নার্স রোগী দেখছেন, প্রেসক্রিপশন দিচ্ছেন এবং ফি বাবদ মোটা অঙ্কের অর্থও আদায় করছেন, এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। অভিযুক্ত নার্সের নাম নুরতাজ বেগম। তিনি গাইনী বিভাগে দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসকের অনুপস্থিতির সুযোগে এমন কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়েছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে তিনি এভাবে রোগীদের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছেন।
ঘটনার শিকার এক রোগী শিরিন আক্তার অভিযোগ করে বলেন, ‘কয়েকদিন আগে গাইনী চিকিৎসার জন্য মেডিকেলে যাই। সেখানে এক নারী আমার সমস্যার কথা শুনে আমাকে ১১১ নম্বর কক্ষে নিয়ে যান।
পরে নিজেই প্রেসক্রিপশন লিখে দেন এবং সেখানেই প্রস্রাবের টেস্ট করান। আমি জিজ্ঞেস করলে তিনি নিজেকে গাইনী ডাক্তার বলে পরিচয় দেন। এখন পর্যন্ত আমার কাছ থেকে ৩৪০০ টাকা নিয়েছেন। সর্বশেষ মঙ্গলবার ফের গেলে আরও টাকা চান।’
শুধু শিরিন আক্তার নন, আরও অনেক রোগী একই ধরনের অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছেন বলে জানা গেছে।
হাসপাতালের একাধিক নার্স নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, নুরতাজ বেগম দীর্ঘদিন ধরে এই ধরনের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। কেউ কিছু বলতে গেলে তিনি তেড়ে আসেন বা হুমকি দেন। বিষয়টি আমরা সবাই জানি, কিন্তু ভয়ে কেউ মুখ খুলে না।
স্বাস্থ্য বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘কোনো ব্যক্তি যদি এমবিবিএস ডিগ্রিধারী না হন এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে (যেমন গাইনী) অনুমোদিত না থাকেন, তাহলে তার দ্বারা চিকিৎসা প্রদান করা সম্পূর্ণ অবৈধ এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু তৈয়ব বলেন, ‘আমাদের হাসপাতালে সপ্তাহে ছয় দিন গাইনী চিকিৎসক উপস্থিত থাকেন। তারপরও কেউ যদি অনৈতিকভাবে রোগী দেখে থাকে, তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এই বিষয়ে জানতে নুরতাজ বেগমের ফোনে কল করা হয়। তিনি জানান, ডাক্তারের অনুপস্থিতিতেই এই চিকিৎসা দেন তিনি।
এদিকে স্থানীয় সচেতন মহল বিষয়টি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তাদের দাবি, সরকারি হাসপাতালে গাইনী চিকিৎসার নামে প্রতারণা বরদাশত করা যায় না। দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে কেউ আর এমন সাহস না পায়।