চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার সুবিদপুর পূর্ব ইউনিয়নের মুন্সিরহাট থেকে উভারামপুর পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার সড়ক দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে সংস্কারবিহীন অবস্থায় পড়ে আছে। সড়কটির বেহাল দশায় পাঁচ গ্রামের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ প্রতিদিন সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
সড়কটিতে প্রতিনিয়ত বড় বড় গর্ত তৈরি হওয়ায় যানবাহন চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ট্রাকের চাপে সড়কের কার্পেটিং উঠে গিয়ে এখন কাদা-পানির গর্তে পরিণত হয়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই পানি জমে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে।
সরেজমিনে মুন্সিরহাট বেইলি ব্রিজ থেকে উভারামপুরের পাটওয়ারী বাড়ি মাঝার পর্যন্ত ঘুরে দেখা গেছে, সড়কের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত রয়েছে দুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি উচ্চ বিদ্যালয়, একাধিক কওমি ও হাফেজিয়া মাদ্রাসা এবং একটি মাঝার শরিফ। এ ছাড়া এ সড়কই মুন্সিরহাট বাজার, ফরিদগঞ্জ উপজেলা সদর এবং জেলা সদরের সঙ্গে পাঁচটি গ্রামের প্রধান যোগাযোগ পথ।
সিএনজিচালক জাহাঙ্গীর বলেন, ‘এই সড়কে যাত্রী নিয়ে চলা মানে মৃত্যুর ঝুঁকি নেওয়া। প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে, বিশেষ করে রোগী পরিবহনে চরম দুর্ভোগ হয়।’
কাইতাড়া গ্রামের বাসিন্দা মামুন হায়দার বলেন, ‘গত ৮-১০ বছরে এলাকার কিছু বালু ব্যবসায়ীর ট্রাক চলাচলের কারণে সড়কে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। সামান্য বৃষ্টিতেই তা পানিতে ডুবে যায়।’
উভারামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী জানান, ‘প্রথমে বালুর ট্রাক চলাচল বন্ধ করতে হবে। নতুন করে রাস্তা বানানো হলেও যদি ট্রাক চলে, আবার একই অবস্থা হবে।’
উটতলী নূরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘শুকনো মৌসুমে ধুলা ও বর্ষায় কাদার কারণে শিশুদের চোখে-মুখে ময়লা ঢুকে অসুস্থ হয়ে পড়ে। শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক চলাফেরা ও উপস্থিতি বাধাগ্রস্ত হয়।’
মুন্সিরহাট বাজারের ব্যবসায়ী কাইয়ুম বলেন, ‘দেড় দশক ধরে সড়কের কোনো সংস্কার হয়নি। অ্যাম্বুলেন্স চলতে পারে না, এমনকি একজন রোগী নিয়েও যাওয়া কষ্টকর। দ্রুত সড়কটি পাকাকরণ দরকার।’
স্থানীয় বাসিন্দা ইসমাইল তালুকদার খোকন বলেন, ‘২০০৯ সালে সড়ক নির্মাণ হয়। এরপর থেকে আমরা বারবার দাবি জানালেও সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।’
মফিজুল ইসলাম বলেন, ‘সড়ক সংস্কারের টেন্ডার হলেও ঠিকাদার এসে দেখে পাকা রাস্তার চিহ্ন নেই, তাই কাজ আর হয় না।’
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের চাঁদপুর জেলা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আহসান কবির বলেন, ‘অর্থ সংকটের কারণে অনেক সড়কের সংস্কার বিলম্ব হচ্ছে। তবে এই সড়কটি গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় প্রাক্কলন প্রস্তুত করে শিগগিরই অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে। অনুমোদন এলে টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কাজ শুরু করা হবে।’
আপনার মতামত লিখুন :