ভোলার চরফ্যাশন উপজেলায় এক প্রতিবন্ধী গৃহবধূকে ধর্ষণের পর গ্রামবাসীর হাতে আটক হওয়া অভিযুক্ত ধর্ষককে ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় কৃষকদল ও ছাত্রদলের দুই নেতার বিরুদ্ধে। এলাকাজুড়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হওয়া এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবার এখন চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার রাতে চরফ্যাশন উপজেলার কেরামতগঞ্জ বাজার এলাকার দুধ ব্যবসায়ী দুলাল মোল্লা প্রতিবেশী এক জেলে পরিবারের প্রতিবন্ধী গৃহবধূর ঘরে ঢুকে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন। গৃহবধূর চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে এসে দুলাল মোল্লাকে আপত্তিকর অবস্থায় ঘর থেকে আটক করে ফেলেন।
খবর ছড়িয়ে পড়লে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন চরমাদ্রাজ ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড কৃষকদলের সাধারণ সম্পাদক জসিম ঢালী এবং ইউনিয়ন ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জে.বি আব্বাস।
প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ, তারা জনতার কাছ থেকে দুলাল মোল্লাকে ছিনিয়ে নিয়ে যান এবং ভুক্তভোগী পরিবারকে মামলা না করার জন্য হুমকি দিতে থাকেন।
ভুক্তভোগী নারী জানান, তার স্বামী একজন জেলে এবং ঘটনার সময় বাড়িতে ছিলেন না। এ সুযোগে প্রতিবেশী দুলাল মোল্লা ঘরে ঢুকে তাকে ধর্ষণ করেন।
ওই নারী আরও জানান, তিনি প্রায়ই আমাকে কু-প্রস্তাব দিতেন। সেদিন ঘুম থেকে ডেকে তুলে জোর করে ধর্ষণ করেন।
তার স্বামী বলেন, আমি নদী থেকে ফিরে বাজারে গিয়েছিলাম। ফিরে এসে ঘরের ভেতর পুরুষের কণ্ঠ শুনে দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করে প্রতিবেশীদের খবর দিই। তারা এসে দুলালকে আটক করে। পরে জসিম ঢালী ও আব্বাস এসে জোর করে তাকে নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে দুলাল মোল্লার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় শুনে ফোন কেটে দেন। অভিযুক্ত জসিম ঢালীরও কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
তবে ছাত্রদল নেতা জে.বি আব্বাস দাবি করেন, দুলালকে স্থানীয়রা মারছিল, তাই আমি তাকে উদ্ধার করি। ধর্ষণের ঘটনায় আমি জড়িত না।
চরফ্যাশন থানার ওসি মিজানুর রহমান হাওলাদার বলেন, এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে, ভুক্তভোগী পরিবার বলছে, তারা মামলা করতে চাইলেও প্রভাবশালীদের চাপ ও হুমকির মুখে সাহস পাচ্ছে না।
স্থানীয়দের দাবি, ঘটনার দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।