শনিবার, ০৪ অক্টোবর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


আহাদ তালুকদার, আগৈলঝাড়া

প্রকাশিত: অক্টোবর ৪, ২০২৫, ০৫:১৭ পিএম

অযত্নে ক্রমশই ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে আগৈলঝাড়ার প্রাচীন স্থাপত্য

আহাদ তালুকদার, আগৈলঝাড়া

প্রকাশিত: অক্টোবর ৪, ২০২৫, ০৫:১৭ পিএম

পলাশীর যুদ্ধের কামানের মঠ।       ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

পলাশীর যুদ্ধের কামানের মঠ। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে প্রাচীন স্থাপত্যের নিদর্শন হিসেবে বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার গৈলা ইউনিয়নের রাহুৎপাড়া গ্রামে এখনো দাঁড়িয়ে রয়েছে ইংরেজ বিরোধী পলাশীর যুদ্ধের কামানের মঠ।

যুগ যুগ পেরিয়ে গেলেও এসব ঐতিহাসিক নির্দশন রক্ষণাবেক্ষণ জন্য এখনো নেয়া হয়নি কোন উদ্যোগ। আর রক্ষণাবেক্ষণ অভাবেই ক্রমশই ধ্বংশ হয়ে যাচ্ছে কালের স্বাক্ষী এসব নির্দশনগুলো। রক্ষণাবেক্ষণ মাধ্যমে এসব ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলো হতে পারে একটি পর্যটন কেন্দ্র।

বিভিন্ন ইতিহাসবীদের লেখা বই ও বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ১৬’শ খ্রীষ্টাব্দে সম্রাট আকবরের শাসন আমল থেকে পরবর্তী প্রায় ৬৬ বছর তৎকালীন বাকলার (বর্তমান বরিশাল)’এ মগ সম্প্রদায় যুদ্ধ করেই স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে। কথিত মতে তৎকালীন সময়ে মগের জুলুম, অত্যাচার, নির্যাতনসহ ত্রাসের রাজত্বে বাকলার আকাশে কোন পাখি পর্যন্ত উড়েনি। মোঘল সেনারাও অসংখ্যবার মগের সাথে যুদ্ধ করে পরাজিত হয়। সম্রাট আকবরের পরবর্তী সময় সম্রাট জাহাঙ্গীরের শাসনামলে কিংকর ভূঁইয়ার পুত্র মদন মোহন ও ছবি খাঁকে বাকলার ফৌজদার হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। ছবি খাঁ বাকলার ফৌজদার হিসেবে নিযুক্ত হবার পর নিজের নেতৃত্বে নিজেই গড়ে তোলেন বিশাল সেনা সৈন্যের দল। এক পর্যায়ে তিনি (ছবি খাঁ) মগের বিরুদ্ধে শেষ বারের মতো যুদ্ধ ঘোষণা করেন। ছবি খাঁর সেই যুদ্ধে বাকলার থেকে মগদের বিতারিত হতে হয়।

যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে কীর্তিমান পুরুষ বাকলায় ব্যাপক উন্নয়নমূলক কাজ করেন। যার প্রেক্ষিতে ছবি খাঁর নামানুসারে অসংখ্য রাস্তা, জাঙ্গাল, পুল, দিঘীসহ ঐতিহাসিক নিদর্শন আজও রয়েছে বিদ্যমান।

সূত্রমতে, কীর্তিমান পুরুষ ছবি খাঁ শেষ বয়সে আধ্যাত্মিক সাধনা করার জন্য তৎকালীন জনমানব শূণ্য নিরবিছিন্ন এলাকায় মঠটি নির্মান করে সৃষ্টিকর্তার ধ্যানে মগ্ন ছিলেন।

সতীদাহ মঠ

হিন্দু ধর্মের বেদ অনুসারে হাজার-হাজার বছর ধরে সতীদাহ প্রথা (স্বামী মারা গেলে তার সাথে জিবীত স্ত্রীকে শ্মশানে পুরিয়ে দেয়া) বিধান প্রচলিত ছিল। এ প্রথার অবসান ঘটে ১৯৪৭ সালে বৃটিশ শাসনামলে রাজা রাম মোহন রায় ও ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যা সাগরের বিধান বলে। সতীদাহ ঘটনার ঐতিহাসিক নিদর্শন আজও কালের স্বাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে বর্তমান আগৈলঝাড়া উপজেলার গৈলা ইউনিয়নের উত্তর শিহিপাশা গ্রামে।

কবে কখন কোন সতী স্ত্রীকে স্বামীর সাথে ওই শ্মশানে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে, তার কোন সঠিক তথ্য পাওয়া না গেলেও স্থানীয়রা জানান, ওই সম্পত্তির পূর্ব দলিল ও কাগজপত্র পর্যালোচনা করে এই বাড়িতে রুহিনী ঠাকুর নামের একজন বসবাস করতেন বলে পাওয়া যায়।

তিনি আরও জানান, রুহিনী ঠাকুর অথবা তার পূর্বপুরুষের কেউবা হয়তো সতীদাহ শ্মশানে কারুকার্য খচিত মঠটি নির্মান করেছেন। কারুকার্য খচিত মঠটি অযত্ন অবহেলায় আজ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।

প্রায়ই দেশের দূর-দুরান্তসহ সূদুর ভারত থেকেও সতীদাহ মঠটি দেখার জন্য লোকজন যাওয়া আসা করছেন।

স্থানীয়রা আরও জানান, অতি সম্প্রতি দখলদার সতীদাহ মঠের আংশিক অংশ ভেঙ্গে ফেলেছেন। ইতিহাস ঐতিহ্য সমৃদ্ধ আগৈলঝাড়ার এসব ঐতিহাসিক নির্দশনগুলো রক্ষণাবেক্ষনের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!