টানা বর্ষণে ভয়াবহ জলাবদ্ধতার কবলে পড়েছে চট্টগ্রাম নগরী। গতকাল ৮ জুলাই রাত থেকে শুরু হওয়া ভারী বৃষ্টিপাত আজ (বুধবার) দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৫৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে চট্টগ্রাম আবহাওয়া অধিদপ্তর।
এর ফলে নগরের নিচু এলাকা, প্রধান সড়ক, অলিগলি—সবখানেই জমেছে হাঁটু সমান পানি। অনেক স্থানে বাড়ি ও দোকানেও পানি ঢুকে পড়েছে। সৃষ্টি হয়েছে চরম জনদুর্ভোগ।
অফিসগামী ও কর্মজীবী মানুষ পড়েছেন বিপাকে। অনেকেই বাড়ি থেকে বের হতে পারেননি। রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে থাকায় যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। ভাড়া বাড়িয়ে দিচ্ছে রিকশাচালকরা, আবার অনেক রাস্তায় যানবাহন চলারই সুযোগ নেই।
চট্টগ্রাম আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আজ সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস আর সর্বনিম্ন ২৪.৫ ডিগ্রি। দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ২৬ কিলোমিটার বেগে বাতাস প্রবাহিত হচ্ছে। বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ সকাল ৯টায় ছিল ৯৭ শতাংশ, যা বিকেলে কমে দাঁড়ায় ৮৪ শতাংশে।
নগরের চকবাজার, ডিসি সড়ক, কে বি আমান আলী সড়ক, বাকলিয়া, দুই নম্বর গেট, মুরাদপুর, বহদ্দারহাট, মেহেদীবাগ, চান্দগাঁও আবাসিক এলাকা, কাপাসগোলা, কাতালগঞ্জ, এম এম আলী সড়ক, হালিশহর ও আগ্রাবাদ এলাকায় ভয়াবহ জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।
মেহেদীবাগ এলাকার বাসিন্দা সাহাবুদ্দীন জানান, আগ্রাবাদে জরুরি কাজে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম, কিন্তু সকালে উঠে দেখি সামনের রাস্তায় হাঁটু-পানি। যেকোনো সময় পানি ঘরে ঢুকে যেতে পারে, তাই বের হওয়া সম্ভব হয়নি।
চকবাজারের আবুল মনসুর লেনের বাসিন্দা আবদুল হামিদ বলেন, ‘সকালে ঘরে পানি ঢুকে গেছে। আবার চাকরির জায়গা ডিসি সড়কেও পানি। জলাবদ্ধতার কারণে অফিসে যাওয়া হয়নি।’
চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার বাসিন্দা ফাতেমা বেগম বলেন, ‘মুরাদপুরে জরুরি কাজে যেতে হয়েছিল। কিন্তু বৃষ্টির কারণে এলাকায় পানি জমে গেছে। রিকশা নেই, আর যারা আছে তারা ভাড়া বেশি নিচ্ছে। বাধ্য হয়ে হাঁটতেই হয়েছে।’
নগরবাসীর অভিযোগ, সিটি করপোরেশনের জলাবদ্ধতা নিরসনে বিভিন্ন প্রকল্প নেওয়া হলেও কার্যকর উদ্যোগের অভাবে দুর্ভোগ দিন দিন বাড়ছে।
আপনার মতামত লিখুন :