারজনকেও বেকসুর খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বুধবার (২৩ জুলাই) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. সোহরাওয়ার্দীর একক বেঞ্চ এই আদেশ দেন। এ সময় আদালত জামিনের সময় আদালতে জমা দেওয়া জরিমানার অর্থ পরিবারকে ফেরত দেওয়ারও নির্দেশ দেন।
এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন আহসান হাবিব কামালের পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার এইচ এম সানজিদ সিদ্দিকী।
ব্যারিস্টার সানজিদ সাংবাদিকদের জানান, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় ৫ আসামিকে ৭ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। এ ছাড়া প্রয়াত সাবেক মেয়র আহসান হাবিব কামাল ও একজন ঠিকাদারকে এক কোটি টাকা করে জরিমানা করা হয়।
তিনি আরও জানান, ওই রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিলের শুনানি শেষে পাঁচজনকেই খালাস দেওয়া হয় এবং জরিমানাও বাতিল করা হয়। একইসঙ্গে আহসান হাবিব কামাল জামিনে মুক্তি পাওয়ার জন্য আদালতে জমা দেওয়া ৫০ লাখ টাকা তার পরিবারকে ফেরত দেওয়ার আদেশ দেন উচ্চ আদালত।
আহসান হাবিব কামাল ২০২২ সালের ৩১ জুলাই ঢাকার বনানীর বাসায় মারা যান। তার ছেলে কামরুল আহসান রূপন রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ‘রাজনৈতিক কারণে মামলাটি করা হয়েছিল। ওই মামলায় সাজা হওয়ায় বাবা আট মাস কারাগারে ছিলেন। এ নিয়ে উচ্চ আদালত দুঃখ প্রকাশ করেছেন।’
মামলার বিবরণে আইনজীবীরা জানান, বরিশাল পৌরসভার চেয়ারম্যান থাকাকালে ১৯৯৫ সালের ২১ ডিসেম্বর থেকে ১৯৯৬ সালের ৩ জুন পর্যন্ত প্রতারণার মাধ্যমে আসামিরা ২৭ লাখ ৬০ হাজার ৬৩৯ টাকা আত্মসাৎ করেন—এ অভিযোগে দুদকের ঢাকা কার্যালয়ের উপপরিচালক আব্দুল বাসেদ মামলাটি দায়ের করেন।
ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক মেরামতের কথা বলে টেলিফোন শিল্প সংস্থার জাল প্যাড তৈরি, ভুয়া দরপত্র আহ্বান, ভুয়া ঠিকাদার নিয়োগ এবং প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ২০১১ সালের ১৯ জুলাই আহসান হাবিব কামাল, বিসিসির বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও তৎকালীন সহকারী প্রকৌশলী খান মো. নূরুল ইসলাম, তৎকালীন নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ইসাহাক, উপসহকারী প্রকৌশলী আব্দুস সত্তার এবং ঠিকাদার জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে দুদক।
২০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে গত বছর ২০ নভেম্বর বরিশালের বিভাগীয় বিশেষ জজ মো. মহসিনুল হক পাঁচ আসামিকে সাত বছর করে কারাদণ্ড দেন। একইসঙ্গে মো. আহসান হাবিব কামাল এবং ঠিকাদারকে এক কোটি টাকা করে জরিমানা করা হয়।