ঢাকা শনিবার, ০১ নভেম্বর, ২০২৫

রাতে আসামি ধরতে পুলিশের অভিযান, পরদিন ধানখেতে মিলল মরদেহ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ময়মনসিংহ
প্রকাশিত: অক্টোবর ৩১, ২০২৫, ০৫:৪৮ পিএম
ধানখেত। ছবি- সংগৃহীত

ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে আসামি ধরতে রাতে অভিযান চালিয়ে ফিরে আসে পুলিশ। কিন্তু পরদিন সকালে ওই আসামির মরদেহ ধানখেতে পড়ে থাকতে দেখা যায়। পরে পরিবারের লোকজন উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) গভীর রাতে দক্ষিণ মাইজপাড়া গ্রামে আসামি আবু সাদাদ সায়েমকে (৫০) ধরতে এসআই মানিক মিয়ার নেতৃত্বে অভিযান চালায় হালুয়াঘাট থানা পুলিশ। কিন্তু সায়েম ঘর থেকে বের না হলে পুলিশ গ্রিলের তালা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে। এ সময় সায়েম পেছনের দরজা দিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যান।

পরে তার পিতা মোসলেম উদ্দিন বিল্লাল দীর্ঘ সময় খোঁজাখুঁজির পর শুক্রবার ভোরে বাড়ির পেছনে ধানখেতে ছেলের ক্ষতবিক্ষত দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। তিনি জানান, ছেলেকে বাড়িতে এনে হাতে-পায়ে তেল মালিশ করি, কিন্তু কোনো সাড়া শব্দ পাইনি। পরে হালুয়াঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহতের পিতা আরও জানান, ‘দীর্ঘদিন ধরে ছোট ভাই মোজাম্মেল হোসেনের সঙ্গে জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে। পরে তারা থানায় মামলা করে। আমার বড় ছেলে ও ছোট ছেলের জামিন আগামী রবিবার হওয়ার কথা ছিল।’

নিহতের ভাই জসিম উদ্দিন বলেন, ‘এসআই মানিকের সহযোগিতায় বাদীপক্ষের লোকজন পরিকল্পিতভাবে আমার ভাইকে হত্যা করে ধানখেতে ফেলে রেখে গেছে। মামলায় আমাদের গ্রেপ্তার করবেন না বলে এসআই মানিক আমার কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা নিয়েছিলেন। আমার প্রশ্ন, পুলিশ কীভাবে গভীর রাতে গ্রিলের তালা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করতে পারে? আমি আমার ভাই হত্যার বিচার চাই।’

এ বিষয়ে এসআই মানিক মিয়া আসামি ধরতে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করলেও অর্থ লেনদেনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি আরও জানান, ‘অভিযানে আমি কোনো বাদীপক্ষকে নিয়ে যাইনি।’

হালুয়াঘাট থানার ওসি হাফিজুল ইসলাম হারুন বলেন, ‘ঘটনার প্রাথমিক তদন্ত চলছে। আমরা খতিয়ে দেখছি, ব্যক্তি কোথায় মারা গেছেন—মৃত্যুর পর তাকে সেখানে ফেলে রাখা হয়েছে কি না, নাকি ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়েছে। এসব বিষয় যাচাই করতে কিছুটা সময় লাগবে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’